ব্যক্তির ভাস্কর্য পৌত্তলিক কালচার, যা তৌহিদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

ডিসেম্বর ০৪ ২০২০, ২১:৩১

আমাদের দেশে আধুনিক শিল্পকলা ব্যাপকভাবে পশ্চিমা ও ভারতীয় শিল্পকলা দ্বারা প্রভাবিত। পশ্চিমা শিল্পকলা পেগানিজম বা গ্রীক-রোমান প্রতিমূর্তি কালচারের উপরে গড়ে উঠেছে। ভারতীয় শিল্পকলাও প্রধানত প্রতিমূর্তিকেন্দ্রিক। এমনকি বাংলার লোকজ শিল্পকলাও যে রূপকল্পের উপরে ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে তা-ও প্রতিমূর্তিকেন্দ্রিক। ফলে আমাদের দেশে আধুনিক শিল্পকলা শিক্ষার যেসব প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে সেগুলি প্রধানত পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যের এই প্রতিমূর্তিকেন্দ্রিক শিল্পচেতনা ও রীতিকেই অনুসরণ করে।

কিন্তু এই অঞ্চলের মানুষ যেহেতু ব্যাপকভাবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে তাই তারা তাদের তৌহিদী চেতনাকে শুধু ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানেই সীমাবদ্ধ রাখে না; ক্রমে ক্রমে জীবনযাত্রা ও শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিতেও প্রতিফলিত দেখতে চায়। ইসলাম এমন একটি সভ্যতা ও সংস্কৃতি যে এর চেতনার আওতায় জীবন ও শিল্পের অনেক অনুষঙ্গই ক্রমান্বয়ে চলে আসে। তৌহিদবাদী ইসলাম এবং পেগান বা পৌত্তলিক কালচারের মধ্যে রয়েছে মৌলিক বিরোধ।

একাত্তরের স্মৃতিরক্ষার উদ্দেশ্যে এদেশে ইতিমধ্যে বেশ কিছু ভাস্কর্য তৈরি করা হয়েছে। এসবে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর তৌহিদী কালচারের কমবেশি ব্যত্যয় ঘটেছে। কিন্তু সেগুলি নিয়ে অনেকের আপত্তি থাকলেও ব্যাপক প্রতিবাদ এপর্যন্ত হয়নি কারণ সেগুলি বিশেষ বিশেষ এলাকায় স্থাপিত হয়েছে। তা এদেশের শিল্প-সংস্কৃতির মূলধারা হয়ে ওঠেনি। কিন্তু এবারে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন হাই প্রোফাইল অবস্থানে তার ভাস্কর্য নির্মাণের যে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে তা বাস্তবায়িত হলে এদেশে পেগান বা পৌত্তলিক কালচার ব্যাপকভাবে চালু হয়ে যাবে।

এটি ইসলামের তৌহিদী কালচারের জন্য একটি বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। এটাকে প্রকারান্তরে শিরকী জাহেলী কালচারের প্রতিষ্ঠা বলেই ধরে নিতে হবে। মুসলিম তৌহিদী সংবেদনায় যা মারাত্মক আঘাত করবে। আর এজন্যই তৌহিদী জনতার তরফ থেকে উলামারা আপত্তি ও প্রতিবাদ করা শুরু করেছেন। তৌহিদী চেতনার ইসলাম এবং মুশরিকী কালচার পারস্পরিক সহাবস্থানের বিষয় নয়। কাজেই একাত্তর ও জাতীয় নেতৃবৃন্দের স্মৃতিরক্ষার উদ্দেশ্যে ইসলামসম্মত বিকল্প উপায় উদ্ভাবন করতে হবে। কোনোভাবেই এদেশের তৌহিদী কালচার বিনষ্ট করবে এমন কোন ভাস্কর্য মুসলিম জনগোষ্ঠীর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।