বৃষ্টির জন্য চাঁদপুরে ইসতিসকার নামাজ

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুন ০৭ ২০২৩, ১৩:১৭

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় টানা কয়েক দিন ধরেই চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। রোদে পুড়ে নষ্ট হচ্ছে ফসলের মাঠ। গতকাল মঙ্গলবার এই এলাকার তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

আজ বুধবার এ তীব্র দাবদাহ থেকে বাঁচতে বৃষ্টির আশায় বিশেষ নামাজ আদায় করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মতলব উত্তরের ইত্তেহাদুল ওলামা গোষ্ঠীর আয়োজনে সকালে ছেংগারচর মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিশেষ এ নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

ধর্মমতে, এ নামাজকে বলা হয় ‘ইসতিসকার নামাজ’। এ নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বৃষ্টি বা পানির জন্য প্রার্থনা করা হয়।

আয়োজকেরা জানান, কালবৈশাখীর মৌসুমেও বৃষ্টির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। উল্টো টানা তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মাঠে রোদে পুড়ে কৃষকের ফসল নষ্ট হচ্ছে। শ্রমজীবী মানুষ রোদে বেশিক্ষণ কাজ করতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা বৃষ্টির জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনার আয়োজন করেছিলেন। নামাজে সবাইকে অংশ নেওয়ার জন্য ফেসবুকে প্রচারণা চালানো হয়েছিল।

সকাল ১০টার দিকে ছেংগারচর মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে দেখা যায়, পাঞ্জাবি-টুপি পরে জায়নামাজ নিয়ে বিভিন্ন বয়সের মানুষ মাঠে হাজির হয়েছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই নামাজ আদায় ও দোয়া পরিচালনার জন্য হাজির হন মুফতি যাইনুল আবেদীন। প্রথমে মুসল্লিদের উদ্দেশে নামাজের নিয়মকানুন বলেন তিনি। এরপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন সবাই। নামাজ শেষে দুই হাত তুলে সবাই বৃষ্টির জন্য মোনাজাত করেন। মোনাজাত পরিচালনা করেন হাফেজ মুহাম্মদ ইব্রাহিম।

বুধবার এ তীব্র দাবদাহ থেকে বাঁচতে বৃষ্টির আশায় বিশেষ নামাজ আদায় করেছেন চাঁদপুর মতলব উত্তরের বাসিন্দারা

বুধবার এ তীব্র দাবদাহ থেকে বাঁচতে বৃষ্টির আশায় বিশেষ নামাজ আদায় করেছেন চাঁদপুর মতলব উত্তরের বাসিন্দারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ছেলেকে নিয়ে নামাজ আদায় করতে এসেছিলেন রিপন মিয়া। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই এ নামাজের বিষয়ে জানতাম। বর্তমান রোদ-গরমে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, এটা এক ধরনের বড় দুর্যোগ। তাই দুর্যোগ থেকে মুক্তি পেতে সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে নামাজ আদায় করতে এসেছি।’

স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাঈল খান টিটু বলেন, ‘গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা ক্রমাগত বাড়ছেই। এ জন্য আমরা মহান আল্লাহর দরবারে প্রশান্তির বৃষ্টি চেয়েছি। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন।’

শাহজালাল মুফতি নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘যে কোনো বিপদ থেকে রক্ষা পেতে আমরা প্রথমেই সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করি। এ নামাজ ও দোয়ার মধ্য দিয়ে সেই কাজ করা হলো। সৃষ্টিকর্তা রহমত বর্ষণ করবেন বলে আশা করছি।’

এ প্রসঙ্গে মাওলানা আতাউল্লাহ মহসিন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এখানে বৃষ্টি নেই। অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ কষ্ট পাচ্ছে, গবাদিপশু কষ্ট পাচ্ছে। খেতখামার ও বাগানে পানির অভাব দেখা দিয়েছে। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতেই ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী, দুই রাকাত নামাজ আদায় করে বৃষ্টি ও পানি প্রার্থনা করা হয়েছে।’

নামাজ শেষে মাওলানা আবদুল বাতেন বলেন, ‘দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় মানুষ পানির জন্য হাহাকার করছে। আল্লাহ সালাতের মাধ্যমে বৃষ্টি বা পানির জন্য দোয়া চাইতে বলেছেন। তাই আমরা সবাই একত্র হয়ে এ নামাজ আদায় করেছি।’