প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্র জমিয়তের আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য র‍্যালী অনুষ্ঠিত 

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জানুয়ারি ২৭ ২০২৩, ২০:১৪

চরিত্রবান জাতি গঠনে ছাত্র জমিয়তকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে: আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক


ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের ৩১ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উৎযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য র‍্যালী অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ১০ টায় পল্টনস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র সহ সভাপতি আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক। বক্তব্য প্রদানকালে তিনি বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলো ভ্রমণ করার পরেও সরকার পরিচ্ছন্ন ও পরিকল্পিত শহর গড়তে ব্যর্থ হয়েছে। এই শহরে চলাচলের জন্য ফুটপাত নেই, গণপরিবহনগুলো রাস্তার মাঝখানে দাড়িয়ে যাত্রী উঠাচ্ছে, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের তারগুলোতে ছেয়ে গেছে পুরো শহর। সর্বশেষ এদেশের মানুষের একটা নির্ভরযোগ্য আস্থার যায়গা ছিলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যেখান থেকে দেশ ও জাতির ভবিষ্যত প্রজন্মের নেতৃত্ব তৈরি হবে এবং তরুণ প্রতিভাবানেরা আগামীর সুন্দর দেশ গঠনের পরিকল্পনা গ্রহণ করবে সেখানেও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় শিক্ষার্থীদের পশু বানানোর পায়তারা চলছে।

তিনি আরো বলেন, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা তাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে স্বীয় ধর্ম ইসলামকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষার্থী মুসলিম হওয়ায় জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামেও ইসলাম শিক্ষা অগ্রাধিকার পাওয়ার দাবী রাখে। অথচ আজ পাঠ্যপুস্তকে এই ইসলাম শিক্ষাকে গুরুত্বহীন করা হয়েছে। অন্যদিকে পাঠ্যপুস্তকে ঈমানবিরোধী গল্প, রচনা ও কবিতা যুক্ত করে মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্মগত ঈমানী চেতনাকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। নতুন শিক্ষানীতির মাধ্যমে মানুষকে বানর বানানোর চেষ্টা চলছে। এজন্য মানবতা ও সভ্যতা টিকিয়ে রাখতে এবং আদর্শবান জাতি গঠনে ছাত্র জমিয়তকে অগ্রণী ভুমিকা পালন করতে হবে। স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সহীহ দীন শিখাতে ছাত্র জমিয়তকে এগিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় নতুন শিক্ষানীতি এদেশের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মেধাকে গ্রাস করে বানরে পরিনত করবে৷

ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি রিদওয়ান মাজহারীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কাউসার আহমদ এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ নূর হোসাইনের যৌথ সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরী, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি মুফতি নাসিরুদ্দিন খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা বশিরুল হাসান খাদিমানী, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি মুফতি শরিফুল ইসলাম কাসেমী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হুযাইফা ইবনে ওমর, সহ সভাপতি মাইনুদ্দীন মানিক।

সভাপতির বক্তব্যে ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি রিদওয়ান মাযহারী বলেন, যেই ছাত্র সমাজের ভূমিকায় অতীতের বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম সফল হয়েছিল এবং বহু স্বৈরাচারীর পতন হয়েছিল, সেই ছাত্র সমাজ আজ বিজাতীয়দের আবিষ্কৃত বিভিন্ন হারাম খেলাধূলার নেশায় মত্ত হয়ে গিয়েছে। ছাত্র সমাজ আজ হিংস্র হায়েনার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। তাই তাদেরকে সকল প্রকার অন্যায় অবিচার এবং বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে হলে গৌরব ও ঐতিহ্যের সংগঠন ছাত্র জমিয়তকেই ভূমিকা পালন করতে হবে।

তিনি বলেন, যেই শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড সেই শিক্ষা ব্যবস্থায় বিবর্তনবাদ ও ইসলাম বিরোধী মতবাদ প্রণয়ন করে আগামী প্রজন্মকে মেরুদণ্ডহীন করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। শিক্ষা সিলেবাসে ভারতীয় মুসলিম শাসকদের চরিত্রহীন অবিহিত করে ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে মুসলমানদের সন্তানদেরকে নাস্তিক মুরতাদ বানানোর চক্রান্ত করা হচ্ছে।

ছাত্র জমিয়ত সভাপতি অনতিবিলম্বে এই অভিশপ্ত শিক্ষানীতি বাতিল করার আহবান জানিয়ে বলেন, এই শিক্ষানীতি নিয়ে বিতর্ক আজ থেকে নয়, কয়েক বছর যাবত তা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। অতীতে সরকার ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিতর্কিত সিলেবাস পরিবর্তনের আশ্বাস দেয়া হলেও আজ পর্যন্ত তার কোন সুষ্ঠু সমাধান পাওয়া যায়নি। ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ অচিরেই তার সুষ্ঠু সমাধানের জন্য সরকার এবং শিক্ষামন্ত্রনালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।

আলোচনা সভা শেষে কার্যালয়ের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য র‍্যালী বের হয়। বিজয়নগর, পল্টন মোড়, বায়তুল মুকাররম সহ গুরত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কার্যালয়ের সামনে এসে সমাপ্তি ঘটে।

আরো বক্তব্যে রাখেন, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সহ সভাপতি সাব্বির আহমদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাআদ বিন জাকির, সহ সাধারণ সম্পাদক নাসিম খান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু সুফিয়ান মানসুর, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মুঈনুল ইসলাম, দফতর সম্পাদক নাহিদ হাসান, বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক জুবায়ের আহমদ, ঢাকা মহানগর পূর্বের সভাপতি মারুফ বিল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ, পশ্চিমের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হাসান, উত্তরের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ আলী, দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম, পূর্বের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহদী হাসান প্রমুখ।