পীরগঞ্জে হিন্দুপল্লিতে হামলার নেতৃত্বে ছিলেন ছাত্রলীগের নেতা সৈকত মণ্ডল

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

অক্টোবর ২৫ ২০২১, ১০:৩৬

রংপুরের পীরগঞ্জের জেলেপল্লিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে হামলার ঘটনা পরিকল্পিত। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে উসকানি ও মসজিদের মাইক ব্যবহার এবং লোক জড়ো করে এই হামলা করা হয়। হামলায় নেতৃত্ব দেন সৈকত মণ্ডল নামের এক কলেজছাত্র। সৈকতসহ দুজনকে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানিয়েছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)।

এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সৈকত পীরগঞ্জ উপজেলার চেরাগপুর গ্রামের রাশেদুল মণ্ডলের ছেলে। তিনি রংপুর কারমাইকেল কলেজের ছাত্র এবং কলেজের দর্শন বিভাগ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন। তবে ১৭ অক্টোবর হামলার পরদিন তাঁকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কারমাইকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুজ্জামান সিজার।

১৭ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্মীয় অবমাননাকর পোস্টকে কেন্দ্র করে পীরগঞ্জের বড় করিমপুর গ্রামের জেলেপল্লিতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। আগুন দেওয়া হয় ২৪টি পরিবারের বসতঘরে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি বাড়িঘর ও দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এ ঘটনায় রংপুরের পীরগঞ্জ থানায় তিনটি মামলা হয়।

গত শনিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার প্রধান কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গত শুক্রবার রাতে টঙ্গী থেকে সৈকত ও রবিউল ইসলাম নামের আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ দুজন পীরগঞ্জে হামলার অন্যতম হোতা।

খন্দকার আল মঈন জানান, সৈকত তাঁর ফেসবুক পেজে বিভিন্ন ছোট-বড় ইস্যুতে উসকানিমূলক পোস্ট দিতেন। মূলত কুমিল্লার ঘটনার পর থেকেই তিনি ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট দিয়ে আসছিলেন।

এরপর রংপুরের পীরগঞ্জে যখন একটি ঘটনা ঘটে, তখন সৈকত একের পর এক উসকানিমূলক পোস্ট দিতে থাকেন। মূলত তাঁর এসব পোস্ট দেখেই পীরগঞ্জে শত শত লোক জড়ো হয়েছিল। আগুন দেওয়ার ঘটনায় ঘটনাস্থলে ছিলেন সৈকত। তিনি সবাইকে উত্তেজিত করেন আগুন দেওয়ার জন্য। তাঁর নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন হামলায় সরাসরি অংশ নিয়ে বাড়িঘর, দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। গ্রেপ্তার রবিউলকে মাইকিং করে লোকজন জড়ো করতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন সৈকত।

সৈকতের রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘তিনি রংপুরের একটি কলেজের শিক্ষার্থী। রংপুরে ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে নিজেকে প্রচার করতেন।’

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার রবিউল প্রথমে পাশের মসজিদ থেকে মাইকিং করা শুরু করেন। এরপর মাইকিংয়ের দায়িত্ব তাঁর এক ভাইয়ের কাছে দেন। মাইকে ধর্মীয় অবমাননার ঘোষণা দিয়ে এর প্রতিবাদে এলাকাবাসী ও তৌহিদি জনতাকে একত্র হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

রবিউল ইসলাম পীরগঞ্জের খেজমতপুর গ্রামের মৌলভি মো. মোসলেম উদ্দিন বাবুর ছেলে।