পাঞ্জাবি-টুপি পরে আসতে নিষেধাজ্ঞা সিলেট ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের ২ শিক্ষককে: প্রতিবাদে ছাত্রদের অবস্থান কর্মসূচী

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

এপ্রিল ০৩ ২০২১, ১৫:২৬

পাঞ্জাবি-টুপি পরার বিধিনিষেধ অমান্য করার অভিযোগে জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের দুই শিক্ষককে প্রতিষ্ঠানে আসতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছেন, প্রতিষ্ঠানের নীতিমালার মধ্য থেকেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের ম্যাগাজিন ‘প্রোজ্জ্বল’-এর ছবি তোলার জন্য শিক্ষকদের পাঞ্জাবি-টুপি পরার পরিবর্তে শার্ট প্যান্ট পরতে আদেশ দেন অধ্যক্ষ লে. কর্ণেল কুদ্দুছুর রহমান পিএসসি। সেই আদেশ মানতে অস্বীকৃতি জানান জেসিপিএসসির কলেজ পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক সিনিয়র প্রভাষক মোহাম্মদ আব্দুল হালিম ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির শিক্ষক প্রভাষক মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম। এ আদেশ অমান্য করায় স্কুলে আসতে বারণ করা হয়েছে। গত ৩১ মার্চ রাতে প্রতিষ্ঠানের উপাধ্যক্ষ মৌখিকভাবে তাদের ক্যাম্পাসে আসতে না করেন এবং সেই সাথে তাদের বেতন ভাতা বন্ধ হয়েছে বলে জানান।

গতবছর আগের অধ্যক্ষ লে. কর্ণেল সোহেল উদ্দিন পাঠান প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুসারে নির্দেশ দেন কলেজে পাঞ্জাবি পরা যাবে না। পরবর্তীতে ১১ নভেম্বর তারিখে অনুষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির মিটিংয়ে বিষয়টি তুলে তা পুরোপুরি বাস্তবায়নে নির্দেশ প্রদান করেন। সবাইকে এই আদেশ মান্য করতে বলা হলে কলেজ শিক্ষক মোহাম্মদ আবদুল হালিম, মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ জাহেদুল ইসলাম এবং কবির হোসাইন প্রতিবাদ করেন। এবং নিজের দৃষ্টিকোন থেকে তারা নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকবেন বলে জানান।

এমতাবস্থায় ম্যাগাজিনের জন্য ছবি তোলার দিন তারা পাঞ্জাবি পাজামা পরে আসায় প্রিন্সিপাল তাদের ছবি উঠতে নিষেধ করেন। প্রিন্সিপাল আদেশ দেন, আদেশ অমান্যকারীরা যাতে স্বেচ্ছায় চাকুরি ছেড়ে দেন নতুবা বরখাস্ত করা হবে।

এ ব্যাপারে শিক্ষক আবদুল হালিম দৈনিক জালালাবাদকে বলেন, চাকুরিতে যোগদানের সময় লিখিতভাবে পাঞ্জাবি পাজামার টুপি পরার অনুমতি নিয়েছি। এবং গত ১২ বছর ধরে এই পোশাক পরেই চাকুরী করে আসছি। গতবছর অধ্যক্ষ (সোহেল উদ্দিন পাঠান) স্যার আমাকে প্রতিষ্ঠানের নীতিমালার কথা বলে শার্ট প্যান্ট পরে আসতে চাপ দিতে থাকেন। আমি আমার অবস্থানে অনড় থাকি। এজন্য আমাকে ৪/৫ বার শোকজও করা হয়েছে। ম্যাগাজিনের ছবি তোলার দিন একই প্রসঙ্গে চাপ প্রয়োগ করলে আমি মানতে অস্বীকৃতি জানাই। শেষমেশ গত ৩১ মার্চ রাতে আমাকে মৌখিকভাবে জানানো হয় প্রতিষ্ঠানে না আসার জন্য। সেই সাথে আমার বেতন ভাতাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যাযনি।

প্রতিষ্ঠানের উপাধ্যক্ষ মো. আরিফ সেলিম রেজা বলেন, প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব নীতিমালা রয়েছে। তারা নীতিমালা ভঙ্গ করেছেন। তাই প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা মধ্য থেকেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এদিকে, এর প্রতিবাদে আজ শনিবার সকাল ১১টা থেকে জেসিপিএসসি ফটকে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচী পালন করছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে ভেতরে গেছেন  শিক্ষার্থীদের ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল।