পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম বিধায়কের সংখ্যা আরও বাড়ল

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

অক্টোবর ০৪ ২০২১, ১৩:৫৬

পশ্চিমবঙ্গের ভবানীপুরের উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৫৮ হাজার ৮৩৫ ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়েছেন। অন্যদিকে শমসেরগঞ্জে তৃণমূল প্রার্থী আমিরুল ইসলাম ২৬ হাজার ৩৮৪ ভোটে এবং জঙ্গিপুর বিধানসভা আসনে একইদলের জাকির হোসেন ৯২ হাজার ৬১৩ ভোটের জয়ী হয়েছেন। এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় মুসলিম বিধায়কের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪।

এর আগে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে এবার ৪২ জন মুসলিম প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস। তন্মধ্যে মধ্যে ৪১ জনই জয়ী হন। আর আইএসএফের প্রার্থী হিসেবে ভাঙ্গর থেকে জয় পান নওশাদ সিদ্দিকী।

ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে মুসলিম ভোট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলিম ভোট আছে রাজ্যে। ২৯৪ আসনের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় প্রায় ১০০টি আসনের ভবিষ্যৎ ঠিক করে মুসলিম ভোট।

২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে জয়ী মুসলিম বিধায়কের সংখ্যা ছিল ৫৯ জন। এরপরের নির্বাচনে ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে শাসক-বিরোধী মিলিয়ে ৫৬ জন মুসলিম প্রার্থী জয়ী হন। তার মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকেটে জয় পান মোট ২৯ জন, কংগ্রেসের ১৮ জন, সিপিআইএমের ৮ জন এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের একজন মুসলিম প্রার্থী।

২০১৬ সালের তৃণমূলের জয়ী বিধায়কদের মধ্যে ৭ জন মন্ত্রীত্ব পান। তারা হলেন- জাভেদ খান, ফিরহাদ হাকিম, আবদুর রাজ্জাক মোল্লা, মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরি, গিয়াসউদ্দিন মোল্লা, গোলাম রব্বানি ও জাকির হোসেন।

এবার মমতার নতুন মন্ত্রিসভায় ৪৩ জন সদস্যের তালিকায় মুসলিম সম্প্রদায় থেকে ৭ জনকে ঠাঁই দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ৪ জন পূর্ণমন্ত্রী, ১ জন স্বাধীন প্রতিমন্ত্রী ও দু’জন প্রতিমন্ত্রী। পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন- কলকাতার বর্তমান মেয়র ফিরহাদ হাকিম, জাভেদ আহমেদ খান, সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী ও গোলাম রব্বানি। স্বাধীন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন আখরুজ্জামান। এছাড়া প্রতিমন্ত্রী পদে শপথ নেন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর ও সাবেক মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন।

পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার ভোটের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোটের ব্যবধানের জয়ও মুসলমান প্রার্থীর। তৃণমূলের হয়ে মালদহ জেলার সুজাপুরের প্রার্থী সাবেক বিচারপতি আব্দুল গনি সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোটে জেতার রেকর্ডও আরেক মুসলমান প্রার্থীর। কলকাতার মেটিয়াব্রুজের তৃণমূল প্রার্থী আবদুল খালেক মোল্লা বিজেপির প্রার্থী রামজি প্রসাদকে ১ লাখ ১৯ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে হারান।

পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম বিধায়করা হলেন- রফিকুর রহমান (আমডাঙ্গা), আবদুর রহিম কাজী (বাদুরিয়া), রফিকুল ইসলাম মণ্ডল (বশিরহাট উত্তর), হাসানুজ্জামান এসকে (বেলেডাঙ্গা), ইদ্রিস আলী (ভাগাবাঙ্গুলা), হুমায়ুন কবীর (ভারতপুর), শওকত মোল্লা (ক্যানিং পূর্ব), আজাদ মিনহাজুল আরফিন (চাকুলিয়া), রুকবানুর রহমান (ছাপড়া), হামিদুর রহমান (চোপড়া), হুমায়ূন কবীর (দেবরা), রহিমা মণ্ডল (ডেগাঙ্গা), জাফিকুল ইসলাম (দুমকল), মনিরুল ইসলাম (ফারাক্কা), মো. গোলাম রাব্বানী (গোয়ালপোখার), নিয়ামত শেখ (হারিহারপাড়া), তাজমুল হোসাইন (হরিশচন্দ্রপুর), ইসলাম এসকে নূরুল হাজী (হাওড়া), আবদুল করিম চৌধুরী (ইসলামপুর), মোশাররফ হোসেন (ইতাহার), আবদুর রাজ্জাক (জালাঙ্গি), নাসির উদ্দিন আহমেদ (কালিগঞ্জ), আহমেদ জাভেদ খান (কসবা), শেখ শাহনেওয়াজ (কেতুগ্রাম), ফিরহাদ হাকিম (কলকাতা পোর্ট), তুরাফ হোসেন মণ্ডল (কুমারগঞ্জ), আলী মোহাম্মদ (লালগোলা), গিয়াস উদ্দিন মোল্লা (মাগরাহাট পশ্চিম), আবদুর রহিম বক্সি (মালতিপুর), আবদুল খালেক মোল্লা (মেথিয়াবুরুজ), শায়খুল হাদিস মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী (মন্তেশ্বর), সাবিনা ইয়াসমিন (মোথাবাড়ি), ডা. মোশাররফ হোসেন (মুরারাই), কল্লোল খান (নাকাশিপাড়া), শাহীন মোমতাজ খান (নাওদা), ফিরোজা বিবি (পানসকোড়া পশ্চিম), আখরুজ্জামান (রঘুনাথগঞ্জ), আবদুল সৌমিক হোসাইন (রানীনগর), রবিউল আলম (রেজিনগর), ফিরদৌসী বেগম (সোনারপুর উত্তর) ও সাবেক বিচারপতি মো. আবদুল গণি (সুজাপুর)।