‘জুম্মা মোবারক’ শুভেচ্ছাবার্তার শরয়ী হুকুম

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জানুয়ারি ২২ ২০২১, ১১:০৫

মূল: শায়খ হাসান আলী

ভাষান্তর: আহমদ মানসুর

আসসালামু আলাইকুম। অবশেষে আরেকটি জুমা আমরা পেয়ে গেলাম। এবং আমার ধারণা আপনারা অবশ্যই ইতিমধ্যে বিপুল পরিমাণ “জুম্মা মোবারক” সম্বলিত শুভেচ্ছাবার্তা পেতে শুরু করছেন!

এইসব মেসেজ পেলে আমি বলি— ভাই, আজকের ফজর মোবারক কোথায়? গতরাতের ঈশা এবং মাগরিব কি আপনি মোবারক করেছেন? কারণ জুম্মার যেমন গুরুত্ব তেমনি ফজর, ঈশা এবং অন্যান্য সালাতের সমান গুরুত্ব হওয়া উচিত। আপনার কাছ থেকে সেগুলোর তো কোন শুভেচ্ছাবার্তা পেলাম না!

রশিকতা ছেড়ে এবার আসল কথায় আসি। “জুম্মা মোবারক” সম্ভাষণের হুকুম কি?

— (শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে) সাধারণত জুম্মা মোবারক বা এই জাতীয় কিছু বলে সম্ভাষণ করা ‘মোবাহ’। মোবাহ হচ্ছে এমন কোনো কাজ, যা করা বা বলার জন্য আপনার সওয়াবও হবে না, আবার না করার কারণে কোনো গোনাহও হবে না। কিন্তু কেউ যদি ভাবে “জুম্মা মোবারক” বলা ইসলামের অংশ বা জুমাবারে মুসিলিমদের এভাবে অভিবাদন করা পুণ্যের কাজ বা এটা করা উচিত তখনই এটা বিদআতে পরিনত হয়। কারণ একটা গুরুত্বহীন, ইসলামের অংশ নয় এমন একটি বিষয়কে আপনি কে ইসলামের অংশ বানিয়ে ফেললেন।

আমাদের উচিত জনসচেতনতা তৈরী করা। এবং মানুষ কে বুঝিয়ে বলা যে এটা ইসলামের অংশ নয়, এতে সওয়াবও হয় না। কিন্তু বুঝাতে গিয়ে কাউকে ‘তুমি হারাম করছো, বা অন্যায় করছো’ বলে তিরস্কার করবেন না। যদি আপনি জানেন যে এটা সওয়াবের কাজ নয় এবং যাকে বলছেন সেও জানে এবং আপনারা একে অপরকে ‘ঈদ মোবারক’ বা ‘রমজান মোবারকে’-এর মতো করে বললেন জুম্মা মোবারক, তাহলে এতে সমস্যা নেই। কিন্তু বুঝতে হবে ইসলাম হচ্ছে বিশ্বাসের নাম। যদি কেউ সওয়াবের নিয়তে বিশ্বাস করে এমন করে বা এটাকে ইসলামের অংশ মনে করে তাহলে তাকে বাধা দিতে হবে। এমন বিশ্বাস চলতে থাকলে আগামী দশ-বিশ বছরে মানুষ এটাকে ইসলামের অংশ ভাবতে শুরু করবে!

আশা করবো আপনার দিনটি ভালো যাক। দুঃখিত, আমি জুম্মা মোবারক বলতে পারছি না।