জাতীয় সংগীতের নকল সুর বনাম প্রশাসনের দ্বিচারিতা ও আমরা

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

অক্টোবর ২০ ২০২০, ০৯:১৬

কে আই ফেরদৌস

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের মূল সুর যে কবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছিলো না, সেটা সম্প্রতি সুর নকল করার অপরাধে প্রশাসন একটি মাদরাসা বন্ধ না করলে অনেকের অজানাই থেকে যেতো। জাতীয় সংগীতের সেই সুরটা বাউল গগন হরকরার ‘আমি কোথায় পাবো তারে’ গানের সুরটা রবি ঠাকুর নিজের গানে ব্যবহার করেছেন।

রবি ঠাকুর অন্যের সুর নকল করে একটি সংগীত বানিয়ে হয়েছেন আমাদের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা, একই সুর নকল করে আল্লাহর নামে মাদরাসায় হামদ গাওয়ার অপরাধে পুরো মাদরাসাই বন্ধ করে দিলো স্থানীয় প্রশাসন। ‘চমৎকার’ যোগ-বিয়োগ না?

এবার কিছু আত্নসমালোচনা করি।
সময়কাল না ভেবে আল্লাহর প্রসংশামূলক হামদ গাইতে জাতীয় সংগীতের সুরকে নকল করতে হবে কেনো? সুরের কি অকাল পড়েছে? আজকাল কিছু বক্তাগণকেও দেখছি হিন্দি-বাংলার অশ্লীল সিনেমার গানের সুর নকল করে করে জান্নাতের গান গাইছেন। আর উপস্থিত দর্শকদের কাছ থেকে ‘সুবহানাল্লাহ’ ‘মাশাল্লাহ’ আদায় করছেন। এরকম সুর নকল করে সস্তা বক্তা-গায়কদের আর যাই হোক, সুস্থ জ্ঞান আছে বলে আমার মনে হয় না।

প্রশাসনকে কিছু বলবো কি?
আর বাংলাদেশের রাষ্ট্রতন্ত্র, প্রশাসন! এসব সেক্টরের কথা না বলাই ভালো। কারণ বলেও লাভ নেই। দেশের প্রত্যেকটি মানুষ বর্তমান রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রত্যেকটা সেক্টরকে পরিষ্কাভাবে জানে, চেনে কিন্তু প্রকাশ করতে পারে না। কেন পারে না সেটাও সবাই জানে। তো, আমি আর কী বলবো? সবার জানা বিষয়ে কথা বলা অরণ্যে রোদন’র মতই!

তবুও একটা কথা না বলে পারছি না, জাতীয় সংগীতের সুর নকল করায় কপিরাইট অপরাধে সেই সুর নকলকারী গীতিকারের সাজা হতে পারে। উনি যদি ভুল স্বীকার করে সোস্যাল মিডিয়া থেকে গানটি মুছে ফেলেন তাহলে তো আর কিছু করা উচিৎ ছিলো না।

কিন্তু একজনের অপরাধে পুরো মাদরাসা বন্ধ করতে হবে কেন? তাহলে কি আমরা যা ভাবছি সেটাই ঠিক? ইস্যু বড় নয়, ইসলামই ওদের মূল টার্গেট!