জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন বলেই সরকারের এত ভয়: মির্জা ফখরুল

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

নভেম্বর ১২ ২০২২, ১৯:৪৫

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এজন্যই তাদের এত ভয়। সমাবেশের তিন দিন আগেই গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়। সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে আবারও আহ্বান জানান তিনি।

শনিবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে ফরিদপুরের কোমরপুর আব্দুল আজিজ ইনস্টিটিউশন মাঠে আয়োজিত বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সমাবেশে আসতে পথে পথে পুলিশের বাধা। বরিশালে এবং ময়মনসিংহে গাড়ি থেকে নামিয়ে নেতাকর্মীদের মারধর করা হয়েছে। এই হচ্ছে আওয়ামী লীগের গণতন্ত্র। এত ভয় কেন? কারণে জনগণ থেকে তোমরা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছো। জনগণের সাথে তোমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।’

সরকার রাজনীতি ও অর্থনীতির পুরো দেশটাই ধ্বংস করে দিয়েছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এজন্য তারা এখন ক্ষমতায় টিকে থাকতে বেছে নিয়েছে গুম-খুনের পথ।

আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জোর করে কোনোদিন মানুষের সংগ্রামকে বন্ধ করা যাবে না। ফেরাউন পারেনি, নমরুদ পারেনি, মুসোলিনি পারেনি, আইয়ুব খান পারেনি, আপনারাও পারবেন না। ইতিহাস ভুলে যান কেন? ভুলে যাবেন না ইতিহাস। একনায়কতন্ত্র করে জোর করে, মানুষকে গুম করে, খুন করে আপনার রেহাই পাবেন না।’

আর অন্যায়-অত্যাচার সহ্য করবেন না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা রুখে দাঁড়াবো। তরুণদের জেগে উঠতে হবে, সমস্ত মানুষকে জেগে উঠতে হবে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যে ৩৫ লাখ মামলা রয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে।’

ফখরুল বলেন, ‘আমরা এখানে সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে চাই। নতুন আলোয় উদ্ভাসিত করতে চাই বাংলাদেশকে।’

আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘এরা মনে করে দেশটা তাদের বাপের, তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি। সাধারণ মানুষকে তারা চাকর-বাকর ভাবে, মনে করে যেমন খুশি তেমনভাবে ব্যবহার করা যাবে।’

নিজেদের দাবি তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই মুহূর্তে শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সেই সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। সেই কমিশন এটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে, তার মাধ্যমে পার্লামেন্ট তৈরি হবে।’

জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দলীয় কর্মসূচিতে গুলি করে নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদ এবং নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে বিভাগীয় (দলের সাংগঠনিক বিভাগ) পর্যায়ে সমাবেশ করছে বিএনপি। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর ও বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশ সম্পন্ন করেছে দলটি।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এ এফ এম কাইয়ুম জঙ্গী। সভা পরিচালনা করেন ফরিদপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব গোলাম মোস্তফা মিরাজ এবং ফরিদপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে এম কিবরিয়া স্বপন।

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজান ওমর, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মজিবুর রহমান সরোয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়দ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান ও ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।