ক্রিসমাস ডে: আমাদের যা করণীয়

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

ডিসেম্বর ২৫ ২০১৯, ২২:৩০

।। আলী হাসান তৈয়ব ।।

আজ খ্রিস্টান ভাইদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন। মুসলিম সরকারগুলোর দায়িত্ব নিজ নিজ দেশের খ্রিস্টানদের ধর্মীয় উৎসব পালনে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তাদের আনন্দ পালনে সব সুযোগ নিশ্চিত করা। এ ব্যাপারে ইসলাম উদার, বরং অন্য ধর্মের জন্য উপমা। পাশাপাশি মুসলিম ভাইদের খুব পরিষ্কার জেনে রাখতে হবে, কোনোভাবে এ উৎসবে তাদের অংশগ্রহণ করা কিংবা এর জন্য শুভেচ্ছা জানানো জায়েজ নেই। পৃথিবীর সব আলেমের মত এ ব্যাপারে অভিন্ন। ইসলামের উদারতার দিক যেমন আমাদের জানা জরুরি, তেমনি জরুরি কঠোরতার স্থানগুলোও জেনে নেওয়া।

আজকাল মুসলিম উম্মাহর গাইরত ও চেতনা এত লোপ পেয়েছে যে আরব দেশগুলোও ইসলামের মূল্যবোধ হারাতে বসেছে। গত বছর পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ক্রিসমাস ট্রি বানানো হয়েছিল আরব আমিরাতে! আজ দেখলাম আরবজাহানের একটি দেশে সরকারিভাবে মুসলিমদের নিয়ে ক্রিসমাস উৎসব পালন হচ্ছে। ধারাভাষ্যকার আবার বলে নিচ্ছেন দেশটির ইসলামী ইতিহাস ও ঐতিহ্য! এদিকে আজ ব্যক্তিগত মেসেজে আমাকে কয়েকজন ক্রিসমাস ট্রি পাঠিয়েছেন! তাই এ বিষয়ে শরিয়তের বিধান প্রচার জরুরি মনে করছি :

পৃথিবীতে শিরক সবচেয়ে বড় অপরাধ। আল্লাহর সম্মানিত তাওহিদের নবী ঈসা (আ.) এর নামে শিরক তো চলছেই, খোদ তাঁকেই বানানো হয়েছে আল্লাহর সন্তান। এ ব্যাপারে আল্লাহ আর তাঁর নবীর একটি করে বাণী জেনে রাখুন :

আল্লাহ তায়ালা বলছেন-
‘তারা বলে, ‘পরম দয়াময় সন্তান গ্রহণ করেছেন!’ তোমরা তো এক বীভৎস কথার অবতারণা করেছ। এতে যেন আকাশসমূহ বিদীর্ণ হয়ে যাবে, পৃথিবী খণ্ড-বিখণ্ড হবে এবং পর্বতসমূহ চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে আপতিত হবে। এ জন্যে যে, তারা দয়াময়ের প্রতি সন্তান আরোপ করে। অথচ সন্তান গ্রহণ করা পরম দয়াময়ের জন্য শোভন নয়। আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে এমন কেউ নেই, যে পরম দয়াময়ের নিকট বান্দারূপে উপস্থিত হবে না।’ (সূরা মারইয়াম : ৮৮-৯৩)।

আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে আব্বাস ও কা‘ব (রা.) বলেন, আকাশমণ্ডলী, পৃথিবী, পাহাড় এবং জিন-ইনসান ছাড়া সব কিছু ভীষণরূপে অস্থির ও ভীত হয়ে পড়ে। ফেরেশতারা ক্রোধান্বিত হন এবং জাহান্নামের অগ্নিপ্রজ্বালন করেন যখন কেউ বলে : ‘আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন!’ (তাফসিরে সাদি)।

হাদিসে এসেছে, আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘খারাপ কথা শোনার পর মহান আল্লাহর চেয়ে বেশি ধৈর্য-সহনশীল আর কেউ নেই, তাঁর সঙ্গে শরিক করা হয়, তাঁর জন্য সন্তান সাব্যস্ত করা হয়, তারপরও তিনি তাদেরকে নিরাপদ রাখেন এবং তাদেরকে জীবিকা প্ৰদান করেন৷’ (বুখারী: ৬০৯৯; মুসলিম: ২৮০৪)।

লেখক: আলেম, খতিব, কলামিস্ট ও সাংবাদিক