করোনা নিয়ে গুজব: ওসমানীনগরে মুচলেকা দিয়ে রক্ষা পেলেন শিক্ষক

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

মার্চ ২৭ ২০২০, ২২:৪১

সিলেটের ওসমানীনগরে করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গুজব ছড়ানোর অপরাধে অবশেষে থানায় হাজির হয়ে মুচলেকা দিয়ে রক্ষা পেলেন শিক্ষক বশির মিয়া।

আজ শুক্রবার বিকেলে বশির মিয়ার কর্মস্থল মোবারকপুর বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লেইছকে সাথে নিয়ে ওসমানীনগর থানায় ঘটনার জন্য অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করে মুচলেকা প্রদান করেন। পরে থানা পুলিশ শিক্ষক বশির মিয়াকে প্রধান শিক্ষক আবুল লেইছের জিম্মায় ছেড়ে দেয়।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মোবারকপুর বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মোবারকপুর গ্রামের বাসিন্দা বশির মিয়া তার নিজের নামের ফেসবুক আইডি থেকে একটি আজব ঘটনা প্রকাশ করেন। সেটি হল- “আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লিখলাম। অবিশ্বার্স মনে হলে ও সত্য ঘটনা! একটু গুরুত্ব দিবেন। আমার প্রতিবেশী এক বড় ভাই, উনার শ্বশুরবাড়িতে সমন্দিকের এক সন্তান আজ জন্ম নিয়েছে। জন্মের পর সে বলেছে, করোনা ভাইরাসের জন্য লিকার চা মিঠা ছাড়া আজ রাত ১২ টার পূর্বে পান করার জন্য। একথা বলে সে মৃত্যুবরণ করেছে। ঘটনাটি বিশ্বনাথের ফরিদপুর। ইতিপুর্বে আমি এবং আমার পরিবারের সবাই খেয়েছি।”

ফেসবুকে বশির মিয়ার এমন স্ট্যাটাসের কিছু সময়ের মধ্যে ওসমানীনগরসহ দেশ বিদেশে স্ট্যাটাসটি ভাইরাল হয়ে যায়। করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে মানুষ লিকার চা খেতে শুরু করে। থানা পুলিশ, প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমের কর্মীদের নিকট আসতে থাকে সাধারণ মানুষের অসংখ্য ফোন।

এ ঘটনার পর পর ওসমানীণনগর থানার ওসি রাশেদ মোবারক সিলেটের রেঞ্জের ডিআইডি ও সিলেটর পুলিশ সুপারের নির্দেশে ফেসবুকে গুজব ছড়ানো শিক্ষক বশির মিয়াকে আটক করতে রাতভর অভিযান করে। পুলিশের অভিযান টের পেয়ে বশির মিয়া চলে যান আত্মগোপনে। রাতে বশির মিয়ার ভাই ও আত্মীয় মাসুক মিয়া, মানিক মিয়া, আছমা বেগম, নাজমা বেগম ও কলি বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।

আজ শুক্রবার বশির মিয়াকে আটকে অভিযান চালায় পুলিশ এবং সে পলাতক আছে ও ফেসবুকে গুজব রটানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে মর্মে ওসমানীনগর থানার ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দেয়া হয়।

শুক্রবার বিকেলে শিক্ষক বশির মিয়া থানায় হাজির হয়ে গুজব রটানোর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে লিখিত মুচলেকা প্রদান করে তার ফেসবুক আইডিতে ক্ষমা চেয়ে আরেকটি স্ট্যাটাস প্রদান করে। পরে পুলিশ তাকে প্রধান শিক্ষক আবুল লেইছের জিম্মায় ছেড়ে দেয় এবং বশিরের আত্মীয় স্বজনকেও ছেড়ে দেয়া হয়।

ওসমানীনগর থানার ওসি রাশেদ মোবারক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, শিক্ষক বশির থানায় হাজির হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করে ও মুচলেকা দেয়। পরে প্রধান শিক্ষক আবুল লেইছের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা তার ৫ আত্নীয়কেও ছেড়ে দেয়া হয়েছে।