কক্সবাজারে ভেসে আসা ট্রলারে ১০ লাশ, বাঁধা ছিল হাত-পা

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

এপ্রিল ২৩ ২০২৩, ১৯:০৩

কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক উপকূলে ভেসে আসা একটি ট্রলার থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ১০ জনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।

আজ রোববার সকাল থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত টানা অভিযান চালিয়ে লাশগুলো উদ্ধারের পর কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ সুপার বলেন, ‘ভোরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। কিন্তু ট্রলারের কোল্ডস্টোর (ট্রলারে মাছ ও বরফ সংরক্ষণের কক্ষ) পেরেক দিয়ে আটকানো থাকায় ফায়ার সার্ভিসের খবর দিই। তারা এসে কোল্ডস্টোর খুলে ভেতরে লাশগুলো দেখতে পায়।’

তিনি আরও বলেন, এখন আমাদের কাজ হচ্ছে এসব লাশের পরিচয় শনাক্ত করা। বিষয়টি সিআইডিকে জানানো হয়েছে। পরিচয় শনাক্ত হলে হত্যাকাণ্ডের মোটিভ বোঝা যাবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, আমাদের কাছে তথ্য ছিল ১০ থেকে ১৫ দিন আগে কিছু জেলে মাছ ধরতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। এ হত্যাকাণ্ডে তাদের যোগসাজশ আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে। তবে প্রাথমিকভাবে এটি হত্যাকাণ্ড বলে মনে হচ্ছে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ১৫ থেকে ১৬ দিন আগে বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়া পয়েন্টে ডাকাতি করতে গিয়ে একদল জলদস্যু জেলেদের হামলার শিকার হয়েছিল বলে জানা গিয়েছিল। হামলায় জলদস্যুরা মারা পড়েছিল বলেও খবর বেরিয়েছিল। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত ওই দস্যুবাহিনীর বোটটির হদিস পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, নাজিরারটেক পয়েন্টে ভেসে আসা ট্রলারটি ডাকাতদলের হতে পারে।

কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, অর্ধগলিত লাশগুলো থেকে তীব্র দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। তাদের হাত-পা বাঁধা ছিল।

ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার খালেদা ইয়াসমিন বলেন, কক্সবাজারের নাজিরারটেক পয়েন্ট একটি ট্রলার ভেসে আসার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস গিয়ে ট্রলারের কোল্ডস্টোর ভেঙে অর্ধগলিত ১০ লাশ উদ্ধার করে।

স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদ জানান, শুনেছিলাম ১৫ থেকে ২০ দিন আগে একদল জলদস্যু সাগরে ডাকাতি করতে যায়। বঙ্গোপসাগরে একটি ট্রলার ডাকাতিও করে। সে সময় বেশ কয়েকটি মাছ ধরার ট্রলার একত্রিত হয়ে ডাকাতদলের ওপর হামলা চালায়। ডাকাতদের ধরে ব্যাপক মারধর করে জেলেরা। একপর্যায়ে ডাকাত সদস্যদের ট্রলারের কোল্ডস্টোরে ঢুকিয়ে উপর থেকে আটকে দিয়ে ট্রলারটি ডুবিয়ে দেয়।

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আকতার কামাল জানিয়েছেন, মাঝিমাল্লাবিহীন ভাসমান ট্রলারটি দেখতে পেয়ে শনিবার রাতে মাছ ধরার আরেকটি ট্রলার সেটিকে টেনে নাজিরারটেক পয়েন্টে নিয়ে আসে। সকালে স্থানীয় লোকজন ট্রলারের ভেতর থেকে দুর্গন্ধ পেয়ে পুলিশে খবর দেয়।