উপাচার্যের অপসারণের দাবীতে আমরণ অনশনে শাবি শিক্ষার্থীরা

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জানুয়ারি ১৯ ২০২২, ১৭:৫২

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।

টানা সাত দিনের আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ নিল বুধবার বিকেলে। উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে তারই বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ শিক্ষার্থী।

লাগাতার অবস্থান, মিছিল, সমাবেশের মতো কর্মসূচির পরও উপাচার্য পদত্যাগ না করায় আমরণ অনশনে নামেন শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবস্থানে অনড় থাকার কথা জানান অনশনকারীরা।

অনশনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, সামান্য দাবি নিয়ে আমরা প্রভোস্টের কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি সমস্যার সমাধান না করে ছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। পরে আমরা ভিসির কাছে গেলে তিনি আমাদের দাবি না মেনে উল্টো অনেকদিন সময় চায়। পরে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায় পুলিশ। তাই আমরা এ হামলার প্রতিবাদে ভিসির পদত্যাগে আমরণ অনশন শুরু করছি।

তারা বলেন, অনশনে যাওয়া আরেক শিক্ষার্থী শাহরিয়ার বলেন, বুধবার ১২টার মধ্যে শাবিপ্রবির উপাচার্য স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করায় আমরা আমরণ অনশন শুরু করেছি। পদত্যাগের আগ পর্যন্ত আমরা মুখে কোনো অন্ন নিবো না। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা না দিয়ে উল্টো আমাদের উপর হামলা চালাতে পারে এমন ভিসি যেন আর না থাকে তাই অনশন করছি। যতদিন এ ভিসি পদত্যাগ না করবে ততদিন এই কার্যক্রম চলবে।

শিক্ষার্থীরা আলোচনায় বসছে না বলে অভিযোগ করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। সরকার তদন্ত কমিটি করে কোনো সুপারিশ করলে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিরা গালাগাল সহ্য করে আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করছেন। আমাদের শিক্ষকরা এর আগে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে তারা তাদের ফিরিয়ে দেন। এ ঘটনায় উপাচার্যের যদি কোনো দোষ থেকে থাকে তা হলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এতে উপাচার্যের যদি কোনো অন্যায় থাকে, তা হলে সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তাই মেনে নেব।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার যে ঘটনা ঘটেছে, সেটিতে আমি খুবই মর্মাহত। যখন তাদের দাবি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত চলে আসবে, তখন কে বা কারা পুলিশের ওপর এ হামলা করে তা খতিয়ে দেখা হবে।

শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনার প্রতিবাদে আজ বুধবার উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে সপ্তম দিনের মতো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে, আন্দোলনের সময় শিক্ষকদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শিক্ষকরা।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১৩ই জানুয়ারি) থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বেগম সিরাজুননেসা ছাত্রী হলের প্রভোস্টের পদত্যাগসহ চার দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন তারা। আন্দোলনের এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি হামলা হয়। এরপর আন্দোলন ভিসির পদত্যাগের একদফা দাবিতে পরিণত হয়।