ইভ্যালির এমডি ও পরিচালকের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুলাই ০৯ ২০২১, ২০:০২

এবার নানা অভিযোগে অভিযুক্ত করে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরীন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদক বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) দেশত্যাগ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে।

এ প্রসঙ্গে দুদক জানায়, অনিয়মের অভিযোগ এসেছে এই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।এই অভিযোগের অনুসন্ধানকালে তারা নিশ্চিত সূত্রে জানতে পেরেছে, প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরীন ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেল গোপনে দেশত্যাগের চেষ্টা চালাচ্ছেন।

এ দিক থেকে দুদক শঙ্কা করছে, প্রতিষ্ঠানটির প্রতি কার্যক্রম চলমান থাকা অবস্থায় অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেশ ত্যাগ করলে অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হবে। তাই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাঁদের দেশত্যাগে বাধা দেয়ার বিষয়ে।

দুদকের গৃহীত এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেল শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমে জানান, দেশত্যাগের ইচ্ছা আগেও ছিল না, ভবিষ্যতেও থাকবে না।তাছাড়া এই সময়ে কোনো দেশের ভিসাও নেওয়া নেই।

তিনি বলেন, দুদকের এই পদক্ষেপে বরং ভালো হলো। এই বাধার কারণে গ্রাহক ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থার সংকট থাকলে তা লাঘব হবে।

দুদক কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, ইভ্যালির বিরুদ্ধে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন এবং গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের সূত্র ধরে গত বছরের নভেম্বরে অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন। এ লক্ষ্যে দুদকের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী ও উপ-সহকারী পরিচালক শিহাব সালামকে নিয়ে দুই সদস্যের অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়।

ইভ্যালির প্রতি অভিযোগ পর্যালোচনা করে দুদক বলছে, চলতি বছরের ১৪ মার্চ পর্যন্ত ইভ্যালি ডটকম লিমিটেডের চলতি সম্পদের পরিমাণ ৬৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটির দায় ৪০৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম হিসেবে নেওয়া দায় প্রায় ২১৪ কোটি টাকা। আর মার্চেন্টদের কাছে ইভ্যালির দায় ১৯০ কোটি টাকা। দুদকের হিসাবে স্বাভাবিক নিয়মে ইভ্যালির কাছে ৪০৪ কোটি টাকার সম্পদ থাকার কথা। কিন্তু ইভ্যালির কাছে চলতি সম্পদ রয়েছে মাত্র ৬৫ কোটি ১৮ লাখ টাকার, যা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি তার চলতি দায়ের বিপরীতে মাত্র ১৬ দশমিক ১৪ শতাংশ গ্রাহককে পণ্য সরবরাহ করতে পারবে।

দুদক জানায়, এই গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছ থেকে গৃহীত ৩৩৯ কোটি টাকার কোনো হদিস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনেও প্রতীয়মান হয়েছে যে এই টাকা সম্পূর্ণভাবে আত্মসাৎ অথবা অন্যত্র সরিয়ে ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৪ জুলাই দুদককে ইভ্যালির ব্যাপারে অনুসন্ধানের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, গ্রাহক ও মার্চেন্টদের কাছ থেকে ইভ্যালির অগ্রিম নেওয়া ৩৩৯ কোটি টাকার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক পরিদর্শন প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ওই চিঠি দেয়।