আর নয় রেজিস্ট্রেশন: এনআইডি কার্ড দেখালেই পাবে করোনার ভ্যাকসিন

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুলাই ২৭ ২০২১, ২৩:২৪

Coronavirus COVID-19 single dose small vials and multi dose in scientist hands concept. Research for new novel corona virus immunization drug.

আর রেজিস্ট্রেশন নয়, আগামী ৭ আগস্ট থেকে ১৮ বছর বয়সী সকলে নিজের ভোটার আইডি অর্থাৎ এনআইডি কার্ড দেখালেই পাবে করোনার ভ্যাকসিন। মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

এসময় তিনি বলেন, দেশের করোনা সংক্রমণের কথা চিন্তা করে আগামী ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে এনআইডি কার্ড দেখালেই দেয়া হবে করোনার টিকা। জানা যায়, করোনার টিকা দেওয়ার গতি বাড়াতে ৭ আগস্ট থেকে দেশে বিদ্যমান সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) কার্যকর করা হবে। গ্রাম পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অন্য অস্থায়ী টিকাদানকেন্দ্রগুলোও কাজে লাগানো হবে। দিনে সাড়ে ৮ লাখ করে প্রতি সপ্তাহে ৬০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসময় সকলকে পরিবারসহ করোনার ভ্যাকসিন গ্রহণে উৎসাহ প্রদান করেন। এছাড়া বৈঠকে চলমান লকডাউনকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

আরও জানা যায়, করোনার এমন পরিস্থিতিতে দেশের শিল্পকারখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে অটল থাকবে সরকার। আগামী ৫ আগস্টের আগে কোনো শিল্পকারখানা খোলা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন সরকারের এই মন্ত্রী।

এদিকে, আজ দুপুরে চলমান লকডাউন ও শিল্পকারখানা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠকে বসেন সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা। জানা গেছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিধিনিষেধ পর্যালোচনাসহ পরবর্তী করণীয় নিয়ে বৈঠকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জনাব আসাদুজ্জামান খান। এতে আরো উপস্থিত ছিলেন একাধিক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবগণ।

বার বার লকডাউন দেয়াসহ নানাধরণের কঠোর উদ্যোগ নেয়ার পরেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না দেশের করোনা প্রকোপ। প্রতিদিন বাড়ছে দেশে মৃতের সংখ্যা, সাথে বাড়ছে শনাক্তের হার। তাই সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে বৈঠকে বসেছিল সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা।

গতকাল সোমবার (২৬ জুলাই) সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এই বৈঠকের কথা মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। বিধিনিষেধ আরও বাড়ানো হবে কি না বা আরও কঠোর করার পরিকল্পনা রয়েছে কি না- জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘কাল আমরা মিটিং করব। তারপর সিদ্ধান্ত। মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সচিবালয়ে এ মিটিং হবে।’

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত ১ থেকে ৭ জুলাই কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। পরে তা বাড়িয়ে ১৪ জুলাই করা হয়। ঈদুল আজহার কারণে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়। পরে ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ‘কঠোরতম বিধিনিষেধ’ জারি করে সরকার। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, শুরু হওয়া দুই সপ্তাহের লকডাউনের বিধিনিষেধ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন গত ১৩ জুলাই জারি করে সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, করোনা ভাইরাসজনিত সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট দিনগত রাত ১২টা পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো। কঠোর বিধিনিষেধের শর্তগুলো হলো- সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। সড়ক, রেল ও নৌপথে গণপরিবহন (অভ্যন্তরীণ বিমানসহ) এবং সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। শপিংমল, মার্কেটসহ সব দোকানপাট বন্ধ থাকবে। সব পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। সব প্রকার শিল্প-কলকারখানা বন্ধ থাকবে জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক (বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান, ওয়ালিমা), জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি) রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।