আমরা কেনো আলেমদেরকে ভালবাসবো

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

এপ্রিল ০৮ ২০২১, ২৩:৪১

জু্বের আহমদ: সহিহ হাদিছে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি সালাম বলেন ‘কেয়ামতের দিন যখন দুনিয়ার সকল মানুষ একএিত হবে, তখন আল্লাহ পাক সকল আলিমদেরকে নির্দেশ দিবেন, তারা যেন সকল মানুষ থেকে আলাদা হয়ে যায়, আল্লাহর নির্দেশ পেয়ে সকল আলিমগন যখন আলাদা হবেন, তখন আল্লাহ ঘোষনা করবেন’ আমি তুমাদেরকে আলিম হওয়ার তওফিক দিয়েছি তখন,যখন আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি জাহান্নামের আগুন দিয়ে আমি তুমাদেরকে জ্বালাবো না। সুবহানাল্লাহ ।

একদিন ইমাম আবু হানিফা (রহ) এবং উনার সংগী সাথীরা মজলিসে বসা ছিলেন, হঠাৎ করে বাচ্চাদের একটি খেলার বল তাদের সামনে এসে পড়লো । বেয়াদবির ভয়ে বাচ্চারা সেই বলটি তাদের সামনে থেকে নিতে সাহস করলোনা ! কিন্তু তাদের মধ্যে থেকে একটি ছেলে নির্ভয়ে , নি:সংকোচে ,কুৎসিত অংগভংগি করে, ইমামদেরকে পাত্তা না দিয়ে সেখান থেকে বলটি নিয়ে গেলো । উপস্তিত ইমামগন ছেলেটার ব্যবহার দেখে তাজ্জব বনে গেলেন । তাদের অবস্তা বুজতে পেরে ইমাম আবু হানিফা ( রহ) বললেন, খুজ নিয়ে দেখো এই ছেলেটার জন্মের দোষ আছে । পরে ইমামগন খুঁজ নিয়ে দেখলেন সত্যিই ছেলেটার জন্মের দোষ আছে ! ইমামগন যখন আবু হানিফাকে, জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কিভাবে জানলেন এই ছেলেটার জন্মের দোষ আছে ? তখন তিনি বললেন , মা বাবার কোন বৈধ সন্তান আলেমদের সামনে বেয়াদবি করতেই পারেনা ।

দুনিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে ঘৃনিত ব্যক্তির নাম হচ্ছে *ফেরাউন *। এই ফেরাউনকে আল্লাহ তায়ালা অসংখ্য অজস্র নেয়ামত দিয়েছিলেন। কিন্ত ইমানের মতো সবছেয়ে বড় নেয়ামত থেকে আল্লাহ সোবহানাহু ওয়াতায়ালা তাহাকে বঞ্চিত করেছিলেন । কেনো বঞ্চিত করেছিলেন তার উত্তর খুজতে গিয়ে মোফাসসিরগন বলেন, মুসা (আঃ) জন্মের পর উনার মা যখন ফেরাউনের ভয়ে আল্লাহর হুকুমে উনাকে সাগরে ভাসিয়ে দিলেন তখন সেই মুসা (আ:) কে বহন করা বাক্সটি আল্লাহর কুদরতে ফেরাউনের ঘাটে যায়। ঘটনাটা আমরা সবাই জানি ।

ঘটনাটা বলা আমার উদ্দেশ্য নয় বরং শিক্ষাটা !!আছিয়া (আঃ) এর দাসিরা যখন এই শিশু মুসা (আঃ) কে আছিয়া (আঃ) এর কাছে নিলো তখন আছিয়া (আ:) এর খুব মায়া হলো, কিন্তু ফেরাউনের কাছে নিলে সে বলে উঠলো আমার এই শিশুটিকে মায়া লাগে না বরং আদেশ দিলো শিশুটিকে হত্যা করার, এই থেকে মুফাসসিরগন বলেন, আছিয়া (আঃ) যে ,শিশু মুসা কে দেখে বলেছিলেন আমার মমায়া ললাগে সেই জন্য আআল্লাহ ততায়ালা আছিয়া কে পরিপূর্ণ ইমান দান করেছিলেন আর ফেরাউন যে বলেছিলো আমার মায়া লাগে না সেই জন্য আল্লাহ তাহাকে ইমানের মতো দৌলত থেকে বঞ্চিত করেছিলেন।

এই ঘটনা থেকে আমাদের মতো আওয়ামের শিক্ষা হলো এই যে, মুসা (আ:) চলে গেছেন কয়েক হাজার বছর পূর্বে কিন্তু উনার উত্তরসুরিরা কেয়ামত পর্যন্ত আসতে থাকবে,,দ্বীনের দাওয়াত দিতে থাকবে, হকের কথা বলতে থাকবে। এই সব নবীদের উওরসুরি, হক্কানী আলেমদের দেখলে যাদের চুলকায়, যাহারা অন্তরে দুষমনি পোষন করে, কোরআন হাদিসের কথা বললে যাহাদের গায়ে আগুন ধরে যায়, তাহাদের মৃত্যু যে ফেরাউনের মতো বেইমান অবস্তায় হবে তাহাতে কোনো সন্দেহ নাই ।

আর যদি আমরা সেই সকল নবীদের উত্তরসূরি হক্কানি আলেমদের সাথে সু সম্পর্ক রাখী, এবং অন্তর দিয়ে মহব্বত করি তাহলে ইনশাল্লাহ এই কথা গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি যে, মৃত্যুর সময় আছিয়া (আ:)এর মতো ইমানি মৃত্যু নসিব হবে এবং আমাদের ওয়ারিশ দের থেকে আল্লাহ তায়ালা একজন খাটি আল্লাহওয়ালা, মুত্তাকী, পরহেজগারি আলেম, হাফেজ, মুফতি, মুহাদ্দিস, মুফাসসির তৈরি করবেন ইনশাআল্লাহ।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে হক্কানি আলেমদেরকে যেনো যথাযথ সম্মান ও মহব্বত করতে পারি তার তাওফিক দান করেন এবং সকল ধরনের দোসমনী, আদাওতি থেকে আমাদের অন্তরকে পবিত্র করে দেন। আমিন।।