আন্দোলনের আশংকায় কওমী মাদরাসা বন্ধ রাখার সুপারিশ

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

মে ২৯ ২০২১, ০৭:২৪

একুশে জার্নাল ডেস্ক: করোনার কারনে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আগামী ১৩ জুন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সে অনুযায়ী প্রস্তুতি শুরু করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু কওমি মাদরাসাগুলো খোলার ব্যাপারে আশংকা প্রকাশ করে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে একটি গোয়েন্দা টিম। গোয়েন্দা প্রতিবেদনের দাবী অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে কওমি মাদ্রাসা খোলা হলে সরকারবিরোধী বড় ধরনের অন্দোলন করতে পারে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেফতার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে পরিস্থিতি ঘোলাটে হতে পারে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিকল্পনা তৈরি করছে মাদ্রাসাছাত্ররা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শীর্ষ নেতারা গ্রেফতার হওয়ায় অন্য নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তুষ্টি লক্ষ করা যাচ্ছে। এ অবস্থায় দেশে সব কওমি মাদ্রাসা খুলে দেওয়া হলে আবাসিক ছাত্রদের মাদ্রাসায় উপস্থিতিসহ অনাবাসিক ছাত্ররা নিয়মিত মাদ্রাসায় যাতায়াত করবে। মাদ্রাসাগুলো নতুন ছাত্রভর্তি কার্যক্রম শুরু করবে। তখন হেফাজতে ইসলামের নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার এবং নেতাদের মুক্তির দাবিতে সরকারবিরেধী বড় ধরনের আন্দোলন হতে পারে।

প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, বর্তমানে মাদ্রাসাগুলো বন্ধ থাকলেও চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসাসহ বড় বড় মাদ্রাসায় অনেক আবাসিক ছাত্র অবস্থান করছে। মাদ্রাসাছাত্ররা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাসহ পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে পরিকল্পনা করছে। হাটহাজারী মাদ্রাসার ভেতর ও বাইরে প্রায় ৩০০ ছাত্র পালাক্রমে পাহারা দিচ্ছে। তাদের কাছে দেশীয় অস্ত্রও রয়েছে। মাদ্রাসা খুলে দেওয়া হলে তারা হাটহাজারী থানায় হামলা, ভাঙচুরসহ আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটাতে পারে।

গোয়েন্দাদের পর্যবেক্ষণ : গত ২৬ মার্চের সহিংসতায় বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী মীর নাসিরের ছেলে মীর হেলাল ও জামায়াত নেতা নাসির উদ্দিন কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। হেফাজতে ইসলাম ফের কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করলে তারা আবারো হেফাজতকে উসকানি দিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে সহিংস হয়ে উঠতে পারে।

গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী, হেফাজতে ইসলামের নেতাদের মধ্যে মাওলানা মামুনুল হকসহ গ্রেফতারকৃত আলেমদের প্রভাব ও সারাদেশে ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তাছাড়া জনসাধারণ ও মুসল্লিদের মধ্যে এসব নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তাই মাদ্রাসা খুললে বিষয়টি নিয়ে কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা অন্দোলন করতে পারে।

গোয়েন্দারা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, কওমি মাদ্রাসাগুলো বিত্তবানদের দান, জাকাতের অর্থ ও কোরবানির পশুর চামড়ার বিক্রয়লব্ধ অর্থ দিয়ে পরিচালিত হয়। এবার মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় কওমি মাদ্রাসাগুলো কাঙ্ক্ষিত জাকাতের টাকা তুলতে না পারায় আর্থিক সংকটে রয়েছে। এ কারণেও ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। গোয়েন্দাদের সুপারিশ, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় কওমি মাদ্রাসাগুলো পুরোপুরি খুলে না দিয়ে নতুন ছাত্রভর্তির জন্য সীমিত পরিসরে দাপ্তরিক কার্যক্রমের জন্য খোলা যেতে পারে।