আতিক উল্লাহসহ সমস্ত নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তির সুরক্ষা দেখতে চাই

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

অক্টোবর ১৯ ২০১৯, ১৯:০৭

গতকাল ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী মাওলানা আতীক উল্লাহ আজকে ১২ দিন যাবৎ নিখোঁজ আছেন। পত্রিকাটির ভাষ্যমতে রাজধানীর আদাবর থানায় তাঁর পরিবার একটি জিডিও করেছে।

মাওলানা আতীক উল্লাহ, ফেসবুকে যিনি Atik Ullah হিসেবেই সমধিক পরিচিত। তিনি ইসলামী অঙ্গণে অন্যতম বেস্টসেলার রাইটার। সামগ্রিকভাবেই একজন লব্ধপ্রতিষ্ঠ লেখক। প্রায় অর্ধ শতাধিক পুস্তকের রচয়িতা।

লেখক, আলেম কিম্বা লোকপরিচিত ব্যক্তি হিসেবেই নয় বরং মানুষ হিসেবে যে কারোরই নিখোঁজ হওয়াটা উদ্বেগের। এই উদ্বেগ পরিবারের নয় কেবল রাষ্ট্রযন্ত্রেরও। এটা সেল্ফ নাকি ফোর্স ডিজএপায়েরেন্স তা তো সুনিশ্চিত বলা আমার যদিও সম্ভব নয়।

কিন্তু একজন দায়িত্ববান শিক্ষক ও প্রিন্সিপালের ১২ দিন নিখোঁজ থাকাটাও অস্বাভাবিক। ব্যক্তিজীবনে তাঁর মত ভীষণরকম পরিশীলিত, মার্জিত একজন মানুষের পক্ষে পরিবার, মাদ্রাসা কিম্বা পরিচিতজনকে না জানিয়ে নিখোঁজ থাকাটা কেবল অস্বাভাবিকই নয় বরং অসম্ভব প্রায়।

ফলত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের সবিনয় অনুরোধ তারা যেন তাঁর খোঁজ করার ব্যাপারে সর্বোচ্চ প্রয়াস যেন অব্যাহত রাখেন। রব্বের কাছে দোয়া করি, আল্লাহ তাঁকে কল্যাণের মধ্য দিয়ে ফিরিয়ে আনুন।

প্রসঙ্গত স্মর্তব্য, সিরিয়াস হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশনের অন্যতম হলো গুম বা Enforced disappearance। ২০১০ সালে প্রণীত ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর প্রটেকশন অল পার্সন ফ্রম এনফোর্সড ডিজএপায়েরেন্স এর প্রথম অনুচ্ছেদের ২নং ধারায় বলা হচ্ছে-

এমনকি যুদ্ধ, কিম্বা যুদ্ধের সম্ভাবনা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা যাই হোক না কেন কোনও অজুহাতেই এনফোর্সড ডিজএপায়েরেন্স বা গুমের বৈধতা হাজির করা যাবে না এবং এই কনভেনশন অনুযায়ী স্টেট পার্টি তথা রাষ্ট্র এ ব্যাপারে যথাসম্ভব সমস্ত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে দায়বদ্ধ।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ১৯৯৮ সালে গৃহীত রোম স্ট্যাটিউটের আর্টিকেল ৭ এ এনফোর্সড ডিজএপায়েরেন্সকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে অভহিত করা হয়েছে।

জাতিসংঘের ১৯৯২ সালে এনফোর্সড ডিজএপায়েরেন্স থেকে সুরক্ষার জন্য গৃহীত ঘোষণাপত্রে প্রত্যেক ব্যক্তির গুম হওয়া থেকে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। আমরা মাওলানা আতীক উল্লাহসহ সমস্ত নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তির ক্ষেত্রেই সে সুরক্ষা দেখতে চাই।

আশা করি, তিনি ফিরবেন। তাঁর নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে অধিকাংশ গণমাধ্যমের নীরবতাও বেশ লক্ষণীয়। তাঁর বহু ব্যাপারে বহুজনের সঙ্গে চিন্তাগত ফারাক আছে৷ কিন্তু কেউ যত বিরুদ্ধ মতেরই হোন না কেন- ব্যক্তির মৌলিক মানবাধিকারের সুরক্ষার প্রশ্নে আমাদের প্রত্যেকেরই উচ্চবাচ্য হওয়া উচিত৷

আরজু আহমাদ