৭০ বছর বয়সী আ’লীগ নেতাকে অমানবিক নির্যাতন

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুন ০২ ২০২০, ২০:৪৩

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায় কক্সবাজার চকরিয়া উপজেলার ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ছয়কুড়িটিক্কা পাড়া এলাকায় ৭০ বছর বয়সী নুরুল আলম মিয়াকে মারধর করছেন কয়েকজন যুবক। কিল-ঘুষি মেরে তার পড়নের লুঙ্গি-গেঞ্জি টেনে ছিঁড়ে ফেলছেন, সঙ্গে চলছে অকথ্য গালাগালি।

এ ঘটনার নেতৃত্ব দেন স্থানীয় স্থানীয় ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি আনছার আলম ও তার সহযোগীরা। আলমের ছেলে আশরাফ হোসাইন এ ঘটনায় বাদী হয়ে চকরিয়া থানা একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহার আমলে নিয়ে ঘটনার তদন্ত করছে থানা পুলিশ।

মামলার আসামিরা হলেন- ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ছয়কুড়িটিক্কা পাড়া এলাকা বদিউল আলম (৫৫) ও তার ছেলে মিজানুর রহমান (২৮), আনছার আলম (৩৫), শাহ আলম (৫২) ও তার স্ত্রী আরেজ খাতুন (৪৮), রিয়াজ উদ্দিন (৩২), জয়নাল আবেদিন (৩০) এবং মো.রুবেল (২৮)।

নুরুল আলমের ছেলে আশরাফ হোসাইনের মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৪ এপ্রিল তার বাবা নুরুল আলম ঈদের বাজার করে ঢেমুশিয়া স্টেশন থেকে টমটম গাড়িতে করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে আনছার আলমের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী টমটম থেকে তার বাবাকে নামিয়ে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে পরনের লুঙ্গি- গেঞ্জি ছিঁড়ে ফেলে। তাকে কিল-ঘুষি দিয়ে মারধর করে। অকথ্য গালি-গালাজও করে তারা। এলাকার কয়েকজন যুবক এ ঘটনা মোবাইলে ধারণ করে। তার বাবা বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকে।

এজাহারে আরও বলা হয়, এ ঘটনা জানার পর তার ছোট ভাই সিএনজি চালক সালাহউদ্দিন স্থানীয় লোকজনসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের বাবাকে উদ্ধার করে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। বাদি এজাহারে দাবি করেন, ঘটনার সময় তার বাবার ব্যবহৃত একটি মোবাইল সেট ও পকেটে থাকা নগদ সাড়ে সাত হাজার টাকাও ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা।

১ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়- নুরুল আলমকে প্রথমে চড় থাপ্পড় দিচ্ছেন আনছার আলম। এ সময় তার অন্যান্য সহযোগীরা আশপাশ ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিল। এক পর্যায়ে নুরুল আলমের লুঙ্গি খুলে ফেলেন তিনি। এ সময় বাধা দিতে গেলে তার গেঞ্জি টেনে ছিঁড়ে ফেলেন আনছার আলম। এরপর অনবরত তাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। আনছুরকে নুরুল কিছু একটা বোঝাতে চাইলেও তিনি মানছিলেন না। আঙুল তুলে শাসিয়ে গালি-গালাজ করে কথাবার্তাও বলেন আনছার আলম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢেমুশিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম জিকু বলেন, ‘তুচ্ছ একটি ঘটনার জের ধরে এমন অমানবিক আচরণ করা হয়েছে বয়স্ক নুরুল আলমের সাথে। তিনি এই এলাকার বয়োবৃদ্ধ। সবাই ওনাকে খুব সম্মান করে। এলাকার কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী ঘটনাটি ঘটিয়েছে। বিষয়টি আমাকে জানানোর পর থানায় মামলা করার জন্য পরামর্শ দিয়েছি।’

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে আনছার আলমের মোবাইলে কয়েকবার ফোন করা হয়। তবে নম্বরটি বন্ধ ছিল।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, ‘এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ছেলে আশরাফ হোসাইন একটি এজাহার জমা দিয়েছেন। সেটি অবশ্য আমার হাতে এসে পৌঁছেনি। তবে ঘটনা তদন্তপূর্বক দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।