১৩ সন্তানের সবাই ছুঁড়ে ফেললো, হিন্দু বৃদ্ধার ঠাঁই হলো মুসলিম পরিবারে!

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

জুলাই ২৪ ২০১৯, ১৯:২১

 

তেরো সন্তানের জননী তিনি। কিন্তু ছেলেমেয়েদের সংসারে ঠাঁই হয়নি বিধবা বৃদ্ধার। অবিবাহিত এক মেয়েকে নিয়ে প্রায় রাস্তায় এসে দাঁড়িয়েছিলেন।

কিন্তু মানবিকতা তো মুছে যায়নি। ফুরিয়ে যায়নি ভাল মানুষও। নবতিপর বৃদ্ধা বেলা রাণী দত্ত তাই নতুন ঘর পেয়েছেন। সাকিনা বিবির ঝুপড়িই এখন তার ঠিকানা।

৯৫ বছর বয়সী বেলা রাণী দেবী পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথির খড়কি গ্রামের বাসিন্দা। স্বামীর মৃত্যুর পরে ছেলেমেয়েদের মধ্যে জমিজমার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে অশান্তি শুরু হয়।

তার জেরেই বছর চারেক আগে ছেলে আর তাদের স্ত্রীরা বৃদ্ধা বেলা রাণী দেবীকে বাড়ি থেকে বার করে দেন। সেই সময় কাঁথির মহকুমাশাসকের কাছে নালিশ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বৃদ্ধার।

তখন অবিবাহিত মেয়ে শোভা রাণীকে নিয়ে জুনপুটের রামপুরের কাছে বাড়ি ভাড়া নিয়ে চলে আসেন বেলা রাণী দেবী। মেয়ে শোভা রাণী লোকজনের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন।

কোনওরকমে মা-মেয়ের চলে যেত। তবে কাজ করতে করতে শরীর ভেঙে যায় এবং স্নায়ুর রোগে আক্রান্ত হন শোভা রানী।

আর এক সড়ক দুর্ঘটনায় হাত-পা ভাঙে বেলা রানী দেবীর। অর্থাভাবে বাড়ি ভাড়া দিতে পারছিলেন না। তাই বাড়িওয়ালা মা-মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। আর সেই সঙ্কটকালেই তাদের পাশে এসে দাঁড়ান এক মুসলিম পরিবার।

কাঁথির উত্তর দারুয়ায় সাকিনা বিবির ঝুপড়ি ঘরেই এখন থাকেন বেলা রানী এবং শোভা। সাকিনার স্বামী বাইরে থাকেন। পরিচারিকার কাজ করে, চারাগাছ বেঁচে বহু কষ্টে দিন গুজরান করেন সাকিনা। তবু সংসারে আরও দু’জন মানুষকে ঠাঁই দিতে দু’বার ভাবেননি তিনি।

সাকিনা বলেন, ‘মাসিমা (বেলা রাণী) আমার স্বামীর পূর্ব পরিচিত। ঠিকমতো খেতে পাচ্ছিলেন না। অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাই আমাদের বাড়িতে এনে রেখেছি।’
বেলা রাণী দেবী ও শোভাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার কথা অবশ্য স্বীকার করছেন না তার ছেলে, বৌমা, নাতি-নাতনিরা।

এক পুত্রবধূ লক্ষ্মী দত্ত বলেন, ‘মাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়নি। উনি নিজেই মেয়েকে নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। আমরা বহুবার ফিরিয়ে আনার জন্য গিয়েছি। কিন্তু উনি রাজি হননি।’

তবে পুত্রবধূর এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন বেলা রানী দেবী। তিনি সাকিনার হাত দু’টো ধরে বসেছিলেন। চোখে জল। পাশে দাঁড়ানো মেয়ে শোভা বললেন, ‘দাদা-বৌদির সংসারে আমাদের জায়গা হয়নি। কিন্তু সাকিনা আশ্রয় দিয়েছেন। আমরা তার কাছে কৃতজ্ঞ।’

আর বেলা রাণী বলেন, ‘সাকিনাই আমার সত্যিকারের মেয়ে।’সুত্রঃ আনন্দবাজার।

আরো সংবাদ

আলোড়ন ‍সৃষ্টি করলো ডেনমার্কের স্কুলে নামাজ শিক্ষা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সম্প্রতি ডেনমার্কের একটি স্কুলে নামাজ পড়া শেখানো নিয়ে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওটিতে দেখা যায় জোব্বা টুপি পরিহিত আফ্রিকান বংশোদ্ভূত একটি বাচ্চা সামনে দাড়িয়ে কিভাবে নামাজ পড়তে হয় তা দেখাচ্ছে আর পেছনে একজন মহিলা শিক্ষক দাড়িয়ে বাকি বাচ্চাদের যাদের বেশিরভাগ জাতিগতভাবে ড্যানিশ, আদেশ দিচ্ছেন তাকে অনুসরণ করার জন্য। স্পুটনিকনিউজ

ভিডিওটি সারা ডেনমার্কে রাজনৈতিক থেকে সাধারণ ড্যানিশ সকলের মাঝে এক বিশাল বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।

প্রাথমিকভাবে তারিখ জানা না গেলেও ড্যানিশ টিভি২ নামের একটি চ্যানেল একে ২০১৮ সালের নভেম্বরে করা সাউদার্ন জুটল্যান্ডের ভেলজে পৌরসভার থিয়েরগড স্কুলের একটি ক্লাসের ভিডিও বলে প্রকাশ করে।

ক্লাসের ভিডিও করার নিষেধাজ্ঞা সত্তে¡ও এক সুদানি বংশোদ্ভুত বাচ্চার অভিভাবক এটি ভিডিও করেন এবং ইন্টারনেটে আপলোড করেন বলে টিভি২ জানান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গ্রেট হগার্ড ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি প্রকাশিত হওয়ার পর এটি নিয়ে বিরুপ মন্তব্য করা শুরু হয়। স্কুলের সকল শিক্ষকদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়ার কথাও বলেন অনেকে।

কেউ স্কুলটিকে কোরান স্কুল বলেন তো কেউ সম্পুর্ণ স্কুলটিকেই বন্ধ করে দেয়ার কথা বলেন। অভিযোগ করেন এটি ড্যানিশ বাচ্চাদের মৌলবাদী শিক্ষা দিচ্ছে। রাজনৈতিকভাবেও নানা ধরণের আলোচনা সমালোচনা হয়েছে এ বিষয়ে।

স্কুল কর্তৃপক্ষ জানায় বিভিন্ন ধরণের জীবনপদ্ধতি সম্পর্কে বাচ্চাদের পরিচিত করতেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল এবং স্কুলের সকল শিক্ষক ও কর্মচারীর কাজের উপর তাদের সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। তবে ভবিষ্যতে ভিডিও ধারণের ব্যাপারে আরো সতর্কতা অবলম্বন করা হবে।
উল্লেখ্য ইসলাম ডেনমার্কের প্রধান সংখ্যালঘু ধর্ম। ২০১৮এ হওয়া একটি ধারণা অনুযায়ী ডেনমার্কে ৩ লক্ষের বেশী মুসলমান আছেন যা মোট জনসংখ্যার ৫.৩ শতাংশ।