হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর একশত সাতাশতম জন্মবার্ষিকী আজ

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

সেপ্টেম্বর ০৮ ২০১৯, ১৪:৪৪

আবীর আহাদ 

আজ গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর একশত সাতাশতম জন্মবার্ষিকী। ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনীতিক ও আইনজীবী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ১৮৯২ সালের আট সেপ্টেম্বর পশ্চিম বাংলার মেদিনীপুরে জন্মগ্রহণ করেন । তিনি ছিলেন তৎকালীন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জাস্টিস স্যার জাহিদ সোহরাওয়ার্দীর কনিষ্ঠ পুত্র। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ছিলেন একজন প্রখ্যাত ব্যারিস্টার। ১৯৪৬-৪৭ সালে তিনি ছিলেন অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী। এর পূর্বে তিনি কলকাতার প্রথম ডেপুটি মেয়র ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক ও খাজা নাজিমুদ্দিন মন্ত্রিসভারও সদস্য ছিলেন।

সাতচল্লিশ সালে ভারতবিভক্তির প্রাক্কালে তিনি নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর বড়ো ভাই শরৎ বসুর সমর্থন নিয়ে অবিভক্ত বাংলার স্বাধীনতার প্রস্তাব দেন । কিন্তু তৎকালীন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের বিরোধিতার কারণে স্বাধীন বৃহত্তর বাংলা সফলতা লাভ করেনি ।

পাকিস্তান অর্জিত হওয়ার পর কলকাতার বনেদি জীবন ও বিপুল সম্পদ ফেলে রেখে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী বলা চলে এক-কাপড়ে পাকিস্তানে চলে আসেন । এরপর মুসলিম লীগের গণবিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করেন এবং পরবর্তীতে তিনি নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন । তাঁর অন্যতম নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে তৎকালীন পূর্ববাংলায় (পূর্ব পাকিস্তান) ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ বিপুল পরাজয় বরণ করে । ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র রচনায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন । এসময় তিনি কিছুকাল পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিশেবে দায়িত্ব পালন করেন । 1958 সালে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করলে তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সারা পাকিস্তানব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলেন । সামরিক শাসক আইয়ুব খান তাঁকে কারান্তরালে নিক্ষেপ করেন । কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে পাকিস্তান সরকার তাকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য বৈরুতে পাঠিয়ে দেয় । ১৯৬৩ সালের ০৫ ডিসেম্বর বৈরুতে নি:সঙ্গ অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন । রাজনৈতিক মহল আশংকা প্রকাশ করেন যে, পাকিস্তানি সামরিক জান্তারা এই প্রখ্যাত বাঙালি নেতাকে বিষপ্রয়োগে হত্যা করেছিলো । এভাবেই উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনীতিবিদ ও আইনজ্ঞ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর বর্ণাঢ্য জীবনের অবসান ঘটে ।

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ছিলেন বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক গুরু । তিনি বাংলাদেশের অন্যতম জাতীয় নেতা । তাঁর অবিস্মরণীয় স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করছি ।