হাটহাজারীতে ভন্ড বাবার মাজার গুড়িয়ে দিলেন প্রশাসন
একুশে জার্নাল
এপ্রিল ২৯ ২০১৯, ১১:৫০

কাজী শহিদুল্লাহ ওয়াহিদ; চট্টগ্রামের হাটহাজারী পৌরসভার অাদর্শগ্রামে ইব্রাহিম চিশতী(প্রকাশ অনিল বড়ুয়া) নামের এক ভন্ডের অাস্তানা গুড়িয়ে দিল হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল অামিন।
রবিবার (২৮এপ্রিল) বিকালে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীর সহযোগীতায় ভন্ডের অাস্তানাটি গুড়িয়ে দেন। এসময় এলাকার কয়েকশত উৎসুক জনতা উপস্থিত ছিলেন। কোন ধরনের বিশৃংখলা প্রতিরোধ অাইন-শৃংখলা বাহিনীও উপস্থিত ছিলেন।
এলাকাবাসীর একাধিক লোকের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ৮বছর অাগে এই গ্রামের বাসিন্দা ইবরাহীম চিশতী(প্রকাশ অনিল বড়ুয়া) মারা যায়। তাকে স্থানীয় কবর স্থানে কবর না দিতে তিনি অচিয়ত করে যাওয়ায় তার স্বয়ন কক্ষে দাফন করে। তার জানাযার নামাজে মাত্র ৯জন ব্যক্তি অংশ গ্রহন করেন। বিগত ৬ বছর যাবৎ তার নামে রাত্রে নারী পুরুষ বাৎসরিক ওরশ অনুষ্ঠান করে ঘরোয়া ভাবে। ওরশের নামে সারারাত নাচ গানে অতিষ্ঠ পাশে বসবাসরত পরিবাগুলো। দীর্ঘ ৮ বছর অসহ্য যন্ত্রনা সহ্য করে অাসছে। লোক ভয়ে কাউকে কিছু বলেনি তারা।
অাগামী ৩ মে প্রকাশ্যে ওরশ করার জন্য অদুদিয়া মাদরাসার শিক্ষক অাবদুল ওহাব অাল কাদেরীর নেতৃত্বে ওরশ উদযাপন করতে বিভিন্ন লিপলেট, পোষ্ঠার ও টাকা উত্তোলনের রশিদ বই নিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে চাঁদা উঠাচ্ছে। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে মডেল থানার ওসির কাছে অভিযোগ করলে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে এলাকাবাসীর মাধম্যে বিষয়টি অবগত করলে সোমবার বিকেলে তিনি ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয়দের পরিস্থিতি দেখে দ্রুত ভন্ড বাবার অাস্তানাটি গুড়িয়ে দেয়। তার ২মেয়ে ও ২ছেলে রয়েছে। পুত্র ২জনেই সিএনজি চালক। তারা অাস্তানার শাহজাদা দাবি করেন। প্রায় ৮ বছরের ভন্ডামীর অাস্তানাটি গুড়িয়ে দেওয়ায় এলাকার থমথমে পরিস্থিতি থাকলেও বর্তমানে শান্ত।
অদুদিয়া মাদরাসার শিক্ষক ও এলাকার বিতর্কিত ব্যক্তি মুফতি অাবদুল ওহাব অাল কাদেরীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এটি কোন মাজার না। সে কোন পীরও না। তবে মনছুরাবাদ পীরের মুরিদ ছিলেন। তাই তার কবরকে দায়রাপাক হিসেবে তৈরী করা হলে অামি তার দায়িত্ব পালন করে অাসছি তখন থেকে। এ ওরশের কার্যক্রমের সাথে জড়িত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন অামি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারবনা। কিন্তু এলাকার একাধিক ব্যক্তি অাবদুল ওহাবের বিরোদ্ধে নারী ঘটিত কেলেংকারির অভিযোগ করে বলেন, একজন নারী লোভী ব্যক্তি, সমাজে ফেৎনা সৃষ্টি করতে নানা রকম বিতর্কিত কাজ সৃষ্টি করে থাকেন।
এ বিষয়ে ইউএনও রুহুল অামিন প্রতিবেদককে জানান, এ এলাকায় ভন্ডামী করতে অলি অাওলিয়াদের বদনাম রটাতে ও মাজার বানিয়ে ধান্দা করতে মুলত তাদের এ পরিকল্পনা। কিন্তু এলাকার এত লোক থাকতে এসব বিষয় অাগে থেকে কেন বন্ধ করা হলোনা। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন তখনি বন্ধ করলে অাজ এ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হতনা। তবে সুন্দর সমাজ গড়ে তুলতে এলাকাবাসী এ বিষয়ে জনতম সৃষ্টি করে তা প্রতিহত করতে হবে।