হলুদ তরমুজ চাষে সফল জুড়ীর তরুণ খোরশেদ আলম
একুশে জার্নাল ডটকম
এপ্রিল ০৯ ২০২২, ১৯:৫৪
জহিরুল ইসলাম সরকার, জুড়ী প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলার ডোমাবাড়ি গ্রামের খোরশেদ আলম ইউটিউব দেখে হলুদ তরমুজ চাষের শখ জাগে। পরীক্ষামূলকভাবে প্রথমবারের মতো চাষ করেই সফল হয়েছেন তিনি।
জানা যায়, ইউটিউব দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে হলুদ তরমুজের চাষ শুরু করেন। প্রথমবারের চাষেই ভালো ফলন হয়েছে। হলুদ তরমুজ দেখতে আশেপাশের এলাকা থেকে মানুষ তার ক্ষেতে ছুটে আসছেন। অনেকেই আগামিতে এই তরমুজ চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করে খোরশেদ আলমের কাছে থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন। নতুন এই প্রজাতির তরমুজ দেখতে সুন্দর, আবার স্বাদ ও সুগন্ধিও বেশ। একারণে এই তরমুজের চাহিদাও ভাল।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলায় ১৬ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। তার মধ্যে ১ হেক্টর জমিতে এই হলুদ তরমুজের চাষ হয়েছে।
তরমুজ চাষকারী খোরশেদ আলম বলেন, ইউটিউব দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই হলুদ তরমুজের চাষ শুরু করি। ইউটিউবে এই তরমুজের ফলন দেখে খুব শখ জাগলো। তাই চিন্তা করলাম একবার পরীক্ষা করেই দেখি। এরপর সাহস করে বীজ ক্রয় করি। ৬ শতাংশ জায়গায় বীজ বপন করি। ফলনও ভালো হয়। ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ২১৬টির মতো হলুদ তরমুজ আসে। যার গড় ওজন প্রায় ৯শত কেজি। তিনি বলেন, এই ফসল চাষ করতে সব মিলিয়ে ব্যয় হয়েছে ৮ হাজার টাকার মতো। ফল থেকে আয় এসেছে প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো। এটি শীত মৌসুমের ফসল। মাত্র ৩ মাসেই এর ফলন পাওয়া যায়। জুড়ী উপজেলার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এখানে এর ভালো ফলন হচ্ছে। এই তরমুজ চাষে নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ারও সুযোগ আছে।
তিনি আরও বলেন, যারা বেকার রয়েছেন তারা এই ফল চাষ করে তাদের বেকারত্ব দূর করতে পারেন। মাত্র ৩ মাস সময় সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে ১ বিঘা জমিতে ৫ লাখ টাকার মতো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমি এই ফল চাষ করি আমার পারিবারিক চাহিদার জন্য। ফলন হবার পর এর চাহিদা ব্যাপক বেড়ে যায়। যার জন্য অনেককেই ফলটি দেওয়া যায়নি। তবে তিনি আগামীতে এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করবো।
জুড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. জসিম উদ্দিন বলেন, হলুদ তরমুজ উচ্চমূল্যের ফসল। এটি হাইব্রিড জাতীয়। উৎপাদন ব্যবস্থা দেশি তরমুজের মত। হলুদ তরমুজে পুষ্টি উপাদান বেশি। এটির ভিতরটা কম্প্রেসড বা ঠাসা থাকে। এটিতে ভিটামিন এ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ফলটি অনেক মিষ্টি। জুড়ীর মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় ফলটি চাষের সম্ভাবনা অনেক। আগামীতে হলুদ তরমুজ চাষ সম্প্রসারণে কাজ করবে
মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী বলেন, ফলটি ভিন্ন কালারের হওয়ায় দেখতে আকর্ষণ করে। স্বাদে খুবই মিষ্টি। দেখলেই খেতে ইচ্ছে করে। উচ্চফলনশীল এ হলুদ তরমুজে ভিটামিন এ ও সি রয়েছে।