স্বাধীনতার ৪ যুগেও পূর্ণাঙ্গ হয়নি তেলিয়াপাড়া রেলস্টেশন

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মার্চ ১২ ২০২০, ২১:২৭

শেখ জাহান রনি, মাধবপুর প্রতিনিধি (হবিগঞ্জ):

হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের অবহেলিত একটি রেলওয়ে স্টেশনের নাম তেলিয়াপাড়া।

এই তেলিয়াপাড়া স্থান থেকেই ১৯৭১ সালে সংগঠিত প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু হয়। শুধুমাত্র রেলপথ ও সড়কপথ নিকটবর্তী হওয়ায় নিরাপত্তার স্বার্থে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণ তেলিয়াপাড়ায় না হয়ে মেহেরপুরের (মুজিবনগর) বৈদ্যনাথতলায় আম্রকাননে হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৯ মাসের পুরোটা সময় জুড়ে তেলিয়াপাড়ায় হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ। স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর একটি এই তেলিয়াপাড়া। কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর‌ও দেশের সবচেয়ে অবহেলিত এলাকা এই তেলিয়াপাড়া।

আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এনামুল হক মোস্তাফা শহীদ ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এম এস কিবরিয়া প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তেলিয়াপাড়া রেলওয়ে স্টেশনটিকে বি ক্লাস স্টেশনে উন্নিত করা হবে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি আজও বাস্তবায়ন হয়নি।

বর্তমানে সিলেট-আখাউড়া রেললাইনের মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়ায় শত বছরের স্টেশন মাস্টারের ঘরটি দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। রেলওয়ের কিছু অসাধু কর্মচারী মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দিয়েছে স্টেশন মাস্টারের অফিসটি। ফলে শত শত যাত্রীকে বিনা টিকিটে চরম দূর্ভোগের মধ্য দিয়ে এ স্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে হচ্ছে। রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে স্টেশনের মালামাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

বিভিন্ন সময় মন্ত্রী, এমপিরা এ স্টেশনকে বি-ক্লাসে উন্নিত করার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবায়ন করেনি কেউই।

প্রায় শত বছর পূর্বে এ স্টেশনটি তৈরী করা হলেও আধূনিকতার ছোঁয়া আজও লাগেনি। স্টেশনটিকে বি-ক্লাসে উন্নতি করলে উপজেলার ২৭টি গ্রামের জনসাধারণ ও তেলিয়াপাড়া, সুরমা চা বাগানসহ ২২টি চা-বাগানের শত শত যাত্রীরা এই স্টেশন দিয়েই ঢাকা-সিলেট-চট্রগ্রাম রেলপথে যাতায়াত করতে পারবে।

স্টেশনটিতে যাত্রীদের জন্য কোন সুযোগ সুবিধা নেই। এমনকি এই স্টেশনটিতে একজন বুকিং মাস্টারও নেই। গেইটম্যান শুধু গেইট উঠানো-নামানোর কাজ করে। স্টেশনে মহিলাদের জন্য কোন শৌচাগার ও বিশ্রামাগার নেই। এককথায় তেলিয়াপাড়া রেলস্টেশনটি নামেই শুধু রেলস্টেশন এখন।

১৯৭১ সালে তেলিয়াপাড়ার গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। ঐতিহাসিক তেলিয়াপাড়া থেকেই ৪ঠা এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর বন্টন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এই স্থানটিকে দর্শনার্থীদের জন্য আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে রেল স্টেশনটি বি.ক্লাসে রূপান্তর করা জরুরী। এ বিষয়ে অত্র এলাকাবাসী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার ও বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মাহবুব আলী এমপির সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।