সোহরাওয়ার্দীতে জনসভা করতে চায় ঐক্যফ্রন্ট
একুশে জার্নাল
নভেম্বর ০২ ২০১৮, ১১:০৪
একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংলাপের পর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার কর্মসূচি দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
শুক্রবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আগামী ৬ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার কথা জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, আমরা এখনও সমাবেশের অনুমতি পাইনি। তবে অনুমতি চেয়ে চিঠি দিয়েছি। আশা করি অনুমতি পাব।
রিজভী বলেন, জনসভা সফল করতে ৩ নভেম্বর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টা পরিষদ, যুগ্ম মহাসচিব, সম্পাদকমণ্ডলী, সহযোগী সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ঢাকার সাবেক এমপিদের এক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, সংলাপে মানুষের মনে যে আশাবাদ জেগে উঠেছিল, সংলাপ শেষে সেই আশার মুকুল ঝরে যেতে শুরু করেছে। সংলাপ শেষে সাত দফা দাবির প্রতি সাড়া না দেয়ায় আওয়ামী অনড়তায় সুষ্ঠু নির্বাচনের অগ্রগতি তিমিরাচ্ছন্ন হল।
বিএনপির এ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সহিষ্ণুতার শিক্ষা কখনই গ্রহণ করেনি। ক্ষমতা-স্বার্থের লীলাধিপত্য বজায় রাখতে তারা জনগণকেই ভয় পাচ্ছে। জনগণের মুণ্ডুপাতই হচ্ছে তাদের গ্রহণযোগ্য নীতি।
তার মতে, রাষ্ট্রযন্ত্র হাতে থাকলে সব কিছুই করা যায়। ক্ষমতাসীনদের মামলাগুলো ঝরে যায় আর বিরোধীদের পুষে রাখা যায়।
রিজভী বলেন, হানাদারি দুঃশাসনে যাদের হাতে বন্দুক থাকে, তাদের সবাই ভয় পায়। প্রশাসন, বিচার বিভাগ, আইন-আদালত সবাই নতজানু রাষ্ট্রীয় বন্দুকধারীদের কাছে। সরকারের নির্দেশ ছাড়া কারোরই টু শব্দ করার জো নেই। বাংলাদেশে আইনের শাসন সীমাহীন দূরে নক্ষত্রমণ্ডলীতে অবস্থান করছে।
‘ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই গণবিচ্ছিন্ন পরনির্ভরশীল আওয়ামী সরকার জিয়া পরিবারকে ধ্বংসের যে মানচিত্র করেছে, সেই অঙ্কিত নকশানুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে,’ মন্তব্য এ বিএনপি নেতার।
তিনি বলেন, গুলশান কার্যালয়ে মায়ের ওপর ভয়াবহ জুলুম ও আক্রমণের বিভীষিকা দেখে কনিষ্ঠ সন্তান আরাফাত রহমান কোকো হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। শেখ হাসিনার আন্দোলনের ফসলদের উৎপীড়নের মাধ্যমে পঙ্গু করে দেয়ার পর এখনও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি বড় ছেলে তারেক রহমান।
‘এক ছেলের লাশ ও আরেক ছেলের গুরুতর শারীরিক নির্যাতনের ক্ষত বয়ে বেড়ানো দেখতে হয় মাকে। এর ওপর কেড়ে নেয়া হয় তার বাড়ি।’
তিনি বলেন, যতদিন পর্যন্ত একজন জাতীয়তাবাদী কর্মী জীবিত থাকবেন, ততদিন পর্যন্ত খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করা যাবে না।
‘অন্যায়-অবিচারে বন্দি খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা হবে আত্মঘাতী। দেশকে গণতন্ত্রমুখী করতে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। আর নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচন করা হবে মৃত্যুকূপে ঝাঁপ দেয়া।’
রিজভীর ভাষ্য, যে সরকার জনমতকে পাত্তা দেয় না, সেই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করা বোকার স্বর্গে বাস করা।
‘সরকার অনমনীয় মনোভাব দেখাতে থাকলে মাথা উঁচু করে সাত দফা দাবি রাজপথেই আদায় করতে হবে।দুর্জয় সাহস নিয়ে মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামবে।’
তিনি বলেন, সংলাপের জিগির তুলে একদিকে জনগণকে দেখাচ্ছে তারা কত আন্তরিক, অন্যদিকে সমানতালে নিষ্ঠুরতা ও পাশবিকতা অব্যাহত রেখেছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহদফতর সম্পাদক মুনীর হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবেদ রাজা প্রমুখ।