সিরাজগঞ্জ জাতীয় জুটমিলে আগুন
একুশে জার্নাল
জানুয়ারি ২৩ ২০১৯, ০৬:০০

পাটের বেলের কিছুটা ক্ষতি হলেও মিলের ভেতরের মেশিনপত্রের বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বা প্রাণহানির কোন ঘটনা ঘটেনি
সিরাজগঞ্জ জাতীয় জুটমিলস-এ (কওমী জুট মিলস) বুধবার (২৩ জানুয়ারি) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ভয়াবহ লাগা আগুন সাড়ে ৪ ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে এসেছে। সিরাজগঞ্জ দমকল বাহিনীর উপ-পরিচালক আব্দুল হামিদের নেতৃত্বে জেলা সদর ও আশেপাশের উপজেলার ৫টি ইউনিট দ্রুত এসে আগুন নেভান। তবে, আগুনে পুড়ে পাটের বেলের ক্ষয়ক্ষতি হলেও মিলের ভেতর উৎপাদনকৃত যন্ত্রপাতি বা শ্রমিকদের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
সদর থানার উপ-পরিদর্শক মোকাররম হোসেন বলেন, পাটের বেলের কিছুটা ক্ষতি হলেও মিলের ভেতরের মেশিনপত্রের বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বা প্রাণহানির কোন ঘটনা ঘটেনি।
মিলের প্রকল্প প্রধান আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘উৎপাদনকৃত পাটের বেল গোডাউনে রাখার পরও জায়গা না পেয়ে মিলের মধ্যে রাখা হয়েছে। আমরা সবসময়ই বিজেএমসিকে তাগিদ দিচ্ছি। কিন্তু তারা আমাদের কথা কর্ণপাত করছে না। আজ যদি তারা উৎপাদনকৃত পাটের বেল সময়মত ডেলিভারি নিতো, তাহলে এমন ক্ষতি হতো না।’
আগুন নেভানোর প্রক্রিয়ার শুরুতে মিলের ভেতরে রাখা অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রগুলোর কোনটিই তেমন কাজে না আসা প্রসঙ্গে প্রকল্প প্রধান আরো বলেন, ‘শুরুতে তারা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হওয়ায় সরকারী দমকল বাহিনী ও পুলিশকে খবর দেয়া হয়েছে।’
মিলের ভেতরে রাখা অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রগুলো সময়মত সঠিকভাবে কাজ না করা এবং নিজেদের দায়িত্বরত দমকল ইউনিটগুলো শুরুতে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। পরে সিরাজগঞ্জ জাতীয় জুট মিলস, শ্রমিক লীগের স্থানীয় সভাপতি আওরাঙ্গ আজিজ স্বপন দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন ।
আজিজ স্বপন বলেন, ‘গোডাউনে জায়গার সংকুলান না হওয়ায় প্রায় ১৫/১৬ হাজার বি-১২ পাটের বেলসহ প্রায় ৬০/৬৫ কোটি টাকার উৎপাদনকৃত পাটজাত পণ্য মিলের ভেতর যত্রতত্র রাখা আছে। বিজেএমসি এগুলো সময়মত সরবরাহ করতে পারলেও আজ এ ক্ষতি হতো না। মিলের ভেতরে উৎপাদনকৃত পাটের বেল মেশিনের পাশে স্তুপাকার করে রাখায় সবসময় ঝুঁকি রয়েছে। পাশাপাশি আমরাও সবসময় বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কায় ভয়ে থাকি। বিজেএমসির উদাসীনতার কারণে স্তুপাকার করে রাখা পাটের বেল সরবরাহ করা হচ্ছে না, অন্যদিকে নতুন উৎপাদনও থমকে গেছে।
অগ্নিকাণ্ডে মেকানিক্যাল ইউনিটের সামনে স্তুপাকার করে রাখা প্রায় দু’শতাধিক চটের বেল আংশিক ও পুরোপুরি পুড়ে গেছে। তবে আগুনের সূত্রপাত বা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি। যদিও, কর্তৃপক্ষের ধারণা বিদ্যুতের শটসার্কিট থেকেই আগুন লাগে। দমকল বাহিনীর লোকজনের ধারনা, দীর্ঘদিনের উৎপাদনজাত পাটজাতপন্য বা বেল গোডাউনে না রেখে সেসব মিলের ভেতর যত্রতত্র স্তুপাকার করে রাখায় আগুনের ক্ষয়ক্ষতি ও ভয়াবহতা দু’টোই বেড়েছে।