সাতক্ষীরা জেলাব্যাপী ভ্রাম্যমাণ বাজার চালু

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

এপ্রিল ২১ ২০২০, ১৯:৫২

রেজওয়ান উল্লাহ,কলারোয়া(সাতক্ষীরা); করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে প্রশাসনের নির্দেশনায় জেলার সকল হাট-বাজার স্থানীয় মাঠ বা খোলা জায়গায় স্থানান্তর করা হয়েছে। একই সাথে সাধারণ মানুষকে বাড়িতে থাকতে উৎসাহ দিতে এবং মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সাতক্ষীরা শহরসহ প্রত্যেকটি পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ বাজার চালু করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গত ১২ এপ্রিল থেকে এই ভ্রাম্যমাণ বাজার চালু হলেও বর্তমানে প্রতিটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে এই কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

সূত্র জানায়, করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সংকটকালীন সময়ে বাজারে জনসমাগম কমাতে জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে ভ্রাম্যমাণ বাজারের কার্যক্রম শুরু হয়। শহরের সিটি কলেজ মোড় হয়ে খুলনা মোড়, সংগীতার মোড়, ইটাগাছা মোড়, রাজ্জাক পার্ক, পুরাতন সাতক্ষীরাসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে অবস্থান করে এই বাজার।

এই বাজারে চাল, ডাল, আলু, পিয়াজ, তেল, মরিচসহ সকল স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত সবজি সুলভ মূল্যে পাওয়া যায়। নো প্রফিট নো লস ধারণাকে সামনে নিয়ে বাজার থেকে কেনা মূল্যে বিক্রয় করা হয় এ সকল পণ্য।

এই উদ্যোগকে মডেল বিবেচনায় জেলার সকল উপজেলা, পৌরসভা ভ্রাম্যমাণ বাজার চালু করেছে। এছাড়াও সাতক্ষীরা শহরের বড় বাজারের কাঁচা বাজার অংশকে স্থানীয় পিটিআই মাঠে স্থানান্তর করা হয়েছে।

প্রতিটি দোকানের চারিদিকে চুন দিয়ে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে এবং ৩ ফুট দূরত্বে গোলাকার চিহ্নের মাধ্যমে সামাজিক দূরত্ব নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

সূত্র আরও জানায়, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে পাঁচটি করে ভ্রাম্যমাণ বাজার চালু করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশনায় এ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাছখোলা ও ব্রহ্মরাজপুর বাজারকে স্থানীয় স্কুল মাঠে স্থানান্তর করা হয়েছে।

তালা উপজেলায় ২৫টি বাজারকে স্থানীয় মাঠে স্থানান্তর করা হয়েছে। এছড়াও, প্রতিটি ইউনিয়নে ভ্রাম্যমাণ বাজার চালু করা হয়েছে।

কালীগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ভ্রাম্যমাণ বাজার চালু করা হয়েছে। এছাড়া ফেসবুকভিত্তিক কালিগঞ্জ অনলাইন ফ্রেশ মিট এন্ড ফিস মার্কেট চালু করা হয়েছে। উপজেলার প্রতিটি দোকানকে ফেসবুকভিত্তিক এফ কমার্স সুবিধা চালু করার জন্য উৎসাহিত করা হয়েছে। কালীগঞ্জের স্থানীয় প্রোডাক্ট দুধ ডিম কাঁচা সবজি ইত্যাদি উৎপাদন ও বিক্রি সচল রাখতে কালিগঞ্জ অনলাইন শপ পেজের মাধ্যমে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার ব্যবস্থাপনায় ফোনে ও ফেসবুকে অর্ডার নিয়ে ১০৫টি ভ্যান এর মাধ্যমে বিভিন্ন পণ্য মানুষের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।

দেবহাটা উপজেলায় সাতটি বড়বাজারকে স্থানীয় খোলা জায়গায় স্থানান্তর করা হয়েছে। প্রতিটি দোকানের সামনে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং রং বা চুনের মাধ্যমে ক্রেতাকে দাঁড়ানোর জন্য গোলাকার চিহ্ন করা হয়েছে। এছাড়াও দেবহাটা উপজেলার সবকটি ইউনিয়নে ভ্রাম্যমাণ বাজার চালু করা হয়েছে।

আশাশুনি উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে ভ্রাম্যমাণ বাজার চালু করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলায় কর্মরত কর্মকর্তাদের থেকে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করার মাধ্যমে প্রতিটি বাজার মনিটরিং করছেন।

শ্যামনগর উপজেলায় সবকয়টি বাজারকে স্থানীয় খোলা স্থানে স্থানান্তর করা হয়েছে এবং প্রতিটি ইউনিয়নে পাঁচটি করে ভ্রাম্যমাণ বাজার চালু করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিষয়টি তদারকি করছেন।

এমনিভাবে সাতক্ষীরার সকল প্রান্তের মানুষের দোড়গোড়ায় বাজার সেবা পৌঁছে দিতে কাজ করছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে বাড়িতে অবস্থানের বিকল্প নেই। তাই মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে ভ্রাম্যমাণ বাজার চালু করা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় হাট-বাজার সুবিধাজনক স্থানে স্থানান্তর করে বাজারে জনসমাগম কমানো ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।