গাজী আব্দুর রহমান, সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নুরনগর ইউনিয়ন সহ আসেপাশের ৪ ইউনিয়নের ২২ গ্রামের সুপেয় ও নিরাপদ পানির একমাত্র অবলম্বন হরিনাগাড়ী দিঘিটি সংরক্ষণের দাবী করেছে এলাকাবাসী।

হরিনাগাড়ী গ্রামের সৌদী প্রবাসী আলহাজ্ব হাফেজ মাওলানা জাহিদুল ইসলাম জানান, নুরনগর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল হরিনাগাড়ী গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে দিঘিটি কয়েকযুগ ধরে ২২ গ্রামের মানুষের সুপেয় ও নিরাপদ পানির আধার হিসেবে পরিচিত। প্রায় ৫ বিঘা জমি পরিসরে দিঘিটির চতুর দিকে অরক্ষিত থাকায় গরু,ছাগল হাঁস মুরগি ও মানুষের অবাধে বিচরণে প্রতি বছরে পানি দূষিত হয়। দূষিত পানি পান করে অনেকের পানি বাহিত রোগ সহ নানান পীড়ায় আক্রান্ত হয়। সচেতন এলাকাবাসী বর্ষা মৌসূমের পূর্বেই দিঘিটি সংরক্ষণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এলাকার অধিকাংশ জনগণ দিনমজুর তথা গরীব হওয়ায় দিঘিটি পাকা প্রাচীর বা কাঁটা তারের বেষ্টনী দিতে সরকারি বে-সরকারি সহয়তা চেয়েছেন।

দিঘির পাড়ে ৩টি পানির ফিল্টার থেকে প্রত্যহ দূরদূরান্ত হতে কয়েক হাজার লোক পানি নিয়ে যান। বর্তমানে ১টি ফিল্টার সংস্কারের অভাবে অকেজো রয়েছে। কয়েক মাইল দূর থেকে শিশু, বয়স্ক নারী ,পুরুষ অতিকষ্টে পানি নিতে আসেন। কাচা রাস্তা ও সেতুর যোগাযোগ ভাল না হওয়ায় পানি নিয়ে যেতে হিমশিম খেতে হয় সকলকেই। শুষ্ক মৌসূমে সাইকেল, মটর সাইকেল, মটর ভ্যান, ইঞ্জিন ভ্যান ও ইজিবাইক যোগে পানি নিয়ে যাওয়া হয়। শ্যামনগর সদরের চিংড়াখালী, রমজাননগর ইউনিয়নের রমজাননগর, শেখপাড়া, ঢালীপাড়া, বৈদ্যপাড়া, ভৈরবনগর, সোরা, চাঁদপুর, নূরনগরের সৈয়েদালীপুর, লক্ষীনাথপুর, শ্রীকৃষ্ণপুর, হরিপুর, হাবিবপুর, মানিকপুর, ভবানীপুর ও কৈখালী ইউনিয়নের পরানপুর, মির্জাপুর, আজাদনগর, মিন্দীনগর, কারিগারপাড়া, চৌকিদারপাড়া, গাজীপাড়া সহ ৪টি ইউনিয়নের প্রায় ২২ গ্রাম/ পাড়ার মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল হরিনাগাড়ী দিঘির এই পানি।

হরিনাগাড়ী দিঘির পানি বিশুদ্ধ রাখতে পরিচালনা কমিটি গঠিত হয়েছে। মুসলমান ও হিন্দু বেষ্টিত এলাকা হওয়ায় মিলবন্ধনে জনসম্মূখে সকলের মতামতের ভিত্তিতে পরিচালনা কমিটি গঠিত হয়। কমিটির উপদেষ্টারা হলেন-হাবিবুর রহমান, জালাল উদ্দীন গাজী, আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম, নিমাই মন্ডল, শিবপদ মন্ডল ও ভোলা নাথ মন্ডল,সেক্রেটারী আলমগীর হোসেন,ক্যাশিয়ার আলহাজ্ব হাফেজ মাওঃ জাহিদুল ইসলাম , সহকারি ক্যাশিয়ার বিশ্বজিৎ রপ্তান, সদস্যরা হলেন-আবুল কাশেম, মোবারক করিম, লিটন, রেজাউল করিম, কিরণ পরা মানিক, গৌরপদ মন্ডল, নিরাঞ্জন গাইন ও পবিত্র মন্ডল।

এ কমিটি দিঘিটির পানি যথাযথ সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণে যথাযথ দায়িত্ব পালনে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সরকারি ও বে-সরকারি সংস্থা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, শ্যামনগর উপজেলা প্রশাসন ও সাতক্ষিরা ৪ আসনের মাননীয় সংসদ এস এম জগলুল হায়দার এর বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করে দিঘিটি যাতে পাকা প্রাচীর বা কাঁটা তারের বেষ্টনী, পানির ফিল্টার বাড়ানো, যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নতি, সেতু বা পুল সংস্কার ও পাকা ব্রিজের নির্মান হয় সেই দাবী জানান এলাকবাসী।