সাতক্ষীরায় কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো হচ্ছে অপরিপক্ক আম

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মে ১২ ২০২০, ১১:৫১

রেজওয়ান উল্লাহ, কলারোয়া (সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি:

সাতক্ষীরায় জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়ের আগেই গাছ থেকে পাড়া হচ্ছে অপরিপক্ক কাচা আম। অপরিপক্ক এ আমে রাসায়নিক কেমিক্যাল স্প্রে করে টকটকে রং তৈরি করা হচ্ছে। কৃত্রিম ভাবে আম পাকানোর জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে বিষাক্ত কারবাইড।

আর অসাধু ব্যাবসায়ীরা বাড়তি লাভের জন্য সাতক্ষীরা থেকে প্রতিদিন ট্রাক ট্রাক এই অপরিপক্ক বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশ্রিত আম সরবরাহ করাছে ঢাকা, চিটাগং সহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

জেলার কয়েক জন আম ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায়, এবছর করোনা ভাইরাসের কারণে বিদেশে আম রফতানির করা অসম্ভব হওয়ায় ব্যবসায়ীরা হতাশ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালীগঞ্জের এক আম ব্যবসায়ী বলেন সাতক্ষীরার অপরিপক্ক আম ঢাকার বাজার গুলোতে বৈশাখী আমের নামে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।

রমজানে দেশ ব্যাপি পাকা আমের চাহিদা রয়েছে, দামও বেশি। এছাড়া সাতক্ষীরার আমের সুখ্যাতি থাকায় ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন বাজারে আগেভাগে পাঠানো হচ্ছে।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যে অনুযায়ী জেলায় আমচাষির সংখ্যা ১৩ হাজার ১০০জন। চলতি মৌসুমে জেলার ৫ হাজার ২৯৯টি বাগানে ৪ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। এরমধ্যে হিমসাগর ১৫৫০ হেক্টর, ন্যাংড়া ৫৬৪ হেক্টর, আম্রপালি ৮৯৯ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। বাকি জমিতে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, লতাসহ দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির আম রয়েছে। এ মৌসুমে জেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ হাজার মেট্রিকটন।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নূরুল ইসলাম বলেন, আগামী ৩১ মে থেকে হিমসাগর, ৭ জুন ন্যাংড়া ও ১৫ জুন থেকে আম্রপালি আম ভাঙা ও বাজারজাতকরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর আগে যদি কোনো বাগানের আম পরিপক্ক হয় তবে সেটি কৃষি কর্মকর্তাদের জানালে তারা ব্যবস্থা নেবেন।

তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরায় আমের ফলন কম হয়েছে। এরই মধ্যে কলারোয়া উপজেলায় অসাধু কিছু ব্যবসায়ী অপরিপক্ক আমে কেমিক্যাল মিশিয়ে বাজারজাতকরণের চেষ্টা করেছে।কলারোয়া প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা সেগুলো আটক করে বিনষ্ট করেছি ও ব্যবসায়ীদের আর্থিক জরিমানা সহ সতর্ক করেছি।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে সতর্ক ও মাঠে রয়েছেন। নির্ধারিত দিনক্ষণের আগে গাছ থেকে অপরিপক্ক আম ভাঙা ও বাজারজাত করা যাবে না।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেছেন, সাতক্ষীরায় নিরাপদ আম বাজারজাতকরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

সাতক্ষীরার আমের সুনাম রয়েছে। এই সুনাম ও ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। নির্ধারিত দিনের আগে গাছ থেকে আম ভাঙা যাবে না মর্মে আম ব্যবসায়ী ও চাষিদের সতর্ক করা হয়েছে।

এছাড়া অপরিপক্ক আম ক্যামিকেল মিশিয়ে বাজারকরণের চেষ্টা করলেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।