সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
একুশে জার্নাল
আগস্ট ০৬ ২০১৮, ১৭:০৪
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে রাজধানীর জিগাতলা ও সায়েন্স ল্যাব মোড়ে গত শনি ও রোববার সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন সাংবাদিকরা। আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের সার্ক ফোয়ারায় অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে প্রায় ২০০ সাংবাদিক অংশ নেন।
এ সময় তাঁরা পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
মানববন্ধনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের কোষাধ্যক্ষ দীপ আজাদ বলেন, গত কয়েকদিনের আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় ১২ জন সাংবাদিককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। আমরা এসব ঘটনায় দায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
মানববন্ধনে একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক শাকিল বলেন, বিশ্বের কোথাও যুদ্ধের ময়দানেও সাংবাদিকদের ওপর হামলা হয় না। কিন্তু ব্যতিক্রম বাংলাদেশ। এখানে যেকোনো পরিস্থিতিতে হামলার শিকার হয় সাংবাদিকরা। কিন্তু বারবারই এসব হামলাকারীরা পার পেয়ে যায়। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, অতি দ্রুত সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ আইন করা হোক। যাতে আর কেউ সাংবাদিকদের ওপর হামলার সাহস না করে। আর কখনো কেউ সাংবাদিকেদের ওপর হামলা করলে পুলিশ যেন নিজে বাদী হয়ে এর বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে সেই বিধান রাখতে হবে।
উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি ঢাবি সাংবাদিক সমিতির
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব, ধানমন্ডি ও ঝিগাতলা এলাকায় সাংবাদিকদের ওপর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বর্বর হামলা এবং দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদানের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা)। পাশাপাশি এ ন্যাক্কারজনক হামলার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছে দেশের ক্যাম্পাস সাংবাদিকতার ঐতিহাসিক এ সংগঠনটি। সোমবার ডুজা’র সভাপতি আসিফ ত্বাসীন এবং সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের সংবাদ ও ছবি সংগ্রহ করতে গিয়ে তিন দিনে ক্ষমতাসীন দল ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের হামলায় অন্তত ৩০ জন সংবাদকর্মী আহত ও হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সাংবাদিকদের ক্যামেরা ও মুঠোফোন ভেঙে ফেলা হয়েছে, মেমোরি কার্ড কেড়ে নেওয়া হয়েছে, ছবি মুছে ফেলতে বাধ্য করা হয়েছে। বাধা এসেছে টেলিভিশনের সরাসরি সম্প্রচারে। সাংবাদিকদের পরিচয়পত্র খুঁজে খুঁজেও হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকেও গণমাধ্যমকর্মীদের হয়রানির ঘটনা ঘটেছে। যা একটি শান্তিপূর্ণ ও স্বতস্ফূর্ত আন্দোলনকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা বলে মনে করি। এর মাধ্যমে একটি কুচক্রী মহল গণমাধ্যমকর্মীদের আন্দোলনকারীদের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানোর প্রচেষ্টায় লিপ্ত ছিল। এছাড়া সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে গণমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতা হ্রাস করারও একটি হীন প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা গেছে। যা পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরনের গুজব তৈরির পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে।
এর আগে গত ২ আগস্ট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত এক সাংবাদিককে জবাই করে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন এক ছাত্রলীগ নেতা। গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তাঁরা মনে করছেন, এতে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে কোনো ভালো উদাহরণ সৃষ্টি করছে না।
বিবৃতিতে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে সংযত ও দায়িত্বশীল আচরণের জন্য সব পক্ষকে আহ্বান জানিয়ে সাংবাদিক নেতারা বলেন, আমরা সাংবাদিকতার উপযুক্ত পরিবেশ, তথ্যের অবাধ নিশ্চয়তা এবং প্রকৃত সত্যের উšে§াচন চাই। সেটি নিশ্চিত করতে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের ওপর সংঘটিত উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলার দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে। যেকোনো ধরনের গুজব তৈরির ক্ষেত্র বন্ধে গণমাধ্যমের কাজের স্বাধীন পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ ক্যাম্পাস জার্নালিস্টস’ ফেডারেশন-এর নিন্দা: নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের দ্বারা সাংবাদিকদের ওপর হামলা পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকেও গণমাধ্যমকর্মীদের হয়রানির ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্যাম্পাস জার্নালিস্টস’ ফেডারেশন (বিসিজিএফ)। সোমবার দুপুরে ফেডারেশনের আহবায়ক আসিফ ত্বাসীন ও সদস্য সচিব মাহমুদুল হাসান নয়ন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব, ধানমন্ডি ও ঝিগাতলা এলাকায় সংবাদ ও ছবি সংগ্রহ করতে গিয়ে গত তিন দিনে ক্ষমতাসীন দল ও এর সহযোগী সংগঠনসমূহের নেতা-কর্মীদের হামলায় অন্তত ৩০ জন সংবাদকর্মী আহত ও হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সাংবাদিকদের ওপর এ হামলা যৌক্তিক, শান্তিপূর্ণ ও স্বতস্ফূর্ত আন্দোলনকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা বলে তারা মনে করেন। বিবৃতিতে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।