সহশিক্ষার পরিবর্তে সমান্তরাল শিক্ষা চাই

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জানুয়ারি ১৩ ২০১৯, ১৩:১৭

মনোয়ার শামসী সাখাওয়াত: স্কুল কলেজে ছেলে ও মেয়েদের একসঙ্গে লেখাপড়া অর্থাৎ সহশিক্ষা কি একান্তই অপরিহার্য? এই আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতির পেছনে যুক্তিটা কি? যুক্তিটা হল ছেলে-মেয়ে একসঙ্গে লেখাপড়া করলে তাদেরকে জেন্ডার নিরপেক্ষ ভাবে মানব সন্তান হিশেবে মেলামেশার মধ্য দিয়ে বিকশিত হবার সুযোগ করে দেয়া যায়। কথাটা শুনতে বেশ ভালোই লাগে। মনে হয় আহা কি সুন্দর কথা — ছেলে-মেয়েরা পরস্পর মেলামেশা করবে, মিথষ্ক্রিয়া করবে, একে অপরকে ছেলে বা মেয়ে হিশেবে নয়, মানুষ হিশেবে জানবে, বুঝবে এবং ট্রিট করবে — সমাজে জেন্ডার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠিত হবে। আহা কতই না ভাল কথা!

কিন্তু এটাই কি একমাত্র বা শেষ কথা? ছেলে-মেয়েরা যখন বয়োঃসন্ধিকালে একে অপরের কাছাকাছি আসবার সুযোগ পায় তখন তাদের পক্ষে জৈবিক, মনোদৈহিক বা নাফসের চাপ সামলানো যে কত কঠিন হয়ে যায়। এসবের পরিণতি নিয়ে কি এইসব আধুনিক সহশিক্ষার প্রবর্তক ও অনুসারীরা যথেষ্ট ভেবেছেন? না, যথেষ্ট ভাবেননি।

আর যথেষ্ট ভাবেননি বলেই আজকাল আধুনিক সহশিক্ষার অঙ্গনে যে মনোদৈহিক অবক্ষয় ও অসুস্থ পরিবেশ তৈরি হয়েছে তা সমাজের সুস্থ চিন্তার মানুষদেরকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। কাজেই আধুনিক পাশ্চাত্য সহশিক্ষার অনুকরণ না করে আমাদেরকে আমাদের ধর্মীয়, নৈতিক ও সামাজিক মূল্যবোধের আলোকে সহশিক্ষার পরিবর্তে সমান্তরাল শিক্ষা নিয়ে রিথিংক করতে হবে।

ছেলে ও মেয়েদের সমান ও পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থাই হল এই সমান্তরাল শিক্ষা। ভাল মন্দের তুলনামূলক বিচারে আমাদের সমাজের জন্য এই ব্যবস্থাই বেশি উপকারি বলে বিবেচিত হতে পারে। যা কিছু আধুনিক তা-ই ভাল এবং মান্য — এটা আসলে একধরণের নিম্ন মানের অনুকারক মনোবৃত্তি।

আমাদের বিভিন্ন বিকল্প ঐতিহ্য ও সূত্র থেকে গ্রহণ-বর্জনের মাধ্যমে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। কোনটি উদার আর কোনটি রক্ষণশীল সেই বিবেচনার চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ হল কোনটি আমাদের জন্য লাগসই, কার্যকরী, উপকারি ও টেকসই সেই বিবেচনাটি।