সরকারী ব্রিজ দুই পরিবারের দখলে: ৩০ হাজার মানুষের জন্য বাঁশের সাঁকো

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

মে ৩০ ২০১৮, ১৬:৪৬

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার দল্টা বাজার এলাকায় একটি খালের ওপর সরকারি অর্থায়নে ব্রিজ নির্মিত হলেও, দুটি প্রভাবশালী পরিবারের কারণে ব্রিজটি ব্যবহার করতে পারছেন না চারটি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। ফলে নিরুপায় হয়ে ব্রিজটির পাশেই বাঁশের সাঁকো তৈরি করে যাতায়াত করছেন স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন সুরাহা হয়নি। বরং স্থানীদের উল্টো হামলা-মামলার হুমকি দিচ্ছেন স্থানীয় দুই পরিবার। জানা যায়, রামগঞ্জ উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের দল্টা বাজার এলাকায় অবস্থিত এ ব্রিজটি।

২০১২-১৩ অর্থ বছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক পাকা সেতু-কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে এ ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। মেসার্স শান্তা ট্রেডার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সরকারিভাবে ব্রিজটি নির্মাণ করে। ব্রিজ নির্মাণে ব্যয় হয় প্রায় ২০ লাখ টাকা।

দল্টা, জাফরনগর ও মানিকপুরসহ ৪ গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবির পর এ ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের কিছুদিন পর স্থানীয় প্রভাবশালী মনির হোসেন ও হুমায়ুন কবির জোর করে ব্রিজের উত্তর পাশে বাড়ির গেইট করে মানুষের যাতায়াত বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে এ ব্রিজের ওপর দিয়ে সাধারণ মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

শুধুমাত্র ওই পরিবারটিই ভোগ করছেন এ ব্রিজটি। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে এলাকাবাসী। পরে স্থানীয়রা বাধ্য হয়ে ব্রিজের পাশ দিয়ে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে। সাঁকো পারাপার হতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার স্বীকার হতে হচ্ছে স্কুলের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের।

এতে করে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। দ্রুত ব্রিজটি খুলে দিয়ে এ চারটি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষের চলাচল ব্যবস্থা করার দাবি জানান এলাকাবাসী। স্থানীয়দের অভিযোগ, চার গ্রামের ৩০ হাজার মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য সরকার এ ব্রিজটি নির্মাণ করে। কিন্তু মানুষের চলাচলের পথ বন্ধ করে দেয় স্থানীয় প্রভাবশালী মনির হোসেন ও হুমায়ুন কবির।

এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে মামলা-হামলাসহ নানান ধরনের ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকি দেয় তারা। তাদের ভয়ে এলাকার কোনো মানুষ মুখ খুলতে সাহস পায় না বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়। এ নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোনো লাভ হয়নি।

উল্টো হয়রানির শিকার হতে হয়। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হুমায়ুন কবির জানান, এই ব্রিজটির আমাদের কোনো প্রয়োজন ছিলো না। আমাদের জায়গার ওপর দিয়ে ব্রিজটি করায় এটি এখন আমাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ভাটরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল জানান, সরকারিভাবে ব্রিজটি করা হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তারা গেট নির্মাণ করে ব্রিজটি বন্ধ করে দিয়েছে। সাধারণ মানুষ যেন চলাচল করতে পারে, সে চেষ্টা এখনও অব্যাহত রয়েছে বলে জানান এ জনপ্রতিনিধি। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগের (এলজিইডির) নির্বাহী প্রকৌশলী এ.কে.এম. রশিদ আহম্মদ কোনো কথা বলতে রাজি হয়নি।