শ্রীমঙ্গলে পাহাড়ের চূড়ায় তুর্কি স্থাপত্যের আদলে দৃষ্টিনন্দন মসজিদ

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

অক্টোবর ২৪ ২০১৯, ২২:১২

এহসান বিন মুজাহির: চায়ের রাজধানী হিসেবে খ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলা অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা। আকাশছোঁয়া পাহাড় আর ঢেউ খেলানো সবুজ চা-বাগানের অপরূপ দৃশ্য দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান। এখানকার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছে পাহাড়ের চ‚ড়ায় নির্মিত নয়নাভিরাম মসজিদ ‘জান্নাতুল ফেরদৌস’।

জান্নাতুল ফেরদৌস নামে পরিচিত মসজিদটির মূল নাম হচ্ছে ‘মসজিদুল আউলিয়া খাজা শাহ মোজাম্মেল হক (রহ.)।’ পাহাড়ের ওপরে তুর্কি নকশায় নির্মিত দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদটি দেখতে এবং নামাজ আদায় করতে প্রতিদিনই পর্যটকদের সমাগম থাকে।

শ্রীমঙ্গল শহর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে বালিশিরা পাহাড়ের মহাজিরাবাদ এলাকায় এ মসজিদটির অবস্থান। সমতল ভ‚মি থেকে ৭০-৮০ ফুট ওপরে পাহাড়ের চ‚ড়ায় স্থাপিত মসজিদটিতে যেতে হয় ১৩৯টি সিঁড়ি পেরিয়ে। ১৯ বিঘা জমির ওপর নির্মিত মসজিদের চারদিকেই রয়েছে সবুজ পাহাড়। আর এসব পাহাড়ে রয়েছে চোখ জুড়ানো সবুজের সমাহার। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে রয়েছে সবুজ চা বাগানও। আরও রয়েছে লেবু ও আনারসের বাগান।

মসজিদের সৌন্দর্যবর্ধনে চারপাশে লাগানো হয়েছে নানা রকমের ফুলগাছ। এতে নৈসর্গিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন আগত মুসল্লিরা। মসজিদটির গঠন শৈলীও চমৎকার। তুর্কি স্থাপত্যের আদলে নির্মিত মসজিদটির ভেতরে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন এক ঝাড়বাতি, যা আনা হয় সুদূর চীন থেকে। মসজিদে প্রবেশের সিঁড়িগুলোর দুই পাশে সাদা আর মধ্যে দেওয়া হয়েছে লাল রঙ। সবুজ প্রকৃতির সঙ্গে মিলিয়ে সাদা আর লাল রঙের মিশ্রণ রয়েছে। দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদটির ভেতরে একসঙ্গে আটশ মুসল্লির নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। বর্তমানে এ মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাওলানা মো. মুসলেহ উদ্দিন।

মসজিদের পাশেই রাখা হয়েছে কবরস্থানের জায়গা। মসজিদটির প্রাঙ্গণে আছে দুটি গেস্ট হাউস এবং একটি চিকিৎসা কেন্দ্র। এই চিকিৎসাকেন্দ্রে সপ্তাহের ছয় দিন গরিব মানুষদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়। এ ছাড়া এখানে আছে একটা হেলিপ্যাডও। দর্শনীয় এ মসজিদটি নির্মাণ করেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত আধ্যাত্মিক সুফি সাধক খাজা ইউনুছ আলী এনায়েতপুরীর (রহ.) উত্তরসূরি খাজা শাহ মোজাম্মেল হক (রহ.) এর সন্তান খাজা টিপু সুলতান। মসজিদটি পরিচালিত হচ্ছে খাজা মোজাম্মেল হক (রহ.) ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে। ২০১৫ সালের ৬ মার্চ মসজিদটি উদ্বোধন করা হয়।

লেখক : সাংবাদিক-কলামিস্ট ও শিক্ষক