শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করুন: আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী
একুশে জার্নাল
এপ্রিল ৩০ ২০১৮, ১৪:৩৭
একুশে জার্নাল ডেস্ক:সর্ববৃহৎ অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ও হাটহাজারী মাদরাসার সহযোগী পরিচালক শাইখুল হাদীস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, আল্লাহ তায়ালার নিকট একমাত্র মনোনিত শাশ্বত ধর্ম ইসলাম৷পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা ইসলামই কেবলমাত্র শ্রমিকের ন্যায়্য অধিকার দিয়েছে৷ ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি৷ সুতরাং শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করুন৷
মে দিবস উপলক্ষে সংবাদ মাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন আল্লামা বাবুনগরী৷
আল্লামা বাবুনগরী বলেন, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘাম শুকানোর পূর্বেই শ্রমিকদের মজুরি আদায়ের আদেশ দিয়েছেন। মালিক যা খাবেন-পরবেন শ্রমিকদেরও তা খেতে পরতে দিতে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্দেশ দিয়েছেন। শান্তির ধর্ম ইসলাম এই বিধানের মাধ্যমে শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেছে৷ মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবাগণ শ্রমিক-কর্মচারীদের অধিকার আদায়ে এ দুনিয়ায় আদর্শ স্থাপন করে গেছেন।
তিনি বলেন, শ্রমিক মেহনতি মানুষের প্রচেষ্টা-ই বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। রাষ্ট্রের চালিকা শক্তি শ্রমজীবী মানুষ আজ শোষিত-বঞ্চিত ও পদদলিত৷পুঁজিবাদিরা শ্রমিকদের অর্থ আত্মসাৎ করে কোটিপতি হলেও শ্রমিকরা ঠিকমত খেতে পারছে না।
তিনি আরো বলেন, প্রচলিত শাসন ব্যবস্থায় শ্রমিকরা সবচে বেশী জুলুম নির্যাতনের শিকার। কিন্তু ইসলাম বিজয়ী থাকলে শ্রমিকরা এহেন হয়রানীর শিকার হতো না।
আল্লামা বাবুনগরী বলেন, ১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই প্যারিসে অনুষ্ঠিত শ্রমিক প্রতিনিধি সম্মেলনের গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে ১৮৯০ সালের ১লা মে থেকে শ্রমিক অধিকার দিবস তথা মহান মে দিবস বিশ্বব্যাপী উদযাপন শুরু হয়। মে দিবসে শ্রমিক সমাবেশ করে দুনিয়ার মজদুর একহও একহও বলে শ্লোগান দেয়া হয়৷ শ্রমিকের অধিকার আদায়ের কথা বলা হয়৷ কিন্তু মাস শেষে শ্রমিকদের পারিশ্রমিক পরিশোধ করা হয় না৷ শ্রমিকরা তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নামলে তাদের ওপর গুলি, হামলা-মামলা, ছাঁটাই ও বরখাস্ত করা হয়।
আল্লামা বাবুনগরী আরো বলেন, দেশের উৎপাদন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিতে শ্রমিকরা বড় হাতিয়ার হিসেবে কাজ করা সত্বেও যুগে যুগে শ্রমিকরাই সবচেয়ে বেশি শোষিত-বঞ্চিত ও নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছে৷ শ্রমিক নির্যাতন ও শোষণের ওপর দিয়েই গড়ে উঠেছে পুঁজির পাহাড়।
তিনি বলেন, শ্রমিকদের শোষণ করা মানে দেশকে এগুতে না দেয়া। শ্রমিকদের বাঁচিয়ে রাখতে না পারলে দেশের উন্নতি ও অগ্রগতি আশা করা যায় না। শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরী প্রদান, কাজ ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। তিনি সকলস্তরের শ্রমিকদের ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান।
আল্লাহ প্রদত্ত্ব ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রদর্শিত ব্যবস্থা ছাড়া নির্যাতিত নিপীড়িত শ্রমিক কর্মচারীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় উল্লেখ আল্লামা বাবুনগরী বলেন, শ্রমিক মেহনতি মানুষের মুক্তির জন্য ইসলামী শ্রমনীতি কায়েমের বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেই। অতএব ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ কায়েমের লক্ষ্যে ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করুন৷