শোকরানা মাহফিলে শাপলা চত্বর নিয়ে বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

নভেম্বর ০৫ ২০১৮, ১৪:১৪

 

হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর ও ঢাকা মহানগর সভাপতি আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেছেন, গতকাল রবিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হাইয়্যাতুল উলইয়্যার শোকরানা মাহফিলে ২০১৩ সালের ৫ই মে শাপলা চত্বরের হৃদয়বিদারক ঘটনা নিয়ে সত্যের পরিপন্থী কিছু বক্তব্য এসেছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক, অনাকাঙ্খিত ও সত্যের অপলাপ ছাড়া আর কিছু নয়। আজ (৫ নভেম্বর) সোমবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, শোকরিয়া মাহফিলের অনুষ্ঠানে একজন সরকারী কর্মকর্তা বলেছেন, “২০১৩ সালের ৫ই মে সম্পর্কে অনেক মিথ্যাচার করা হয়েছে। বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে এবং হচ্ছে। কেউ আজ পর্যন্ত হতাহতের সঠিক তালিকা দিতে পারেনি। ২/১ জনের নাম বলা হয়েছিল, আমরা ইনকোয়ারী করে দেখেছি, উনি বেঁচে আছেন, মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করে যাচ্ছেন। সব অপপ্রচারই ভুল ও মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে। তাই আমি বলব, এসব মিথ্যাচারে আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না। আমি মনে করি, যারা এসব মিথ্যাচার ছড়ায়, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত৷”

আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, ৫ই মে’র শাপলা চত্বর ট্রাজেডির বাস্তবতা ও সত্য ঘটনাবিরোধী এমন বক্তব্যের আমি তীব্র প্রতিবাদ করছি। সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে হাজার হাজার উলামায়ে কেরাম ও হেফাজত নেতৃবৃন্দের সমাবেশে এমন বক্তব্য তাদের সাথে তামাশার সামিল।
এমন বক্তব্যে দেশের আলেম সমাজ, হেফাজত কর্মী ও কোটি কোটি তাওহিদী জনতা মানসিকভাবে আঘাত পেয়েছেন।

আল্লামা কাসেমী আরো বলেন, ৫ই মে ঘুমন্ত, পরিশ্রান্ত ও অভুক্ত লাখ লাখ হেফাজত নেতাকর্মী ও আলেমের উপর শাপলা চত্বরে রাষ্ট্রীয় বাহিনী মারণাস্ত্র হাতে যেভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, টেলিভিশনের লাইভ সম্প্রচারে দেশবাসীর পাশাপাশি সমগ্র বিশ্ববাসীও দেখেছে।
সেদিন অসংখ্য হেফাজত কর্মী হতাহত হয়েছেন, তাজা রক্ত ঝরেছে, তার ভিডিও চিত্র ও অসংখ্য প্রমাণ এখনো বিদ্যমান আছে। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা নিহতদের তালিকাও প্রকাশ করেছে। দেশি-বিদেশী গণমাধ্যম এই নিয়ে অনেক তথ্যভিত্তিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এখনো স্বজনহারা পরিবারের কান্না থামেনি। পত্রিকায় প্রকাশিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া হিসাবে দেখা গেছে, ৫ই মে রাতে শাপলা চত্বরে দেড় লাখের অধিক গ্রেনেড, বুলেট, টিয়ার সেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর হেফাজত আমীর সরকারের প্রতি উদাত্ত আহবান জানিয়ে বলেন, শাপলা ট্রাজেডি নিয়ে বাস্তবতার বিপরীত এবং দেশের আলেম সমাজ ও তাওহিদী জনতার ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ে নুনের ছিটা দেওয়ার মতো বক্তব্য দিবেন না।

তিনি সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে বলেন, ২০১৩ সালের ৫ই মে শাপলা চত্বরে আলেমদের উপরে যে নিষ্ঠুরতা ও নির্মমতা চালানো হয়েছে, সেই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করে আহত ও নিহতদের ক্ষতিপুরণ দেবেন এবং দোষীদের শাস্তি দেবেন এবং হেফাজত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করবেন। আমরা তখন থেকেই এই দাবি জানিয়ে আসছি