শাহবাগে কোটা বিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল-গুলি
একুশে জার্নাল
এপ্রিল ০৮ ২০১৮, ১৫:৫৯
গতকাল রোববার চাকুরী ও শিক্ষা ক্ষেত্রে কোটা প্রথা বাতিলের দাবীতে শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ অবস্থান করেছে শিক্ষার্থীরা। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের আতর্কিত হামলা, গুলি,টিয়ারশেলের কারনে ছাত্ররা বেশী সময় থাকতে পারেনি। পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারশেলের গুলিতে একছাত্রের অবস্থা খুবই আশংকাজনক। ছাত্রটির এক চোখে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। তাছাড়া আরও অনেক ছাত্র আহত হয়ে হাসপাতালে।চিকিৎসাধীন আছেন।
বেলা আড়াইটায় পাবলিক লাইব্রেরির সামনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে হাজারো শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা সমাবেত হয়। এরপর সমাবেশস্থল থেকে মিছিল করে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন তারা।
এসময় শাহবাগ মোড়ে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ জলকামান নিয়ে ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়েছে।
কোটা পদ্ধতির সংস্কারের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন চলছে। ওই আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১৪ মার্চ ৫ দফা দাবি নিয়ে স্মারকলিপি দিতে সচিবালয়
অভিমুখে যেতে চাইলে পুলিশি ধরপাকড় ও আটকের শিকার হন আন্দোলনকারীরা।
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদে যুগ্ম আহ্বায়ক মো. উজ্জ্বল মিয়া সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “সংসদ অধিবেশন চলছে এখন, আমরা চাই এই অধিবেশন থেকেই ঘোষণা দেওয়া হোক কোটা পদ্ধতি সংস্কারের। যদি ঘোষণা না দেওয়া হয় তাহলে উঠবো না।”
এসময় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোজাম্মেল হক খানের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন আন্দোলনকারীরা।
উজ্জ্বল বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, কোটায় শূন্য থাকা সিটে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে, সেখানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, এক কোটার শূন্য আসন অন্য কোটা দিয়ে পূরণ করা হবে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।”
ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসান আল মামুন মিডিয়াকে বলেন, “সংসদে অধিবেশন চলছে, সংসদে যারা আছে তারা আমাদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত। আজকে আমরা দেখব, তারা জনগণের জন্য কী করে।
“সংসদে আমাদের পক্ষে সিদ্ধান্ত নিলে তবেই আমরা রাস্তা ছাড়ব। আমাদের আন্দোলন সম্পূর্ণ অহিংস, কেউ যদি আমাদের বুকে গুলিও চালায় আমরা কিছু করব না।”
বিকাল ৫টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা জোনের সহকারী উপকমিশনার (এডিসি) আজিমুল হক ‘জনদুর্ভোগ’ সৃষ্টি না করে সরে যেতে বললেও বিক্ষোভকারীরা অনড় থাকে।
এসময় বেশকয়েকজন হাতে গোলাপ নিয়ে পুলিশের দিকে এগিয়ে গেলে এক পর্যায়ে পুলিশ বাধ্য হয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহমেদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “বর্তমান কোটা ব্যবস্থা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী, মুক্তিযুদ্ধ করা হয়েছিল একটি বৈষম্যহীন দেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে। এ আন্দোলনের যৌক্তিকতা সেখানেই।”