শব্দের চেয়েও ১০ গুন বেশি গতির ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করলো রাশিয়া!
একুশে জার্নাল
এপ্রিল ১৭ ২০১৮, ০৭:৪১
পরাশক্তি হিসেবে নিজের ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য নিত্যনতুন অস্ত্র তৈরির প্রতিযোগিতা অতীতে ছিল, এখনো আছে, থাকবে ভবিষ্যতেও। এখন মূলত এই প্রতিযোগিতা চলছে পারমাণবিক বোমার অধিকারী দেশগুলোর মধ্যে। পারমাণবিক বোমার মতো মারণাস্ত্রের মালিক হওয়ার পর এখন তাদের প্রতিযোগিতা কত দূরে এবং কত দ্রুত ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে সেই বোমা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারবে, সেটা নিয়ে।
এই প্রতিযোগিতা থেকে রাশিয়া তৈরি করে ফেলেছে শব্দের চেয়ে ১০ গুণ দ্রুতগতিতে উড়ে গিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এক ক্ষেপণাস্ত্র। সেই ক্ষেপণাস্ত্র পারমাণবিক বোমা বহনেও সক্ষম। সম্প্রতি এ ঘোষণা দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজেই। সঙ্গে এটাও বলেছেন, সারা বিশ্ব এখন তাঁদের ওই ক্ষেপণাস্ত্রের আওতায়।
সাধারণত শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি গতির ক্ষেপণাস্ত্রকে বলা হয় ‘হাইপারসনিক মিসাইল’। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ফ্রান্স, ভারতও এই প্রযুক্তির পেছনে ছুটছে। কেউ কেউ পরীক্ষাও চালিয়েছে। কিন্তু কেউই পুতিনের মতো প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে এই প্রযুক্তির ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কথা বিশ্বকে জানান দেয়নি।
নতুন ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষমতা
রাশিয়া তার নতুন এই হাইপারসনিক মিসাইলের নাম দিয়েছে ‘কিনজাল’। শব্দের গতি প্রতি সেকেণ্ডে ৩৩২ মিটার। কিনজালের গতি শব্দের গতির ১০ গুণ হলে এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতি সেকেণ্ডে যাবে ৩ হাজার ৩২০ মিটার। তার মানে কিনজাল এক সেকেন্ডে সোয়া তিন কিলোমিটারেরও বেশি পথ পাড়ি দিতে সক্ষম। এই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়া বিশ্বের যেকোনো স্থানে নির্ভুলভাবে পারমাণবিক হামলা চালাতে সক্ষম বলে দাবি করেন পুতিন। প্রেসিডেন্ট পুতিন পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে যেদিন এই মারণাস্ত্রের কথা বিশ্বকে জানান দেন, সেদিনই এর সক্ষমতা নিয়ে ভিডিও গ্রাফিকস দেখান তিনি। সেই গ্রাফিকসে দেখানো হয়, কিনজাল ক্ষেপণাস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে বৃষ্টির মতো আঘাত হানছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, রাশিয়া মস্কো থেকে কিনজাল ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লে মাত্র সাড়ে ৩৭ মিনিটে তা ফ্লোরিডায় আঘাত হানবে (আকাশপথে মস্কো-ফ্লোরিডা দূরত্ব ৭৪৭২ কিলোমিটার)।
রাশিয়ার অ্যারোস্পেস ফোর্সের প্রধান সেরগেই সুরোভিকিন বলেন, এই ক্ষেপণাস্ত্রের একটি বৈশিষ্ট্য হলো, মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য এটি উৎক্ষেপণ করা সম্ভব।