রেল স্টেশনের জায়গা দখল করে অবৈধ সিএনজি স্টেশন
একুশে জার্নাল ডটকম
ফেব্রুয়ারি ০৩ ২০২০, ১৫:১০
দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাবেক সদর মহকুমা ঐতিহ্যবাহী পটিয়ার রেলওয়ে স্টেশনের জায়গা দখল করে সিএনজি স্টেশন বসিয়ে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে স্টেশন মাস্টার সমীর দে। এ কারণে যাত্রীরা সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। বর্তমানে এই স্টেশন মাস্টার রেলওয়ে স্টেশনকে গড়ে তুলেছে তার নিজের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। স্টেশন মাস্টার স্থানীয়রা প্রভাবশালীদের দিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠা চালিয়ে আসলেও রেলওয়ে প্রশাসন এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না সাধারণ জনগণের অভিমত। তদারকি বাড়াতে রেলওয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে সচেতন মহল। বার বার নির্বাহী অফিসার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অবৈধ দোকান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ করলেও পরবর্তীতে পুনরায় দখল করেছে স্টেশন মাস্টারের সহযোগিতায় স্থানীয় ও বহিরাগত অসাধু ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় লোকজন জানান, সকালে উচ্ছেদ বিকেলে দখল।
জানা যায়, ১৯৩৪ সালে চট্টগ্রাম শহরে আসা যাওয়ার সুবিধার্থে চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মিত হয়। একই সাথে প্রতিষ্ঠিত হয় পটিয়া রেলওয়ে স্টেশন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে পটিয়া রেলওয়ে স্টেশনের স্থায়ী কোনো ভবন না থাকলেও বিগত ২০১৬ সালে রেলওয়ের জায়গার উপর নির্মিত হয়েছে রেলওয়ে অফিস। এতে ৭টি রুম থাকলেও ৬টি ওয়েটিং রুম।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পটিয়া রেলওয়ে স্টেশনের জায়গা দখল করে রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে হাইদগাঁও ও সাত গাউছিয়া দরবার শরীফে যাওয়ার সিএনজি ষ্টেশন স্থাপন করে। এই রোডে প্রতিদিন ৬০-৭০টি সিএনজি চলাচল করে। রেলওয়ে ষ্টেশনের জায়গার উপর প্রায় সময় ৩০-৪০টি সিএনজি অটো রিক্সা অবস্থান করে। আর সিএনজি ষ্টেশন থেকে মাসিক ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা ভাড়া হিসেবে নেয় ষ্টেশন মাষ্টার সমীর দে। এছাড়া আশপাশে ৫-২০ ফুটের মধ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে অনেকে। কয়েকটি ফলের দোকান, চায়ের দোকান,গাছ, বাঁশ এবং আরো ১৫-২০টি ভ্রাম্যমাণ দোকান বসিয়ে ব্যবসায় চালিয়ে আসছে এই স্টেশন মাষ্টারের সহযোগিতায় স্থানীয়রা। রেলপথ দিয়ে হেঁটে পারাপার হচ্ছে জনসাধারণ। আর রেলপথে উপরেই বসানো হয়েছে ছোট ছোট ভ্রাম্যমাণ দোকান। আর স্টেশন মাষ্টারের সহযোগিতায় স্থানীয় প্রভাবশালী এসব ব্যবসা চালিয়ে আসলেও রেলওয়ে প্রশাসন স্টেশন মাষ্টার সমীর এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় জানান, সন্ধ্যার পর হলেও রেলওয়ে স্টেশনে বসে মাদকসেবীদের আড্ডা। দূর্গন্ধের কারণে ৫ মিনিট দাঁড়াতেও পারে না যাত্রীরা। তিনি অভিযোগ করেন, রেলওয়ে স্টেশনে ভবন করা হলেও যাত্রীরা সেবা পায় না। ওয়েটিং রুমগুলো সব সময় বন্ধ রাখা হয়। যাত্রীরা উঠানামা করার সময় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো তদারকি করে না। রেলওয়ের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে সিএনজি অটোরিক্সা স্টেশন ও যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে তা বন্ধ করা না গেলে রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষের দখলে রাখা সম্ভব হবে না বলে সাধারণ জনগণ জানায়।
পটিয়া অটো টেম্পু ও সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হাইদগাঁও সাত গাউছিয়া সড়কের লাইন ম্যান মোঃ হারুন জানান মাসে ৩ হাজার টাকার জায়গা ভাড়া হিসেবে সমীর দে নেয় বলে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন স্টেশন মাষ্টার সমীর প্রতিমাসে কিসের জন্য এই ৩ হাজার টাকা নেয় তা আমার চাইতে সমিতির সভাপতি সেক্রেটারী এ বিষয়টি ভালো করে জানে। তার কাছে পটিয়া রেলওয়ে স্টেশনের জায়গা দখল করে সিএনজি স্টেশন বসানোর কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাস্তা যানজট না করে একপাশে এসে স্টেশন করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলেন। তাই এই কারণে সিএনজি স্টেশন স্থাপন করা হয়।
এই বিষয়ে পটিয়া রেলওয়ে ষ্টেশন মাষ্টার সমীর দে মোবাইলে যোগাযোগ করা হইলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।