রেবিন চৌধুরী’র ‘বিশাখার বাঁশি’ কাব্যগ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব সম্পন্ন
একুশে জার্নাল ডটকম
মার্চ ৩১ ২০২২, ২০:৪৯
ওসমানীনগর প্রতিনিধি: যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত লেখক, কবি ও গীতিকার, অত্যন্ত মানবিক গুণাবলী সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব কবি রেবিন চৌধুরীর কাব্যগ্রন্থ ‘বিশাখার বাঁশি’র প্রকাশনা অনুষ্ঠান গত ৩০ মার্চ সন্ধ্যায় সিলেট নজরুল একাডেমিতে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা সাহিত্যের শক্তিমান কবি ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ কবি কালাম আজাদ , বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জালালাবাদ ক্যান্ট: পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ সিলেট ও ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ কুমিল্লা এর সাবেক প্রিন্সিপাল (২০০০ ও ২০০২ সালের শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ) লে: কর্ণেল (অব:) কবি সৈয়দ আলী আহমদ,
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট লেখিকা সংঘের সাবেক সভাপতি কবি নুরুন্নেছা চৌধুরী রুনি ও সিলেট লেখিকা সংঘের সাবেক সভাপতি কবি কবি সালমা বক্ত চৌধুরী।
আয়োজিত এ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কবি ও রাজনীতিবিদ সালেহ আহমদ খসরু।
প্রকাশনা উৎসবের সদস্য সচিব কামাল আহমদের সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের সমন্বয়ক সংগীত শিল্পী সৌরভ।
এ অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন দৈনিক সকালের সময় ওসমানীনগর উপজেলা প্রতিনিধি আহমদ মালিক, কবি এম আলী হোসেন সহ আরো সম্মানিত কবি, সাহিত্যিক, লেখক, প্রাবন্ধিক, ছড়াকার, সংস্কৃতিকর্মী, সমাজকর্মী,সাংবাদিক ও স্থানীয় সম্মানিত ব্যাক্তিবর্গ।
কবি রেবিন চৌধুরীর কাব্য “বিশাখার বাঁশি” গ্রন্থের প্রকাশনায় প্রধান অতিথি অধ্যক্ষ কবি কালাম আজাদ বলেন কবি রেবিন চৌধুরী শুধু গতানুগতিক কবি নয় নিঃসন্দেহে তিনি একজন বড়মাপের কবি আজ আমি তাকে সেই স্বীকৃতি দিয়ে গেলাম। অধ্যক্ষ কবি কালাম আজাদ আরো বলেন কবি রেবিন চৌধুরীর কবিতার বই বিশাখার বাঁশিটি যখন আমার হাতে আসে বইয়ের নামটাই আমাকে বিশেষ ভাবে আকৃষ্ট করে। একজন কবি পারে বিশাখার মতো একটি গ্রহকে ধরে এনে বাঁশি বানাতে। কবি রেবিন চৌধুরী সেই কাজটি করে দেখিয়ে দিয়েছেন। রেবিন চৌধুরীর কবিতা খুব ভালো লাগে। অবশ্যি ইতোপূর্বে তাঁর ইচ্ছে ডানা কাব্যটিও প্রশংশিত ছিলো। আমি তার লেখালেখির আরো সাফল্য কামনা করি।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বিভিন্ন আলোচক বলেন, কর্মব্যস্ত প্রবাস জীবনে সাহিত্য, সংস্কৃতি ও মুক্তবুদ্ধি চর্চা ভিশন কঠিন কাজ উল্লেখ করে আলোচকরা বলেন, আমাদের অতি প্রিয় লেখক রেবিন চৌধুরী এই কঠিন কাজকেই সহজ হিসেবে করে দেখিয়ে দিয়েছেন।
এর মধ্য দিয়ে তিনি অসামান্য ও প্রসংশা পাওয়ার মতো ধৈর্য্য ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়েছেন। একদিন এই লেখক থাকবেন না কিন্তু তাঁর বংশধরেরা থাকবে। পরবর্তী প্রজন্ম তাদের সম্মানের সঙ্গে তাদের স্মরণ করবে।
কবি রেবিন চৌধুরী শত বাধা বিপত্তির শেকল ভেঙে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেছেন। বরং বলা যায় তারা শেকল ভেঙে বেরিয়ে এসেছেন। এসে আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন জীবনে বাধা আসতে পারে, শত প্রতিকূলতা আসতে পারে কিন্তু চাইলেই যে কেই ঘুরে দাড়াতে পারে। মনের অসীম শক্তি ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে স্মরণীয় বরনীয় হতে পারে।
কবি রেবিন চৌধুরী সুলেখক হিসাবে দেশে বিদেশে সবার কাছে পরিচিত ও সমাদৃত। ছোটবেলায় রেবিন চৌধুরী -এর লেখালেখিতে হাতেখড়ি এবং আজবদি অবিরত কবিতা, প্রবন্ধ ও গবেষণামূলক লেখার মাধ্যমে পাঠককূলে একজন পরিশীলিত লেখক হিসাবে নিজের স্থান করে নিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিকস ও অনলাইন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লিখে যাচ্ছেন। সোস্যাল মিডিয়া বিশেষ করে ফেসবুক প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তাঁর বিচিত্র ধর্মী লেখা বন্ধুমহলের গণ্ডি পেরিয়ে অনলাইন জগতে যথেষ্ঠ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং তাঁর অনুসন্ধিৎসু ও দূরদর্শী চিন্তাভাবনা সকল মহলে তাঁকে একটি গ্রহণযোগ্যতা এনে দিয়েছে।
কবি রেবিন চৌধুরী -এর সাহিত্য জগত কিংবা তাঁর জীবনের সফলতা বা সার্থকতা নিয়ে মূল্যায়ন করার যোগ্যতা আমার নেই তবে একজন সফল মানুষ হিসাবে তাঁকে পর্যালোচনা করা যায়। আমি মনে করি একজন মানুষের সফলতা বা সার্থকতা নির্ভর করে মানুষের জীবনের সকল কর্মদক্ষতার উর্ধ্বে উঠে তাঁর ব্যক্তিত্বের উপর। একজন ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ভালো মানুষ সমাজে সম্মানিত হয় কিন্তু সকল সফল মানুষ সব সময় সম্মানিত হয় না। একজন জ্ঞানবান মানুষ যদি তার আচরণে অহংবোধ ও ঔদ্ধত্যের প্রকাশ ঘটায় ও তার ব্যক্তি চরিত্রে যদি বিনয়ের উপস্থিতি না থাকে তবে কিছুতেই তাকে ভালো মানুষ বলা যায় না। এক্ষেত্রে কবি রেবিন চৌধুরী তাঁকে একজন ভালো মানুষ হিসাবে বিবেচনা করার মত শতভাগ যোগ্যতা রাখেন।
অভিবাসী জীবনে পারিবারিক ও পেশাগত কর্মব্যস্ততায় থেকেও কবি রেবিন চৌধুরী মা ও মৃত্তিকার নাড়ির বন্ধন অটুট রেখেছেন। শত প্রতিকূলতার মধ্যেও শিকড়কে ভুলে যাননি, হৃদয়ে মাতৃভূমির দরদ নিয়ে মাতৃভাষার চর্চা অব্যাহত রেখেছেন। কবি রেবিন চৌধুরী লেখালেখির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও মানবাধিকার সংগঠনের সাথে জড়িত, সেই সাথে তিনি সমাজের আনাচেকানাচে বিভিন্ন অসহায় দরিদ্র মানুষদের উপকার করে যাচ্ছেন তাঁর সাধ্য অনুযায়ী। অনুষ্ঠান শেষে লেখক ও আমন্ত্রিত অতিথিরা ফটোসেশন ও নৈশভোজে অংশ নেন।