নিজ ঘর থেকেই দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করতে হবে

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

ডিসেম্বর ০৯ ২০২১, ১৭:৩৮

দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজদের সামাজিকভাবে বয়কট করার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, দুর্নীতি বিরোধী অভিযান নিজের ঘর থেকেই শুরু করতে হবে। দেশ ও সমাজ থেকে যে কোনও মূল্যে দুর্নীতির মুলোৎপাটন করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বব্যাপী প্রতিরোধ গড়ে তোলার বিকল্প নেই।

রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, সৎ, আন্তরিক ও নিষ্ঠাবানদের সামাজিকভাবে মূল্যায়ন করতে হবে। তা হলেই সমাজ থেকে দুর্নীতি হ্রাস পাবে। তিনি দুদকের সকল পর্যায়ের কর্মীদের সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা ও নৈতিকতা প্রদর্শন করার আহ্বান জানান। দুর্নীতি দমন কার্যক্রমে কিছুসংখ্যক লোকের জন্য যাতে পুরো দুর্নীতি দমন কমিশনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন না হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখার নির্দেশ দেন তিনি।

দুর্নীতিকে উন্নয়নের প্রধান অন্তরায় উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, একজন দুর্নীতিবাজের পরিচয় শুধুই একজন দুর্নীতিবাজ। দুর্নীতিবাজ যে দলেরই হোক, দুর্নীতি করলে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

তিনি বলেন, আগামী দিনগুলোতে দুদককে দুর্নীতি দমনে আরও দৃঢ়তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে। দুর্নীতির মাধ্যমে কোনো অনৈতিক সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে প্রলুব্ধ না করার জন্যও সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

কোনও মানুষ দুর্নীতিবাজ হিসেবে জন্মগ্রহণ করে না উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, পারিবারিক, সামাজিক ও আশপাশের পরিবেশই মানুষের জীবনে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। অন্যের দুর্নীতি চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার পূর্বে নিজেদের অনিয়ম ও অসততা দূর করতে হবে।

আবদুল হামিদ দুদকের কার্যক্রমে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনের তাগিদ দিয়ে বলেন, দুর্নীতি করলে শাস্তি পেতে হবে এবং দুর্নীতি করে কেউ পার পাবে না। জনমনে এমন ধারণা জন্মাতে পারলেই দুদকের ওপর জনগণের আস্থা বাড়বে। যারা রাষ্ট্র কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব ও ক্ষমতার অপব্যবহার করবে তাদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে প্রচলিত আইনের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ দেন রাষ্ট্রপতি ।

তিনি বলেন, দুর্নীতি এমন একটি বিষয় যা অতি প্রাচীনকাল থেকেই সমাজে প্রচলিত আছে। পৃথিবীর কোনো দেশই এর কুপ্রভাব থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত নয়।সামাজিকভাবে দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব জাগ্রত না হলে কেবল দুর্নীতি দমন কমিশনের একার পক্ষে দুর্নীতি দমন করা সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি।

আবদুল হামিদ বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘদিনের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অন্যতম লক্ষ্য ছিল মানবিক, বৈষম্যহীন, দারিদ্র্যমুক্ত, ন্যায়ভিত্তিক, দুর্নীতিমুক্ত শুদ্ধাচারী রাষ্ট্র ও সমাজ বিনির্মাণ করা। বঙ্গবন্ধু তার জীবদ্দশায় কখনো দুর্নীতির সাথে আপস করেননি।

রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন ‘চাওয়া পাওয়ার সাথে সামর্থের সামঞ্জস্য না থাকলেই দুর্নীতির বিস্তার ঘটে। তাই আয়ের সাথে ব্যয়ের সংগতি রেখে জীবন ধারণে অভ্যস্ত হলেই সমাজ থেকে দুর্নীতি হ্রাস পাবে।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ, দুদক কমিশনার, মো. মোজাম্মেল হক খান (অনুসন্ধান) ও মো. জহুরুল হক (তদন্ত) এবং দুদক সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।