রাত পোহালেই নির্ধারিত হবে হাটহাজারীর নতুন অভিভাবক

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

সেপ্টেম্বর ০৭ ২০২১, ২২:০৯

হাবীব আনওয়ার, হাটহাজারী প্রতিনিধি:

উপমহাদেশের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ দ্বীনি শিক্ষা নিকেতন দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক, শিক্ষা পরিচালক, শায়খুল হাদীস ও হোস্টেল সুপার নির্ধারন, শুরা কমিটিকে বিন্যাসসহ বেশ কয়েকটি এজেন্ডা নিয়ে মজলিসে শুরা’র (সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক কমিটি) বৈঠক বসবে।

আগামীকাল ৮ সেপ্টেম্বর বুধবার সকাল ১০ টায় শুরা সদস্য আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী’র সভাপতিত্বে হাটহাজারী মাদরাসায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

সর্বশেষ ২০২০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর আল্লামা আহমদ শফী রহ. এর জানাযার পর মজলিসে শুরার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বৈঠকে একক পরিচালকের পরিবর্তে ‘মজলিসে এদারী’ নামে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিচালনা কমিটি করে দেওয়া হয়। যেখানে মুফতী আব্দুস সালাম চাটগামীকে প্রধান করে আল্লামা শেখ আহমদ ও মাওলানা ইয়াহিয়াকে সদস্য করা হয়। এবং আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী রহ. -কে শিক্ষা পরিচালক ও শায়খুল হাদীস নিযুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু গত ১৮ আগস্ট আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী’র মৃত্যুতে তার শূন্য পদ পূরণে এই শূরা আহ্বান করা হয়।

মাদরাসা সংশ্লিষ্টগণ বলছেন, আল্লামা বাবুনগরী’র শূন্য পদ পূরণের পাশাপাশি মাদরাসার একক পরিচালকও নির্ধারণ করা হতে পরে কালকের বৈঠকে।

কে হচ্ছেন আগামী দিনের অভিভাবক?

দেশের সর্ববৃহৎ এই মাদরাসার পরিচালক কে হচ্ছেন, তা নিয়ে চলছে জল্পনা কল্পনা। আলোচনায় সরব অনলাইন অফলাইন। সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু আগামীকালের শুরা বৈঠক। তবে বর্তমান মজলিসে এদারির প্রধান আল্লামা মুফতী আব্দুস সালামকে পরিচালক ও সদস্য মাওলানা ইয়াহিয়া সাহেবকে সহকারী পরিচালক করে ঘোষণা আসতে পারে এমন গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তবে সহকারী পরিচালকের পদে এগিয়ে আছেন, আরেক সদস্য আল্লামা শেখ আহমদ। তবে তার ব্যাপারে ভেতরে বাইরে জোরালো আপত্তি রয়েছে বলে জানা গেছে।

মাদরাসার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা পরিচালকের পদে এগিয়ে আছেন মাওলানা শোয়াইব জমিরী। তিনি আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী’র সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া সহকারী শিক্ষা পরিচালক হিসেবে তরুণ শিক্ষকদের সামনে আনা হতে পারে।

মাদরাসায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শায়খুল হাদীস পদে একক ব্যক্তির পরিবর্তে তিনজনকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। এই ক্ষেত্রে আল্লামা শেখ আহমদ, মাওলানা শোয়াইব ও হাটহাজারী মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা হাবিবুল্লাহ কুরাইশীর নাতি মুফতী খলিল সাহেবের নাম সামনে এসেছে।

এছাড়া মাদরাসার হল সুপারের প্রধান হিসেবে মুফতী জসিম উদ্দিন সাহেবের নাম শোনা যাচ্ছে।

মাদরাসার শূরা ও নতুন দায়িত্বশীল নিয়োগে ছাত্রদের অভিমত জানতে চাওয়া হলে কয়েকজন ছাত্র জানান, নিয়োগ বিয়োগ নিয়ে আমাদের কোন মাথা ব্যথা নেই। শুরা কর্তৃক যাকে নিয়োগ দেওয়া হবে পূর্বের ন্যায় তাকেই গ্রহণ করবো। তবে আমরা আশা করবো শুরা কর্তৃপক্ষ সৎ, দক্ষ, আমানতদার ব্যক্তিদের এই গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দেবেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদরাসার পরিস্থিতি স্বাভাবিক। আগামী রবিবার থেকে ক্লাস শুরু হওয়ার ঘোষণা আসার পর থেকে ছাত্ররা নতুন বছরের কিতাব কেনা ও শ্রেণী কক্ষ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতায় ব্যস্ত রয়েছে।

তবে কে হচ্ছেন দেশের সর্ববৃহৎ এই মাদরাসার অভিভাবক তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে শুরা কমিটির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পর্যন্ত, যা জানা যাবে কাল‌ই।