রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার নাম আসায় মন্ত্রীর দুঃখপ্রকাশ
একুশে জার্নাল ডটকম
ডিসেম্বর ১৭ ২০১৯, ১৬:২৩
রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার নাম আসায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যা পেয়েছি তাই প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া ভুল-ভ্রান্তি বেশি হলে তালিকা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী দুঃখপ্রকাশ করেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, একাত্তরে প্রস্তুত করা তালিকাটিতে পাকিস্তানি বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সংযোজন করে থাকতে পারে।
গত রবিবার একাত্তরের রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও স্বাধীনতাবিরোধী ১০ হাজার ৭৮৯ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ের নথি পর্যালোচনা করে প্রথম ধাপে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়।
তালিকা প্রকাশের পরই তা নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনা শুরু হয়। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন এমন অনেক মুক্তিযোদ্ধার নামও রাজাকারের তালিকায় এসেছে। বরিশাল, রাজশাহী, বরগুনা, চট্টগ্রাম ও বগুড়ায় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার নাম এসেছে, যারা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে পরিচিত। এসেছে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার নামও। ফলে এই তালিকা নিয়ে ওই সব এলাকায় ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এমন সমালোচনার মধ্যেই সাংবাদিকদের সামনে ওই তালিকার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী।
মোজাম্মেল হক বলেন, ভুলের দায় আমরা এড়াতে পারি না। যেসব অভিযোগ পাব, যাচাই করে সেসব নাম প্রত্যাহার করে নেয়া হবে। আগামীতে তালিকা প্রকাশের আগে যাচাই-বাছাই করে পরে প্রকাশ করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যে তালিকা পেয়েছি, হুবহু তা প্রকাশ করেছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও সে সময়ের সরকারি রেকর্ড দিয়েছে, নতুন তালিকা করেনি’
মোজাম্মেল হক বলেন, ‘১৯৭১ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতকৃত রাজাকারদের তালিকা মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় থেকে হুবহু প্রকাশ করা হয়েছে। এ তালিকা আগেই তৈরি করে রেখে গেছে। সেখানে কোনো ইল মোটিভ থাকতে পারে, উদ্দেশ্যমূলক হতে পারে। যেভাবে আছে, সেভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আমরা এটা এডিট করি নাই, দাড়ি-কমা, সেমিকোলন চেঞ্জ করি নাই।’
রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম আসায় ক্ষমা চাইবেন কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘দুঃখ প্রকাশ করার অর্থ যদি আপনি না বোঝেন। আমি কি এটা করেছি? আপনি যদি চ্যালেঞ্জ করেন, এসে দেখে যান।’
‘আমরা অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে বলছি, এই তালিকা আমরা তৈরি করি নাই। জাতির দাবি ছিল, তাই প্রকাশ করেছি। আমি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তৈরি করি নাই। দুঃখ প্রকাশ করা ক্ষমা চাওয়ার মধ্যে তো কোনো পার্থক্য নাই। নিঃসন্দেহে এটা ক্ষমার চোখে দেখবেন।–যোগ করেন মন্ত্রী।