রমাদান কারীম: মাদরাসাতুত তাকওয়া- ০১
একুশে জার্নাল
মে ২৩ ২০১৯, ০০:১৮
মুহাম্মদ আতীক উল্লাহ
১: রামাদান ঘনিয়ে আসছে। সাথে আসছে ‘সিয়াম’। এমন এক প্রতীক্ষা। এখন রমাদান এসে অর্ধেক চলেও গেছে। সিয়াম ইসলামের চতুর্থ রোকন। স্তম্ভ। রমাদান সম্পর্কে কুরআন কী বলে, সে সম্পর্কে মোটামুটি ধারনা ধাকলে, মানতে সুবিধে হবে।
২: ইসলামে জ্ঞানের প্রধান উৎস কুরআন কারীম। সিয়াম সম্পর্কে জানতে হলে, আমরা প্রথমে কুরআনের দ্বারস্থ হতে পারি। বুঝতে সুবিধার জন্য পাশে থাকবে, কুরআন কারীমের শ্রেষ্ঠতম তাফসীর, নবীজির হাদীস শরীফ।
৩: সিয়াম (صِيام) অর্থ বিরত থাকা (إمساك)। নিজেকে আটকে রাখা। সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ইত্যাদি থেকে বিরত থাকা। যদি কারও ধারণা হয়, শরীয়ত কিছু জৈবিক প্রয়োজন থেকে বিরত থাকার শক্তি পরীক্ষার জন্যই ‘সিয়াম’ পালনের বিধান দিয়েছে। এমন চিন্তা, শরীয়তের প্রতি ‘মন্দ’ ধারণার শামিল। আল্লাহ তা‘আলা বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে বান্দার উপর রোযা ফরয করেছেন। নিছক পানাহার বর্জন, রোযার মূল উদ্দেশ্য হতে পারে না।
৪: একটানা পাঁচটি আয়াতে, আল্লাহ তা‘আলা সিয়াম বিষয়ক আলোচনা পেশ করেছেন।
৫: প্রথম আয়াত!
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ
হে মুমিনগণ! তোমাদের প্রতি রোযা ফরয করা হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের প্রতি ফরয করা হয়েছিল, যাতে তোমাদের মধ্যে তাকওয়া সৃষ্টি হয় (১৮৩)।
৬: সিয়ামের প্রধান লক্ষ্য ‘তাকওয়া’। তাকওয়া রোজাদারের কলবে, আল্লাহর আনুগত্যের চেতনা জাগ্রত করে। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের আগ্রহ তৈরি করে। গুনাহের মাধ্যমে রোজাকে দুর্বল না করার প্রতি সচেতনতা সৃষ্টি করে।
৭: মুমিনমাত্রই জানে, আল্লাহর কাছে তাকওয়ার মূল্য কতখানি। প্রকৃত মুমিন সবসময় তাকওয়া অর্জনে সচেষ্ট থাকে। সিয়াম হল তাকওয়ার অর্জনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। সিয়াম তাকওয়ার বন্দরে পৌঁছার প্রধান সড়ক।
৮: সর্বযুগে শরীয়তের প্রতিটি বিধানই, মানুষের জন্য পরিপূর্ণ কল্যাণকর ছিল। সমস্ত নবীর আনীত ও পালিত দ্বীনের নাম ইসলাম ছিল। মৌলিক ইবাদত, উসূলুদ্দীন (দ্বীনের মূলনীতি), আকায়েদ, আখলাক সব ধর্মেই এক ছিল। মৌলিক হারাম বস্তু ও কবীরা গুনাহ যেমন জুলুম, সুদ, নরহত্যা সমস্ত আসমানী ধর্মেই নিষিদ্ধ ছিল। সমস্ত নবীর আনীত দ্বীনের মূলনীতি ও আকীদা এক ছিল। শুধু কিছু শাখাগত মাসয়ালা ও বিধানের প্রায়োগিক ক্ষেত্রে অমিল ছিল।
৯: আগের উম্মতের উপর সিয়াম ফরয করা হয়েছিল। আমাদের উপরও ফরয করা হয়েছে। আমরা যেন প্রতিযোগিতা করতে পারি। পূর্ববর্তী কওম থেকে সিয়ামের ইবাদতে অগ্রগামী হয়ে যেতে পারি।
১০: আমরা শ্রেষ্ঠ উম্মত (خَیۡرَ أُمَّةٍ)। আমলেও নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখা জরুরী।
১১: সিয়াম কঠিন কোনও ইবাদত নয়। আমাদের আগেও এই ইবাদত ছিল। শুধু আমাদের উপরই ফরয করা হয়নি। আল্লাহ তা‘আলা বান্দাকে উৎসাহ দিয়েছেন। অভয় দিয়েছেন।
১২: সিয়াম পালন করলে কী হবে? আমাদের মধ্যে তাকওয়া সৃষ্টি হবে (لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ)। আমরা বিভিন্ন গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে পারব। কারণ রোজা মানুষের যৌনপ্রবৃত্তিকে অবদমিত করে রাখে। এই প্রবৃত্তির প্ররোচনাতে মানুষ বড় বড় গুনাহের দিকে ধাবিত হয়।
১৩: শুরুতে রোজা ফরয হওয়ার কথা বলে, শেষে তাকওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাই রোজাটা হতে হবে কথা ও কাজের পাপমুক্ত।
১৪: আল্লাহ তা‘আলার কাছে রোজা অত্যন্ত প্রিয় ইবাদত। তাই সব শরীয়তে রোজার বিধান রেখেছেন। প্রিয় না হলে, এতটা গুরুত্ব দিতেন না।
১৫: বান্দার উপর রাব্বে কারীমই সিয়াম পালন ফরয করেছেন। কিন্তু প্রকাশ করেছেন, (كُتِبَ عَلَیۡكُمُ ٱلصِّیَامُ) তোমাদের উপর সিয়াম ফরয করা হয়েছে। এভাবে বলেননি, তোমাদের উপর আমি সিয়াম ফরয করেছি। সিয়াম পালনে বান্দাকে কিছু কষ্ট সহ্য করতে হয়। আল্লাহর তা‘আলা বান্দার কষ্ট হবে, এমন বিধানগুলোর ক্ষেত্রে সাধারণত ‘কর্মবাচ্য’ (মাজহুল) ব্যবহার করেছেন। বান্দার আরাম ও খুশির ক্ষেত্রে কর্তৃবাচ্য (মা‘রুফ) ব্যবহার করেছেন,
كَتَبَ عَلَىٰ نَفۡسِهِ ٱلرَّحۡمَةَۚ
তিনি রহমতকে নিজের প্রতি অবশ্য কর্তব্যরূপে স্থির করে নিয়েছেন (তাই তাওবা করলে অতীতের সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেন) আন‘আম: ১২
১৬: আল্লাহ তা‘আলা আমাদের উপর সিয়াম ফরয করেছেন। বলেছেন (كُتِبَ عَلَیۡكُمُ ٱلصِّیَامُ)। সাহাবায়ে কেরাম একবাক্যে রাব্বে কারীমের কথা মেনে নিয়েছেন। কোনও কথা বলেননি। প্রশ্ন তোলেননি। মৃদুতম আপত্তিও করেননি। কিন্তু বনী ইসরাঈল কি করল? অন্যায় হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার কারণে তাদেরকে মুসা আ. বললেন,
إِنَّ ٱللَّهَ یَأۡمُرُكُمۡ أَن تَذۡبَحُوا۟ بَقَرَةࣰۖ
আল্লাহ তোমাদেরকে একটি গাভী যবাহ করতে আদেশ করেছেন (বাকারা ৬৭)।
বনী ইসরাঈল আল্লাহর নবীকে আক্রমণ করে বসল। তারা বলল,
أَتَتَّخِذُنَا هُزُواۖ
আপনি কি আমাদের সাথে ঠাট্টা করছেন?
এখানেই শেষ নয়। তাদেরকে বোঝানোর জন্য, মুসা আ.-কে আরও তিনবার আল্লাহর দিকে রুজু হতে হয়েছে।
১৭: আমরা চাঁদ দেখে সিয়াম শুরু করি। পূর্ববতীদেরও তাই করতে হত। নিজস্ব বর্ষগণনার মাধ্যমে নয়। ইহুদি খ্রিস্টানরা এখন সৌরবর্ষের গণনা মতে তাদের নিজস্ব ‘উপবাস’ প্রথা পালন করে। কিন্তু কুরআন কারীমে বলা হয়েছে,
كَمَا كُتِبَ عَلَى ٱلَّذِینَ مِن قَبۡلِكُمۡ
যেমন তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের প্রতি ফরয করা হয়েছিল। অর্থাৎ তাদের মতো হুবহু আমাদের উপরও ফরজ করা হয়েছে। তারা যেভাবে যেভাবে সিয়াম পালন করত, আমাদেরও সেভাবে পালন করতে হবে।
১৮: সিয়ামের গুরুত্ব শুধু কুরআন কারীমেই নয়, হাদীসে কুদসিতেও রাব্বে সিয়াম বিশেষ মর্যাদা দিয়েছেন,
كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ له، إلّا الصِّيامَ، فإنَّه لي وأَنا أجْزِي به، والصِّيامُ جُنَّةٌ،
সিয়ামের আমল ছাড়া, আদমসন্তানের প্রতিটি আমল তার নিজের। শুধু সিয়ামই একান্ত আমার নিজের। আমি স্বয়ং সিয়ামের পুরস্কার দেব। অন্য আমল মানুষকে দেখানোর সুযোগ আছে। মানুষের প্রশংসা লাভেরও সুযোগ আছে। সিয়াম বান্দার জন্য গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার ঢালস্বরূপ (আবু হুরায়রা রা.। বুখারি ১৯০৪)।
১৯: সব ইবাদতই আল্লাহর জন্য, তবুও সিয়ামের ব্যাপারটা একটু ভিন্ন। সিয়াম পালন করত গেলে সবচেয়ে বড় দু’টি ইন্দ্রিয় লিপ্সাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়,
ক: যৌনচাহিদা।
খ: আহার।
সালাত ছাড়া অন্য কোনও ইবাদতে বান্দাকে এভাবে আত্মনিয়ন্ত্রণ করে থাকতে হয় না।
২০: সিয়াম একটি ক্ষেত্রে সালাতের চেয়েও অনন্য। সিয়াম পালন বান্দা ও তার রবের মাঝে একান্ত গোপন বিষয় হয়ে থাকে। বান্দা প্রকাশ না করলে, আল্লাহ ছাড়া আর কেউ সিয়ামের কথা জানা সম্ভব নয়। সালাতসহ বাকি সব বাহ্যিক ইবাদতই বান্দার চোখে পড়ার সম্ভাবনা আছে। রিয়া বা লোক দেখানোর সুযোগ আছে।
২১: আল্লাহ তা‘আলার কাছে সিয়ামের ইবাদত অত্যন্ত প্রিয়। তা না হলে তিনি প্রতিটি উম্মতের উপর সিয়াম ফরয করতেন না।
২২: সিয়ামের মাধ্যমে শরীর ও কলব সুস্থ্য হয়। পুষ্ট হয়। প্রবৃত্তির প্ররোচনার কারণে সৃষ্ট কলবের কলুষতা দূর হয়। তাকওয়া অর্জনের পথে সিয়াম অত্যন্ত শক্তিশালী হাতিয়ার।
২৩: একটি নিয়ম হল, আমর বা আদেশসূচক ক্রিয়া ও বক্তব্যের পর (لعَلَّ) হরফটি পূর্বের বক্তব্যের কারণ (تَعْلِيْل) বোঝায়।
যাতে তোমাদের মধ্যে তাকওয়া সৃষ্টি হয় (لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ)। তোমরা রোজা রাখলে, তোমাদের মধ্যে তাকওয়া সৃষ্টি হবে। তোমরা তাকওয়া অর্জনের জন্য সিয়াম পালন কর। ১৮৬ তম আয়াত সম্পর্কেও একই কথা।
২৪: রমাদান হল মাদরাসাতুত তাকওয়া। তাকওয়ার মাদরাসা। সিয়াম বিষয়ক আলোচনার প্রথম আয়াত শেষ হয়েছে (لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ) দিয়ে। ১৮৭-তম আয়াতে সিয়ামের আলোচনা শেষ হয়েছে (لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ) দিয়ে।
২৫: সিয়ামের আগাগোড়া পুরোটাই তাকওয়ায় মোড়া। সিয়ামই তাকওয়া অর্জনের অন্যতম বড় মাধ্যম। সিয়ামের মাধ্যমে কলবে তাকওয়ার অবস্থান সুদৃঢ় হয়। রমযানে নিয়মিত নিজের কথাবার্তা, আচার-আচরণের প্রতি গভীর নজর দেয়া উচিত। এসবে তাকওয়ার কোনও প্রভাব ফুটে ওঠে কি না, যাচাই করা উচিত।
২৬: রমাদান তাকওয়ার মাস। তাকওয়া অর্জনের প্রধান উপায় গুনাহ ত্যাগ করা। আল্লাহর ভয় (তাকওয়া) আর গুনাহ একসাথ হতে পারে না। তাই রমযান আর গুনাহও এক হওয়ার কথা নয়। শুধু কি তাই, গুনাহ থেকে বেঁচে থাকাই যথেষ্ট নয়, অতীতের গুনাহর ক্ষমা পাওয়াও জরুরী,
رَغِمَ أنفُ رجلٍ دخلَ علَيهِ رمضانُ ثمَّ انسلخَ قبلَ أن يُغفَرَ لَهُ
রমাদ্বান পেল, ক্ষমা পাওয়ার আগেই মাস কেটে গেল, সে ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত (তিরমিযী ৩৫৪৫)।
২৭: রমাদ্বান পাওয়ার পরও, ক্ষমা পাওয়া হয়না কেন? অনেক কারণ থাকতে পারে। আগের মতো গুনাহের উপকরণ থেকে দূরে না থাকাই মূল কারণ। রমাদ্বান শুরু হওয়ার পরও, গাফেল উদাসীন থাক অত্যন্ত ক্ষতিকর। নবীজি সা. বলেছেন,
من لم يدَع قولَ الزُّورِ، والعملَ بِهِ، فلَيسَ للَّهِ حاجةٌ أن يدعَ طعامَهُ وشرابَهُ
যে ব্যক্তি (রমদ্বানে) মিথ্যা কথা ও অন্যায় কাজ ছাড়তে পারল না, তার পানাহার বর্জন করার আল্লাহর কোনও আগ্রহ (প্রয়োজন) নেই (আবু হুরায়রা রা. বুখারি ১৯০৩)।
২৮: রমাদ্বানে তাকওয়া লাভের সহজ পদ্ধতি কি? নবীজি সহজ কথায়, সহজ একটি পদ্ধতি বাতলে দিয়েছেন,
إذا كانَ يَوْمُ صَوْمِ أحَدِكُمْ فلا يَرْفُثْ ولا يَصْخَبْ، فإنْ سابَّهُ أحَدٌ أوْ قاتَلَهُ، فَلْيَقُلْ إنِّي امْرُؤٌ صائِمٌ
তোমরা রোজার দিনে, অশ্লীল কথা বলো না। চেঁচামেচি-ঝগড়া করো না। কেউ গালি দিলে বা লড়াই করতে উদ্যত হলে, বলো, আমি সায়েম। রোজাদার (আবু হুরায়রা রা.। বুখারী ১৯০৪)।
২৯: সিয়ামের মাধ্যমে কিভাবে তাকওয়া অর্জিত হয়? সিয়ামের ইবাদতে আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আত্মশক্তি অর্জিত হয়। এই আত্মশক্তিই বান্দাকে গুনাহমুক্ত থাকতে প্রেরণা যোগায়। সিয়ামের সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হল, মানুষের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে, আল্লাহর সাথে সম্পর্ক জুড়ে দেয়।
৩০: রমযান আসার আগে, রোজা রাখার হুকুম হয়েছিল। কারণ বলা হয়েছিল ‘তাকওয়া’। তাকওয়া অর্জনের জন্য রোজা রাখতে হবে। আজ রোজা শুরু হয়ে একে একে শেষের দিকে। বান্দা এখন অধীর হয়ে প্রতীক্ষায় আছে, তার সিয়াম-কিয়াম কবুল হবে তো? উত্তরটা আরেক জায়গায় দেয়া আছে, (إِنَّمَا یَتَقَبَّلُ ٱللَّهُ مِنَ ٱلۡمُتَّقِینَ) আল্লাহ তো মুত্তাকীদের পক্ষ হতেই (কুরবানী) কবুল করেন (মায়িদা ২৭)। আমি যতটুকু মুত্তাকী, আমার নামাজ-রোজা ঠিক ততটুকু কবুল হবে।
৩১: কেউ কেউ গুরুত্ব দিয়ে সিয়াম পালন করে, সলাত আদায়ে অতটা যত্নবান থাকে না। সিয়াম চতুর্থ রোকন। ইসলামের অন্যতম শক্তিশালী ও গুরুত্বপূর্ণ রোকন সলাত বাদ দিয়ে তাকওয়া কীভাবে অর্জিত হবে?
৩২: প্রথমে কথা শুরু হয়েছে (تَحَبُّب) ভালোবাসামাখা সম্বোধন দিয়ে (یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟)। শাসন করা তারেই সাজে. সোহাগ করে যে গো। ভালোবাসা দিয়ে দায়িত্ব পালনের (تَأكِيدْ) তাকিদ দিয়েছেন (كُتِبَ عَلَیۡكُمُ ٱلصِّیَامُ)।
৩৩: বাঁচতে হলে তাকওয়া অর্জন করতেই হবে। রোযা তাকওয়া অর্জনের শক্তিশালী মাধ্যম। মুত্তাকি নাহলে জান্নাতে প্রবেশ করা যাবে না,
تِلۡكَ ٱلۡجَنَّةُ ٱلَّتِی نُورِثُ مِنۡ عِبَادِنَا مَن كَانَ تَقِیّا
এটাই সেই জান্নাত, যার ওয়ারিশ বানাব আমার বান্দাদের মধ্যে যারা মুত্তাকী তাদেরকে (মারয়াম ৬৩)।
৩৪: রোযার মাধ্যমে যদি আমার তাকওয়া অর্জিত না হয়, তাহলে শুধু শরীরের শক্তিক্ষয়ই হবে।
৩৫: সূরা বাকারায় শরীয়তের বিধি-বিধান বর্ণনা করা হয়েছে। তোমাদের উপর ফরয করা হয়েছে (كُتِبَ عَلَیۡكُمُ) এই বাক্যটি এই সূরায় মোট চারবার বর্ণিত হয়েছে।
ক: যাদেরকে (ইচ্ছাকৃত অন্যায়ভাবে) হত্যা করা হয়েছে, তাদের ব্যাপারে তোমাদের প্রতি কিসাস (-এর বিধান) ফরয করা হয়েছে (كُتِبَ عَلَیۡكُمُ ٱلۡقِصَاصُ فِی ٱلۡقَتۡلَىۖ) ১৭৮।
খ: তোমাদের উপর ফরয করা হয়েছে যে, তোমাদের মধ্যে কেউ যদি অর্থ-সম্পদ রেখে যায়, তবে যখন তার মৃত্যুক্ষণ উপস্থিত হবে তখন সে ওসিয়ত করবে (كُتِبَ عَلَیۡكُمُ) ১৮০।
গ: তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে (كُتِبَ عَلَیۡكُمُ ٱلصِّیَامُ)।
ঘ: তোমাদের উপর কিতাল ফরয করা হয়েছে (كُتِبَ عَلَیۡكُمُ ٱلۡقِتَالُ) ২১৬।
৩৬: তাকওয়া শুধু রমযানেই বাকি এগারমাসও দরকার। রোজা তাকওয়া অর্জনের প্রধানতম মাধ্যম। প্রতি সপ্তাহে বা মাসে নিয়ম দু’তিনটা করে রোযা রাখা দরকার। তাকওয়ার জন্য। কলবের শুদ্ধির জন্য।
৩৭: মাহে রমাদান বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আসে। আত্মাকে পরিশুদ্ধ করার সুযোগ। আত্মাকে সব ধরনের মলিনতা থেকে মুক্ত করার সুযোগ। তাকওয়ার পথে যাবতীয় বাধাকে ডিঙ্গানোর সুযোগ।
৩৮: রমাদানে নেক আমল বেশি করতে না পারলেও, অন্তত বদআমল যেন না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা জরুরী।
৩৯: রমাদান এলে বারবার নিজেকে প্রশ্ন করা, নিজের মধ্যে তাকওয়ামুখী প্রবণতা কিছুটা হলেও বেড়েছে তো? আগের তুলনায় নিজের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে না?
৪০: তাকওয়া হল ঈমানের বিশেষ অবস্থা, যা বান্দাকে আল্লাহর সাথে জুড়ে রাখে। তাকওয়ার কারণে, তার কলবে সময় এমন এক ধরনের সচেতন বোধ জাগ্রত থাকে। এই বোধ তাকে আল্লাহ সন্তুষ্টি অর্জনে ও আল্লাহর অসন্তুষ্টি বর্জনে সচেষ্ট রাখে।
৪১: তাকওয়া চাই? রমাদানের শুরুতেই প্রতিজ্ঞা করে নেবো, আমি গোটামাস কাউকে কষ্ট দেব না। গুনাহের ধারেকাছে ঘেঁষব না। চোখের ছোট্ট একটা দৃষ্টি দিয়েও কাউকে বিরক্ত করব না।
৪২: শব্দপ্রয়োগের ক্ষেত্রে কুরআন কারীমের নিজস্ব ধরন আছে। স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য আছে। সিয়াম (صِيام) ও সাওম (صَوم) দু’টি শব্দ। কুরআন কারীমে প্রথমটি ব্যবহৃত হয়েছে প্রচলিত ‘রোযার’ অর্থে। দ্বিতীয়টি ব্যবহৃত হয়েছে (صَمت) ‘চুপ থাকা’ অর্থে। সামত ও সাওম এই ওযন। অর্থও এক। শুধু ওয়াও এবং ‘তা’-এ পার্থক্য।
إِنِّی نَذَرۡتُ لِلرَّحۡمَـٰنِ صَوۡما فَلَنۡ أُكَلِّمَ ٱلۡیَوۡمَ إِنسِیّا
আমি (মারয়াম) আজ দয়াময় আল্লাহর উদ্দেশ্যে একটি রোজা মানত করেছি। সুতরাং আজ আমি কোনও মানুষের সাথে কথা বলব না (মারয়াম ২৬)।
সাওম (ص و م) শব্দমূলের অর্থ হল বিরত থাকা (إمساك)। রোযা রাখা ও চুপ থাকা উভয় শব্দেই ‘বিরত থাকার’ অর্থ আছে।
৪৩: সিয়াম (صِيام) শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে সুনির্দিষ্ট ইবাদতের জন্য। শব্দটা দেখতে ও পড়তে সাওম (صَوم)-এর তুলনায় লম্বা। সিয়ামের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়ও লম্বা। রোজা রাখতে হলে, পানাহার পরিত্যাগ করা থেকে শুরু করে, আরও বহুকিছু লক্ষ্য রাখতে হয়। সময়ও দীর্ঘ, সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। সাওম মানে চুপ থাকার জন্য খুব বেশি বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখার প্রয়োজন নেই। এজন্য লম্বা ও বিস্তৃত ইবাদতের জন্য ‘সিয়াম’ ব্যবহৃত হয়েছে। সংক্ষিপ্ত বিষয়ের জন্য ‘খাটো’ সাওম ব্যবহৃত হয়েছে।
৪৪: তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করবে। তোমরা ভয় করে চলবে (تَتَّقُونَ)। কী ভয় করবে, কী থেকে বেঁচে থাকবে, সেটা ‘মুতলাক’ বা উন্মুক্ত রেখে দেয়া হয়েছে। বলা হয়নি (اتَّقُوا النارَ) তোমরা আগুন থেকে বেঁচে থাক। অথবা বলা হয়নি (اِتَّقُوْا رَبَّكُم) তোমর রবকে ভয় করো।
৪৫: কী থেকে বেঁচে থাকবে, সুনির্দিষ্টভাবে না বলাতে, রোযাদারের দায়িত্ব বেড়ে গেছে। সব ধরনের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকবে। রোযা ক্ষতি হয়, রোযাকে দুর্বল করে দেয়, এমন সব কাজকর্ম থেকে বেঁচে থাকবে। তাকওয়া অর্জনের জন্য যা যা করা দরকার, সবই করতে হবে।
৪৬: সূরা বাকারা বিধি-বিধানের সূরার পাশাপাশি, তাকওয়ার সূরাও বটে। তাকওয়া শব্দটির মূল হল ()। এই শব্দমূলটি পুরো বাকারায় সর্বমোট ৩৬ বার ব্যবহৃত হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা সূরা বাকারায় নানাভাবে তাকওয়ার কথা বলেছেন। তাকওয়ার তাকিদ দিয়েছেন।
৪৭: বাকারার সূচনাতে তাকওয়া (هُدى لِّلۡمُتَّقِینَ)। সিয়ামের আলোচনা শুরু হয়েছে তাকওয়ার আবহে। প্রায় সব জায়গাতেই তাকওয়াকে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। কোনও কিছুর সাথে সম্পৃক্ত করা হয়নি।
ক: পুণ্যবানদের তালিকা পেশ করার পর উপসংহার টানা হয়েছে (وَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡمُتَّقُونَ) এবং এরাই মুত্তাকী (১৭৭)।
খ: কিসাসের আলোচনা করে শেষে বলেছেন (لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ) আশা করা যায় তোমরা (্এর বিরুদ্ধাচরণ) পরিহার করবে (১৭৯)।
গ: ওসিয়তের আলোচনা শেষে বলেছেন (حَقًّا عَلَى ٱلۡمُتَّقِینَ) এটা মুত্তাকীদের অবশ্য কর্তব্য ১৮০।
ঘ: সিয়ামের আলোচনাতে দুইবার তাকওয়ার কথা বলেছেন। একবার (لَعَلَّكُمۡ تَتَّقُونَ) আরেকবার (لَعَلَّهُمۡ یَتَّقُونَ)।
ঙ: তারপর পবিত্র মাসসমূহের আলোচনা শেষ করে বলেছেন (وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ وَٱعۡلَمُوۤا۟ أَنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلۡمُتَّقِینَ) আর আল্লাহকে ভয় করে চলো এবং জেনে রেখ, আল্লাহ তাদেররই সঙ্গে থাকেন, যারা (নিজেদের অন্তরে তাঁর) ভয় রাখে ১৯৪।
৪৮: তাকওয়া মানে নিজেকে গুনাহ থেকে বাঁচিয়ে রাখা। মুত্তাকী মানে, যে নিজেকে গুনাহের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। কারো কারো মতে, আল্লাহ যেখানে যেতে বা যা করতে নিষেধ করেছেন, সেখানে না যাওয়া বা সেটা না করা। আল্লাহ আমাকে যেখানে যেতে বা যেখানে থাকতে আদেশ করেছেন, সেখানে আমি অনুপস্থিত না থাকা।
৪৯: আল্লাহ তা‘আলা (یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟) ‘হে মুমিনগণ’ বলে, নিজেই সরাসরি বান্দাকে সম্বোধন করেছেন। নবীর মাধ্যমে বলাননি (قُلْ یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟) হে নবী, আপনি বলে দিন, হে মুমিনগণ’! রোযা গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। বান্দাকে সরাসরি সম্বোধন করে গুরুত্ব বোঝানো হয়েছে। পাশাপাশি বান্দার গুরুত্বও বোঝানো হয়েছে।
৫০: কুরআন কারীমে কাতাবা (كَتَب) ক্রিয়াটির ব্যবহার নিয়ে কয়েকটি বিষয় জানা থাকলে আয়াতসমূহের মাফহুম (অন্তর্নিহিত অর্থ) বুঝতে সহজ হবে,
ক: লাম (ل) সহযোগে। বান্দার অনুকূল বা উপকারী কিছু বোঝাবে।
খ: আলা (على) সহযোগে। বান্দার উপর আবশ্যক বা ফরয (أَلْزَمَ وجب فرَضَ) কিছু বোঝায়।
গ: কাতাবা (كَتَب) ক্রিয়াটি (مَعرُوف) কর্তৃবাচক হবে। ‘কাতাবা’ ক্রিয়া ব্যবহার করে, আল্লাহ তা‘আলা বান্দার অনুকূল কল্যাণকর ও পছন্দনীয় বিষয় প্রকাশ করেন,
وَٱبۡتَغُوا۟ مَا كَتَبَ ٱللَّهُ لَكُمۡۚ
এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা-কিছু লিখে রেখেছেন তা সন্ধান করর (বাকারা ১৮৭)।
২: আরেকটি আয়াত দেখি,
كَتَبَ عَلَىٰ نَفۡسِهِ ٱلرَّحۡمَةَۚ
তিনি রহমতকে নিজের প্রতি অবশ্য কর্তব্যরূপে স্থির করে নিয়েছেন (আন‘আম ১২)।
৩: কিন্তু আল্লাহ তোমাদের অন্তরে ঈমানের ভালোবাসা সঞ্চার করেছেন এবং তাকে তোমাদের অন্তরে করে দিয়েছেন আকর্ষণীয় (হুজুরাত ৭),
وَلَـٰكِنَّ ٱللَّهَ حَبَّبَ إِلَیۡكُمُ ٱلۡإِیمَـٰنَ وَزَیَّنَهُۥ فِی قُلُوبِكُمۡ
৪: আর আমার রহমত, সে তো প্রত্যেক বস্তুতে ব্যাপ্ত। সুতরাং আমি এ রহমত (পরিপূর্ণভাবে) সেই সব লোকের জন্য লিখব, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, যাকাত দেয় এবং যারা আমার আয়াতসমূহে ঈমান রাখে (আ‘রাফ ১৫৬)।
وَرَحۡمَتِی وَسِعَتۡ كُلَّ شَیۡءࣲۚ فَسَأَكۡتُبُهَا لِلَّذِینَ یَتَّقُونَ وَیُؤۡتُونَ ٱلزَّكَوٰةَ وَٱلَّذِینَ هُم بِـَٔایَـٰتِنَا یُؤۡمِنُونَ
ঘ: কুতিবা (كُتِب) ক্রিয়াটি (مَجهول) কর্মবাচক হলে, বান্দার অপছন্দনীয়, কষ্টকর ও কঠিন বিষয় প্রকাশ করা হয়। এ-ধরনের কাজকে আল্লাহ সরাসরি নিজের দিকে সম্পৃক্ত করে প্রকাশ করেন না,
১: তোমাদের উপর সিয়াম ফরয করা হয়েছে,
كُتِبَ عَلَیۡكُمُ ٱلصِّیَامُ
২: তোমাদের উপর কিতাল ফরয করা হয়েছে, আর তা তোমাদের কাছে অপ্রিয় (বাকারা ২১৬),
كُتِبَ عَلَیۡكُمُ ٱلۡقِتَالُ وَهُوَ كُرۡه لَّكُمۡۖ
৩: তোমাদের উপর কিসাস ফরয করা হয়েছে (বাকারা ১৭৮),
كُتِبَ عَلَیۡكُمُ ٱلۡقِصَاصُ
ঙ: মানুষের জন্য ওই সকল বস্তুর আসক্তিকে মনোরম করা হয়েছে, যা তার প্রবৃত্তির চাহিদা মোতাবেক (আলে ইমরান ১৪),
زُیِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ ٱلشَّهَوَ ٰتِ
চ: আরও লক্ষ্যণীয় বিষয়, প্রশংসামূলক স্থানে আল্লাহ বলেছেন (ءَاتَیۡنَـٰهُمُ ٱلۡكِتَـٰبَ) আমি তাদেরকে কিতাব দিয়েছি। নিন্দামূলক স্থানে বলেছেন (أُوتُوا۟ ٱلۡكِتَـٰبَ) তাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে।
৫১: একটি আয়াত নিয়ে প্রশ্ন উদ্রেক হতে পারে,
وَكَتَبۡنَا عَلَیۡهِمۡ فِیهَاۤ أَنَّ ٱلنَّفۡسَ بِٱلنَّفۡسِ وَٱلۡعَیۡنَ بِٱلۡعَیۡنِ
এবং আমি তাতে (তাওরাতে) তাদের (বনী ইসরায়েলের) জন্য বিধান লিখে দিয়েছিলাম যে, প্রাণের বদলে প্রাণ, চোখের বদলে চোখ (মায়িদা ৪৫)।
নবী ইসরায়েল নিজেরাই বিধানকে কঠিন করে তুলেছিল। ফলশ্রুতিতে আল্লাহ তা‘আলাও কঠিন করে দিয়েছেন।
৫২: সিয়ামের মূল নির্যাস যদি ‘তাকওয়া’ হয়, তাহলে সিয়ামের মূল ভিত্তি হল ‘সবর’। আগে ও পরের আয়াতগুলোর দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, সিয়ামের আলোচনা মোটাদাগে দু’টি বিষয়ের আবহে গড়ে উঠেছে,
ক: তাকওয়া।
খ: সবর।
৫৩: হাদীসে আছে (الصَّومُ نِصفُ الصَّبْر) সওম সবরের অর্ধেক (তিরমিযী ৩৫১৯)। আরেক হাদীসে আছে (الصبر نصف الإيمان) সবর ঈমানের অর্ধেক (ইবনে মাসউদ রা. হাকেম ৩৬৬৬)।
৫৪: সবর, সওম ও ঈমান তিনটি একসূত্রে গাঁথা,
ক: পুণ্য ও পুণ্যবানদের আলোচনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে (وَٱلصَّـٰبِرِینَ فِی ٱلۡبَأۡسَاۤءِ وَٱلضَّرَّاۤءِ وَحِینَ ٱلۡبَأۡسِۗ) এবং সঙ্কটে, কষ্টে ও যুদ্ধকালে ধৈর্যধারণ করে (বাকারা ১৭৭)।
খ: ১৭৮-তম আয়াতে কিসাসের আলোচনা করা হয়েছে। কিসাস বাস্তবায়নে সবরের প্রয়োজন হয়।
গ: ১৮০-তম আয়াতে মৃত্যুপথযাত্রীকে ওসিয়তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই বিধানও সবরের দাবি রাখে।
ঘ: ১৯০-তম আয়াতে কিতালের কথা বলা হয়েছে (وَقَـٰتِلُوا۟ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِ ٱلَّذِینَ یُقَـٰتِلُونَكُمۡ) যারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে, তোমরা আল্লাহর পথে তাদের সাথে যুদ্ধ কর।
ঙ: ১৯১-তম আয়াতে বলা হয়েছে (وَٱقۡتُلُوهُمۡ حَیۡثُ ثَقِفۡتُمُوهُمۡ) তোমরা তাদেরকে যেখানে পাও হত্যা কর।
চ: ১৯৩-তম আয়াতে বলা হয়েছে (وَقَـٰتِلُوهُمۡ حَتَّىٰ لَا تَكُونَ فِتۡنَة) তোমরা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে থাক, যতক্ষণ না ফিতনা খতম হয়ে যায়।
জ: ১৯৭-তম আয়াতে বলা হয়েছে (الحَجَّ أشهُرٌ معلوماتٌ) হজ্জের নির্দিষ্ট কয়েকটি মাস আছে।
ঝ: অসুস্থ হলে, হাজী ও রোযাদার উভয়ের জন্য ফিদইয়ার বিধান দেয়া হয়েছে।
৫৫: হজ-কিতাল-সিয়াম, প্রতিটি ইবাদতই সবরের উপর নির্ভরশীল। তিনটির আলোচনাও পাশাপাশি করা হয়েছে।