যে শহরে মসজিদ নিষিদ্ধ

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

জুন ২৬ ২০১৯, ১৩:৫৫

আবির আবরার:

একদল মুসলিম এখন এই শহরে মসজিদ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছে, যা খ্রিস্টান ধর্মীয় নেতারা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা বলছেন এর চেয়ে বরং মৃত্যুই তাদের কাছে শ্রেয়।

“আকসুম আমাদের মক্কা, ইসলামের পবিত্র স্থানগুলোতে যেমন গির্জা নিষিদ্ধ তেমনি আকসুমেও কোনো মসজিদ থাকতে পারে না। আকসুম একটি পবিত্র স্থান। সিটি অফ মনেস্ট্রি। এখানে কেউ যদি মসজিদ নির্মাণ করতে আসেন তাহলে আমরা মরব। কখনোই এটা মেনে নেয়া হবে না। আমাদের জীবদ্দশায় এটা আমরা অনুমোদন করবো না”। বলছিলেন সিনিয়র ধর্মীয় নেতা গডেফা মেরহা।

যদিও ‘জাস্টিস ফর আকসুম মুসলিম’ ব্যানার নিয়ে একদল মুসলিম ব্যাপক প্রচারণা চালাচ্ছেন। তারা বলছেন মসজিদ নির্মাণ ও প্রার্থনার সুযোগ পাওয়া তাদের অধিকার।

যদিও সেখানকার অনেকে বিশ্বাস করেন যে, এ বিতর্ক অর্থহীন কারণ প্রাচীন এ শহরটি অনাদিকাল থেকেই ধর্মীয় সহনশীলতার জন্য সুপরিচিত।

ধর্ম দুটির অনুসারীদের মতে, ইসলামের সূচনালগ্নে মক্কায় অমুসলিম শাসকদের অত্যাচারে পালিয়ে প্রথম মুসলিমরা এসেছিলো এই শহরে। তখনকার খ্রিস্টান রাজা তখন তাদের স্বাগত জানিয়েছিলেন। আর মূলত আরব উপত্যকার বাইরে এটাই ছিলো মুসলিমদের প্রথম কোনো উপস্থিতি।

এখন আকসুমের ৭৩ হাজার অধিবাসীর দশ শতাংশই মুসলিম। আর ৮৫ ভাগ হলো অর্থোডক্স খ্রিস্টান। আর পাঁচ শতাংশ খ্রিস্টান ধর্মের অন্য ধারার অনুসারী।

মুসলিমদেরকে বাইরে প্রার্থনায় বাধ্য করা হচ্ছে

শহরের মুসলিমদের একজন ৪০ বছর বয়সী আব্দু মোহাম্মেদ আলী। তিনি বলছেন- “খ্রিস্টানদের একটি বাড়িই আমরা কয়েক প্রজন্ম ধরে প্রার্থনার জন্য ব্যবহার করে আসছি। আমাদের তেরটি অস্থায়ী মসজিদ আছে। শুক্রবারে আমরা যদি মাইক ব্যবহার করি তাহলে তারা বলে যে, আমরা সেন্ট ম্যারিকে অসম্মান করছি”।

চিকিৎসক আজিজ মোহাম্মেদ প্রায় বিশ বছর ধরে আকসুমে বাস করছেন। তিনি বলছেন- “এখানে আমরা মুসলিম ও খ্রিস্টানরা একসাথেই বাস করি। খ্রিস্টানরা বাধা দেয় না কিন্তু বহু বছর ধরেই আমরা রাস্তায় প্রার্থনা করছি। আমাদের একটি মসজিদ দরকার”।

তবে অনেকেই আশা করছেন সম্রাট হেইলি সেলাসিসের সরকার একটি সমঝোতা তৈরি করতে পারবেন। কেননা এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী আবিই আহমেদের বাবা একজন মুসলিম ছিলেন আর মা খ্রিস্টান।

রিজিওনাল কাউন্সিল অফ মুসলিম বলছে তারা খ্রিস্টানদের সাথে আলোচনা করবেন। “আমরা আশা করি খ্রিস্টানরা মসজিদ নির্মাণে সহায়তাই করবেন,” বলছিলেন কাউন্সিল কর্মকর্তা মোহাম্মদ কাহসে।

সূত্র: বিবিসি