যে কারনে দেশের তাপমাত্রা হঠাৎ বেড়ে গেছে

একুশে জার্নাল

একুশে জার্নাল

মে ২৭ ২০১৮, ১৮:১৭

আবহাওয়াটা কোন ভাবেই শরীরের সাথে যাচ্ছে না, কেমন যেন ভ্যাপসা গরম। রাজশাহী ও খুলনা বিভাগ থেকে তাপদাহের খবর পাওয়া গেছে আগেই। কিন্তু রাজধানীতে প্রভাব পরেছে হঠাৎ করেই। বন্ধ হয়ে গেছে বৃষ্টিও। দেশের অল্প কয়েকটি স্থান ছাড়াও কোথাও বৃষ্টিপাত হয়নি। সোমবারও এই ধারাবাহিকতা অভ্যাহত থাকবে বলে আবহাওয়া অফিস থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে।

হঠাৎ তাপদাহের প্রভাবে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের হারও বেড়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষ ব্যাপকভাবে ডায়রিযায় আক্রান্ত হচ্ছে। মহাখালীর আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে রোববার রাতেও শতাধিক রোগী এসেছে ডায়রিয়ায় আক্রান্তও হয়ে। তাপ বেশি উঠে যাওয়ার সাথে সাথে হিটস্ট্রোকেও আক্রান্ত হচ্ছেন বয়স্করা।

আবহাওয়া অফিস বলছে, এ সময়টা আবহাওয়া পরিবর্তনের সময়। একটা নির্দিষ্ট ধরনের আবহাওয়া থেকে শিগগিরই আরেকটি ভিন্ন ধরনের আবহাওয়ায় প্রবেশ করবে এ অঞ্চল। প্রতি বছর মে মাসের শেষ সপ্তাহে আবহাওয়াটা এমনই থাকে। হয়তো তীব্র তাপ প্রবাহে শুকিয়ে যায় চরাচর। না হয় নিম্নচাপ থেকে ঘুর্ণিঝড়ে রূপ নেয়ার আগে ব্যাপক গরম পড়ে। গত বছর (২০১৭) ৮, ২১ ও ২২ মে মৃদু তাপ প্রবাহের কবলে ছিল দেশের কয়েকটি অঞ্চল। এটা কেটে যেতে না যেতেই ২৮ মে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয় নিম্নচাপ এবং ২৯ মে এটা ঘুর্ণিঝড় ‘মোরা’ সৃষ্টি হয় এবং সেদিনই আঘাত হানে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূলে।

আবহাওয়াবিদেরা জানিয়েছেন, জুন মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই বৃষ্টি-বাদলা নিয়ে বাংলাদেশে মওসুমী বায়ু প্রবেশ করে। এ বছরও প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই মওসুমী বায়ু চলে আসতে পারে। কারণ এখন পর্যন্ত মওসুমী বায়ুর বাংলাদেশের দিকে আসতে কোনো বাধা সৃষ্টি হতে পারে এমন কিছু বঙ্গোপসাগরে নেই। এখনে পর্যন্ত কোনো নিম্নচাপ অথবা কোনো ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়নি। ঘুর্ণিঝড় সাধারণত: মওসুমী বায়ুর স্বাভাবিক প্রবাহে বাধার সৃষ্টি করে থাকে। ইতোমধ্যে আন্দামান সাগর উপকূল থেকে পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর ছুয়েছে মওসুমী বায়ু বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

আবহাওয়া অফিস পূর্বাভাস দিয়েছিল চলতি মাসে দুটি নিম্নচাপ ও এবং এটা থেকে কমপক্ষে একটি ঘুর্ণিঝড়ের। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আবহাওয়া হয়তো এ মাসে এতো চরম রূপ নাও নিতে পারে। কোনো নিম্নচাপ অথবা কোনো ঘুর্ণিঝড় সৃষ্টির আলামত এখনো তৈরী হয়নি। অবশ্য বঙ্গোপসাগরে ঘুর্ণিঝড় সৃষ্টি না হলেও পাশবর্তি আরব সাগরে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড় ‘মেকুনু’ ওমানে ও সৌদি আরবের দাহরানে আঘাত করেছে। সমুদ্রের পানি উপকূল ছাড়িয়ে রাস্তায় উঠে গাড়িসহ অন্যান্য সম্পদ ভাসিয়ে নিয়ে গেছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুসারে আজ আবহাওয়ার এ অবস্থা কমপক্ষে আরো দু’দিন অব্যাহত থাকতে পারে। তবে আগামী পাঁচ দিনের মাথায় আবারো শুরু হতে পারে বৃষ্টিপাত।

রোববার খুলনা বিভাগের সর্বত্রই তাপমাত্রা দেশের অন্যান্য এলাকার চেয়ে বেশি ছিল। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানী ঢাকায় রোববার সের্বাচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীতে গরমের সাথে প্রচুর ঘাম হচ্ছে বলে আবহাওয়াটা একেবারে অসহ্য ঠেকছে মানুষের কারছে।

বিশিষ্ট শিশু চিকিৎসক ডা. মোঃ আতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, প্রচন্ড গরমে ঘন ঘন পানি পান করতে হবে। সেটা অবশ্যই বিশুদ্ধ পানি হতে হবে। তা নাহলে ডায়রিয়া হয়ে যেতে পারে। বাসি খাবারও খাওয়া যাবে না।