যুব জমিয়তের জাতীয় সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত
একুশে জার্নাল ডটকম
অক্টোবর ১৩ ২০২২, ২২:০৪
সভাপতি মাওলানা তাফহীমুল হক, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইসহাক কামাল
যুব জমিয়ত বাংলাদেশের জাতীয় সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে মাওলানা তাফহীমুল হককে সভাপতি, মাওলানা ইসহাক কামালকে সাধারণ সম্পাদক ও চৌধুরী নাসীর আহমদকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে আগামী সেশনের জন্য তিন বছর মেয়াদি ৬১ সদস্যবিশিষ্ট যুব জমিয়ত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়।
আজ (১৩ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণ শাহজাহানপুরস্থ মাহবুব আলী ইনস্টিটিউটে এ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়।
মাওলানা তাফহীমুল হকের সভাপতিত্বে এবং মাওলানা ইসহাক কামাল ও মাওলানা রুহুল আমীন নগরীর যৌথ পরিচালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জমিয়ত মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী। আরো বক্তব্য রাখেন, সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী, যুগ্মমহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মাওলানা মতিউর রহমান গাজিপুরী, সহকারী মহাসচিব মাওলানা জিয়াউল হক কাসেমী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী নাসীরুদ্দীন খান, মাওলানা তৈয়বুর রহমান চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন, শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুফতী জাবের কাসেমী, যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতী বশীরুল হাসান খাদিমানী, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মুফতী মাহবুবুল আলম, মুফতী গোলাম মাওলা, মাওলানা হাবীবুল্লাহ মাহমূদ কাসেমী, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মাওলানা কবীর আহমদ, মাওলানা আব্দুল্লাহ আল বাক্বী, মাওলানা সাইফুদ্দীন ইউসুফ ফাহীম ও মাওলানা সুলাইমান মাদানী প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে গঠনমূলক সমালোচনা এবং অন্যায়ের প্রতিবাদ করার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। তাই জমিয়ত পারস্পরিক কাঁদা ছুড়াছুড়ি পরিহার করে মহান আল্লাহর উপর বিশ্বাস রেখে এবং তাঁর হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রদর্শিত পথে ঈমানী দায়িত্ববোধ ও দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসছে। আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। সরকারের জনকল্যাণকর পদক্ষেপসমূহকে আমরা সাধুবাদ জানাই কিন্তু সরকারের কোন সিদ্ধান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের বিপক্ষে গেলে আমরা তার প্রতিবাদ অতীতেও করেছি এবং আগামীতেও করে যাবো। ইনশাআল্লাহ। আমরা আজও সরকারকে পরিস্কার ভাষায় বলতে চাই দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ করুন এবং দুর্নীতির মাধ্যমে বিদেশে পাচারকৃত টাকা অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে আনুন! জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ সর্বদা ইসলাম, দেশ ও মানবতার সেবায় নিবেদিত। করোনা মহামারি, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কুড়িগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোসহ সকল প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয়ে এদেশের জনগণ আমাদেরকে পাশে পেয়েছে এবং ভবিষ্যতেও পাবে। ইনশাআল্লাহ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুব জমিয়ত নেতাদের উদ্দেশ্য করে মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেন, যুব জমিয়ত কর্মীদের চরিত্রবান হতে হবে। চরিত্রহীন হাজারো কর্মীর চেয়ে চরিত্রবান একজন কর্মী অনেক ভালো। যাদের চরিত্র ঠিক নেই তাদের রাজনীতি এবং সমাজের নেতৃত্ব দেয়ার অধিকার নেই। এজন্য যুব জমিয়তের প্রতিটি কর্মীকে মানুষের আস্থাভাজন এবং চরিত্রবান হতে হবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সহিত আদায় করতে হবে। কোন ব্যস্ততা এবং প্রোগ্রামের কারণে যেন নামাজ মিস না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেন, এই দেশ আওয়ামী লীগ, বিএনপি আর জাতীয় পার্টির পৈত্রিক কোন সম্পত্তি নয়। আমাদের পূর্বসূরীরা ১৯০ বছরের গোলামী থেকে এই দেশ স্বাধীন করেছেন। আমাদের আকাবিররা যদি উপমহাদেশ স্বাধীন না করতেন তাহলে এই দেশ স্বাধীন হতো না৷ এজন্য স্থানীয় নির্বাচন থেকে নিয়ে জাতীয় নির্বাচনে আলেমদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। আজকে দেখা যায় উলামায়ে কেরাম আওয়ামীলীগ, বিএনপি আর জাতীয় পার্টির হাতে দেশকে ছেড়ে দিয়ে মসজিদ-মাদরাসার চার দেয়ালে নিরিবিলি বসে আছে। অথচ আলেমদের উচিত ছিলো এই দেশে আধিপত্য বিস্তার করে মালিকানার মনোভাব নিয়ে চলাফেরা করা। যদি আমরা মসজিদ-মাদরাসায় নিরিবিলি বসে থাকি আর সমাজের নেতৃত্বে এগিয়ে না আসি তাহলে এই দেশ, এই সমাজ দূর্নীতিবাজরা গ্রাস করে নিবে। এজন্য আলেমদের জাতীয় কাজে এগিয়ে আসা ও নেতৃত্ব দেয়ার আহবান জানান তিনি।
মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, জমিয়ত ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বপ্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী একটি রাজনৈতিক দল। এ দলটি ইসলামী তাহযীব-তামাদ্দুন ধারণ করে নৈতিকতার শিক্ষা ও রাজনৈতিক চর্চার একটি শক্তিশালী প্লাটফর্ম হিসেবে সুপরিচিত। একই সাথে দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামা-মাশায়েখ দ্বারা পরিচালিত ও ধর্মপ্রাণ মানুষ সমর্থিত এ দল নিজস্ব স্বকীয়তা বজায় রেখে সকল অন্যায়ের প্রতিবাদকারী একটি রাজনৈতিক দল। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ দেশের সাধারণ মানুষের সার্বিক কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। একটি ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল হিসেবে জমিয়ত অতীতের প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে এবং জনগণের সমর্থন পেয়েছে।