যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপাচি হেলিকপ্টার কিনতে আগ্রহ বাংলাদেশের
একুশে জার্নাল
জানুয়ারি ২৪ ২০২০, ১৬:১২
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বিমান নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের কাছ থেকে অ্যাপাচি যুদ্ধ হেলিকপ্টার কেনার ব্যাপারে ‘সংক্ষিপ্ত তালিকা’ করেছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বোয়িং কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে একথা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এএইচ-সিক্সফোরই মডেলের হেলিকপ্টার কেনার আগ্রহ বাংলাদেশের। তুলনামুলক কম মূল্য ও সক্ষমতার বিবেচনায় এটি কিনতে ঢাকার আগ্রহ।
সংক্ষিপ্ত তালিকা বা কর্মসূচি সম্পর্কে মন্তব্য না করতে চেয়ে বোয়িংয়ে আন্তর্জাতিক বিক্রয় যোগাযোগ এর মুখপাত্র মার্সিয়া কস্টলি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাংলাদেশ বিমান বাহিনী যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মাধ্যমে বোয়িংয়ের কাছ থেকে এএইচ-সিক্সফোরই কেনার যে আগ্রহ দেখিয়েছে তাতে বোয়িংও বিক্রয়ে আগ্রহী।’
তিনি বলেন, এই ক্রয় হবে মূলত সরকারের সঙ্গে সরকারের বৈদেশিক সামরিক বিক্রয়। এই প্রক্রিয়ায় এগিয়ে গেলে বোয়িং সহায়তা করতে প্রস্তুত।
যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সামরিক বিক্রয় (এফএমএস) কর্মসূচির আওতায় দেশটি বিদেশি বিভিন্ন সরকারের কাছে অস্ত্র, প্রতিরক্ষা সামগ্রী ও সেবা এবং সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। এই প্রক্রিয়ার জন্য আগে কংগ্রেসের অনুমতিও নিতে হয়। ওই কর্মকর্তা বলেন, এখনও সেই পর্যায়ে আলোচনা যায়নি।
অ্যাপাচি হেলিকপ্টারের মূল্য ও কতটি কিনতে বাংলাদেশ আগ্রহ দেখিয়েছে তা সম্পর্কে কিছু বলতে চাননি বোয়িং মুখপাত্র।
অ্যাপাচি হেলিকপ্টারের জন্য বাংলাদেশের এই ‘সংক্ষিপ্ত তালিকা’ করার খবর প্রথম প্রকাশ করেছিল জেন’স ডিফেন্স উইকলি সাময়িকির এক প্রতিবেদনে। তাতে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে অ্যাপাচি হেলিকপ্টার ক্রয়ের বিষয়ে বাংলাদেশ প্রাথমিক আলোচনা শুরু করে এবং দুটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তিগুলো হলো, অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড ক্রস ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস অ্যাগ্রিমেন্ট (এসিএসএ) এবং জেনারেল সিকিউরিটি অব ইনফরমেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (জিএসএমআইএ)।
এসিএসএ মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলো বা জোটমিত্র দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতার ভিত্তিতে হয়ে থাকে। এই চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র সেনাবাহিনী খাবার, জ্বালানি, পরিবহন, গুলি ও সরঞ্জাম বিনিময় করে থাকে। তবে চুক্তিতে কোনো অবস্থাতেই যুক্তরাষ্ট্র সামরিক পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দেয় না। ভারত ও শ্রীলঙ্কাসহ ১০০টিরও বেশি দেশের সঙ্গে এই চুক্তি আছে যুক্তরাষ্ট্রের।
আর জিএসএমআইএ এমন এক দ্বিপাক্ষিক চুক্তি যেটির আওতায় আরও বৃহৎ পরিসরে সহযোগিতা ও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের অনুমতি দেয়।
চুক্তি দুটি চূড়ান্ত হতে দুই থেকে চার বছর সময় লেগে যায়। তবে এই সময়ের মধ্যে মরিক সরঞ্জাম কেনার ব্যাপারে আলোচনা চালানো যায়।
বর্তমানে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় করে চীনের কাছ থেকে। তবে এই উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সামরিক সম্পর্ক আরও জোরদার হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।