যশোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ
একুশে জার্নাল ডটকম
এপ্রিল ১১ ২০২০, ১৫:২৫

মহামারী করোনাভাইরাসের মধ্যে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৪ ঘন্টায় এ হাসপাতালে ২ রোগী জন মারা গেছে।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রিয়া খাতুন (১৮) নামে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়। বেলা ১১টার দিকে নিজ বাড়িতে গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করে প্রিয়া খাতুন। পরে দুপুরে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়। প্রিয়া খাতুন যশোরের মনিরামপুর উপজেলার মল্লিকপুরের কামরুল ইসলামের কন্যা ও ঝাঁপা শহীদ স্মরণী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।
তার দাদা গ্রাম্য চিকিৎসক । শামসুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালে ভর্তি করে তিনি রোগীর দেখভাল করেছেন। কিন্তু ভাল চিকিৎসা পাওয়া যায়নি। ডাঃ কে কল দেওয়ার কথা বললে তার সাথে খারাপ ব্যবহার করেন নার্স এবং আপনি ডেকে আনেন। এখন চিকিৎসকের কাছে রোগীর টিকিট নিয়ে যাওয়ার জন্য টিকিট চাওয়া হলে সেবিকা সরকারি টিকিট দেয়া যাবে না বলে জানায়। এভাবে চিকিৎসার অভাবে প্রিয়া খাতুনের মৃত্যু হয়। কিন্তু চিকিৎসকের অভাবে সঠিক চিকিৎসা পাওয়া যায়নি বলে শামছুর রহমান জানান। এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে যশোর করোনারী কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) মৃত্যু হয় আহসানুল ইসলাম (৫০) নামে বেনাপোল রেলওয়ে কর্মচারীর। তিনি নড়াইলের নড়াগাতি থানার ওসি রোকসানা খাতুনের স্বামী। থাকেন যশোর কোতয়ালি থানার স্টাফ কোয়ার্টারে। এদিন সকাল ৭টা ৩৫ মিনিটে তাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। মৃত্যুর ১০ মিনিট আগে তাকে করোনারী কেয়ার ইউনিটে রিসিভ করা হয় বলে ভর্তি টিকিটে উল্লেখ করা হয়। ইন্টার্ন ডা. সোহান তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তাকে ভর্তির পর চিকিৎসা দিয়ে ডা. সোহান চলে যান। মৃত্যের স্ত্রী রোকসানা খাতুন জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়েছে। অথচ, সকাল ৯টার দিকে এসে ডা. সোবহান সময় কমিয়ে সকাল ৮টা ২০ মিনিটে উল্লেখ করেছে। রোগী ভর্তির করার পর পর তাকে ইসিজি করা হযনি। অক্সিজেন দেয়া হয়নি। এ সময় বিশেষজ্ঞ কোন চিকিৎসক এসে তাকে চিকিৎসা দেয়নি বলে অভিযোগ করেন ওসি রোকসানা খাতুন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সালাউদ্দিন সিকদারসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপ কুমার রায়ের কাছে যান এবং চিকিৎসার অবহেলার বিষয়টি জানান।
পরে ডা. দিলীপ কুমার রায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, রোগী ওয়ার্ডে পৌঁছানো এবং মৃত্যুর সময়ের ব্যবধান ১০ মিনিট। চিকিৎসক টিকিটে তার চিকিৎসা দিয়েছেন। চিকিৎসায় ত্রুটি নেই। তবে সময় মতো অক্সিজেন কিংবা অন্য কিছু দিয়েছেন কি-না তা যাচাই করা হবে। তদন্ত শেষে যদি কারো দায়িত্ব পালনে অবহেলা থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।