মোদির প্রশংসা করে ভারতকে ‘পরীক্ষিত বন্ধু’ বললেন প্রধানমন্ত্রী

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

সেপ্টেম্বর ০৪ ২০২২, ২১:৩০

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত শুরুর পর পূর্ব ইউরোপে আটকে পড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের নেয়া উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতকে ‘পরীক্ষিত’ বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, প্রয়োজনের সময় ভারত বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। শুধু ১৯৭১ সালে নয়, পরবর্তী সময়েও।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ভারতের অবদান আমরা সব সময় স্মরণ করি। এছাড়াও ১৯৭৫ সালে যখন আমার পরিবারের সব সদস্যকে হারিয়েছিলাম, দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আমাদের ভারতে আশ্রয় দিয়েছিলেন। এ দুটি দেশ (ভারত-বাংলাদেশ), আমরা প্রতিবেশী এবং ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী। আমি সব সময় আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বকে গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার দেই।

শেখ হাসিনা বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক তাদের নাগরিকদের উন্নতির জন্য হওয়া উচিত।

তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতিকে (রাম নাথ কোবিন্দ) ধন্যবাদ জানাই। আমাদের জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের ৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে তারা দুজনই বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন।

সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) ভারত সফরে যাওয়ার আগে দেশটির শীর্ষস্থানীয় বার্তা সংস্থা এএনআই-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

করোনা মহামারি যখন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছিল তখন ভ্যাকসিন মৈত্রী কর্মসূচির আওতায় প্রতিবেশী দেশগুলোতে করোনার টিকা সরবরাহে মোদি সরকারের উদ্যোগেরও প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা।

এসময় দুই প্রতিবেশীর (ভারত-বাংলাদেশ) মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, মতপার্থক্য থাকতে পারে। তবে আলোচনার মাধ্যমে এগুলো সমাধান করা উচিত। আর বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে ভারত এবং বাংলাদেশ ঠিক তা-ই করেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবশ্য প্রশংসার জন্য বিশেষ দুটি ক্ষেত্র চিহ্নিত করেছেন, যেখানে ভারত সরকার বাংলাদেশকে সহায়তা করেছে। এর মধ্যে একটি ছিল বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নেয়া, যারা সংঘাত শুরু হওয়ার পর ভারতীয় অনেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে ইউক্রেন এবং এর প্রতিবেশী দেশগুলোতে আটকে পড়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি সত্যিই প্রধানমন্ত্রীকে (নরেন্দ্র মোদি) ধন্যবাদ জানাতে চাই। কারণ রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর আমাদের অনেক শিক্ষার্থী আটকে পড়েছিল এবং তারা পোল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছিল। সেখান থেকে ভারত সরকার যখন ভারতীয় শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নেয়, তখন তারা আমাদের ছাত্রছাত্রীদেরও ফিরিয়ে আনে। এটা স্পষ্টভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উদাহরণ। এ উদ্যোগের জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীকে (নরেন্দ্র মোদি) ধন্যবাদ জানাই।

ভারত সরকারের ভ্যাকসিন মৈত্রী কর্মসূচি সম্পর্কে অন্য এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, এটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেয়া একটি অত্যন্ত ‘বিচক্ষণ’ উদ্যোগ। আমি সত্যিই এ উদ্যোগের জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদিকে ধন্যবাদ জানাই। এ কর্মসূচির মাধ্যমে তিনি শুধুমাত্র বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার আরও কিছু দেশকে টিকা দিয়েছেন এবং এটি সত্যিই খুব সহায়ক ছিল।

বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচি সম্পর্কেও বিস্তারিত জানান শেখ হাসিনা। এএনআইকে তিনি বলেন, আমাদের দেশে বিশেষ করে গ্রাম পর্যায়ে, এমনকি শহরেও আমি অনেককে দেখেছি যারা টিকা নিতে খুব অনাগ্রহী ছিল। কিন্তু আমরা তাদের বুঝিয়েছি। আমরা তাদের বলেছি যে এটি (টিকা) আপনাদের জীবন রক্ষা করবে। এভাবে আমরা সবাইকে টিকাদান কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত করেছি। ভ্যাকসিন মৈত্রী সত্যিই খুব ভালো উদ্যোগ ছিল। আমি এটা সমর্থন করি।