মেরাজের শ্রেষ্ঠ উপহার নামাজ

একুশে জার্নাল ডটকম

একুশে জার্নাল ডটকম

মার্চ ১১ ২০১৯, ১৮:৪৬

আশরাফ আলম কাসেমী:: হিজরী সনের চলমান মাস হলো রজব। এটি হিজরী সনের সপ্তম মাস। বেশ কিছু দিক থেকে এই মাসটি একক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী।
যেমন-
১. মেরাজের ঘটনা
২. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ
৩. যুদ্ধ-বিগ্রহ নিষিদ্ধ হওয়া
৪. জাহেলী যুগে কুরবানীর প্রথাসহ আরও অনেক কিছুর কারণে এই মাসটি মহিমান্বিত।

যখনই রজব মাস শুরু হয়ে যেত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই দোয়াটি পড়তেন-

اللهم بارك لنا في رجب وشعبان وبلغنا رمضان

(আল মু’জামুল আওসাত খন্ড ৪ পৃষ্ঠা ১৮৯, হাদীস নম্বর ৩৯৩৯)

জাহেলী যুগে কুরবানী প্রথা

ইসলাম আবির্ভাবের পূর্বে রজব মাসে ক্বুরবানী করা হতো। যাকে জাহেলী যুগে “আতিরাহ'”বলে জানত । ইসলামের শুরু যামানাতেও এই কুরবানী প্রথা পালিত হতো। পরবর্তী সময়ে ইসলাম এটিকে সম্পূর্ণরূপে রহিত করে দেয়।
(হাসিয়াতুস্ সানুবী আলা সুনানিন্ নাসায়ী খন্ড ৭, পৃষ্ঠা ১৬৭)

যুদ্ধ বিগ্রহ নিষিদ্ধ হওয়া

বৎসরে বার মাসের চারটি মাস হলো সম্মানিত, যেগুলোতে যুদ্ধের সূচনা করার অনুমতি ছিল না । পবিত্র কুরআনেও এর বিবরণ এসেছে। এবং বলা হয়েছে এই মাস গুলোতে যদি মুশরিকরা যুদ্ধে লিপ্ত হয়, তাহলে তাদের কৃতকর্মের শাস্তি স্বরূপ তোমরাও তাদের সাথে যুদ্ধ কর। এটাই হবে তাদের কৃতকর্মের ফল। যুদ্ধের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও তারা কেন লিপ্ত হলো? অথচ তারাই বহুদিন ধরে বিশ্বাস স্থাপন করে আসছে যে, এই মাস গুলোতে যুদ্ধ হারাম!
এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা বলেন,

إِنَّ عِدَّةَ ٱلشُّهُورِ عِندَ ٱللَّهِ ٱثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِى كِتَٰبِ ٱللَّهِ يَوْمَ خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضَ مِنْهَآ أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ذَٰلِكَ ٱلدِّينُ ٱلْقَيِّمُ فَلَا تَظْلِمُوا۟ فِيهِنَّ أَنفُسَكُمْ وَقَٰتِلُوا۟ ٱلْمُشْرِكِينَ كَآفَّةً كَمَا يُقَٰتِلُونَكُمْ كَآفَّةً وَٱعْلَمُوٓا۟ أَنَّ ٱللَّهَ مَعَ ٱلْمُتَّقِينَ

অর্থঃ নিশ্চয় আল্লাহর বিধান ও গননায় মাস বারটি, আসমানসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান; সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না। আর মুশরিকদের সাথে তোমরা যুদ্ধ করো সমবেতভাবে, যেমন তারাও তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে সমবেতভাবে। আর মনে রেখো, আল্লাহ মুত্তাকীনদের সাথে রয়েছেন।(সূরা তাওবা আয়াত নং ৩৬)

মেরাজের ঘটনা

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা এ মাসের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে। এ মাসে আল্লাহ তা’আলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আসমানী সফর করান। সেখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উর্ধ্ব জাহান পরিদর্শন করেন। যাকে মেরাজ’র ঘটনা বলা হয়। স্বয়ং কুরআনে মাজীদে উক্ত সফরের বিবরণ বিদ্যমান।
আল্লাহ তা’আলা বলেন,

سُبْحَٰنَ ٱلَّذِىٓ أَسْرَىٰ بِعَبْدِهِۦ لَيْلًا مِّنَ ٱلْمَسْجِدِ ٱلْحَرَامِ إِلَى ٱلْمَسْجِدِ ٱلْأَقْصَا ٱلَّذِى بَٰرَكْنَا حَوْلَهُۥ لِنُرِيَهُۥ مِنْ ءَايَٰتِنَآ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْبَصِيرُ

অর্থঃ পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত-যার চার দিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি যাতে আমি তাঁকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দিই। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও দর্শনশীল। (সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত নং ১)